প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ নভেম্বর : জলাশয়ের মাছ খেয়ে নিচ্ছিল পাখিতে । তাই জলাশয়ে বিষ ছড়িয়ে বিভিন্ন প্রাজিতির ৬০ টির বেশি নিরীহ পাখিকে হত্যা করার অভিযোগ উঠলো দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে । মরা পাখিগুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি পানকৌরি ও বকও রয়েছে । এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের কালনার পূর্বস্থলীর একতাপল্লী এলাকায়। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নাদনঘাট থানার পুলিশ বনমালী সাঁতরা ও সনাতন ভদ্র নামে দুই ব্যক্তিকে ধরে বন দফতরের হাতে তুলে দেয়। ধৃত দু’জনের বাড়ি নদীয়া জেলায় বলে জানা গিয়েছে । বন দফতরের আধিকারিক সুকান্ত ওঝা জানিয়েছেন , ধৃতদের বিরুদ্ধে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনে ধৃতদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু হয়েছে ।পুলিশ জানিয়েছে , শুক্রবার ধৃতদের পেশ করা হবে কালনা আদালতে । ময়নাতদন্তের জন্য মৃত পাখি গুলিকে উদ্ধার করে এদিন পাঠানো হয় বর্ধমানের রমনাবাগানের বন বিভাগে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের অন্তর্গত একতাপল্লী এলাকায় রয়েছে একটি জলশয় । এলাকার বাসিন্দা গোপাল সাহা বলেন ,ধৃত দু’ জনের সঙ্গে ঘনিষ্টতা রয়েছে ওই জলাশয়ে মাছ চাষ করা মৎসজীবীদের সঙ্গে। সম্প্রতি মাছ খেতে ওই জলাশয়ে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির আনাগোনা বেড়েছিল। পাখির আনাগোনা বাড়ায় এলাকার মানুষজন বেজায় খুশিও হয়েছিলেন। কিন্তু ওই জলাশয়ে পাখির আগমন বাড়ায় খুশি হতে পারেন নি মৎসজীবীরা । পাখিতে মাছ খেয় নিচ্ছে বলে তাঁরা বেজায় ক্ষুব্ধ ছিলেন । এলাকার পক্ষী প্রেমী শিবদাস ভট্টাচার্য্য এদিন বলেন , সকাল হতেই তাঁরা দেখেন ওই জলাশয়ে অসংখ্য পাখি মরে পড়ে রয়েছে। আর তার আশেপাশে এদিন সন্দেহজনক ভাবে ঘেরা ফেরা করছিল নদীয়া নিবাসী বনমালী সাঁতরা ও সনাতন ভদ্র । স্থানীয়রা তাঁদের ধরে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন । তখনই তাঁরা স্বীকার করে ,জলাশয়ে চাষ করা মাছ পাখিতে খেয়ে নিচ্ছিল ।তাই ওইসব পাখিদের মারতেই তাঁরা ছোট মাছের মধ্যে বিষাক্ত দ্রব্য ঢুকিয়ে দিয়ে জলে ফেলে রেখে যায় । সেই মাছ খেয়েই পাখি গুলি মরা গিয়েছে বলে দু’জন স্বীকার করে । এই কথা শুনেই এলাকার মানুষজন ও পক্ষীপ্রেমীরা নাদনঘাট থানার পুলিশকে খবর দেয় ।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ওই বনমালী ও সনাতনকে ধরে থানায় তুলে নিয়ে যায়। দুপুরে ঘটনাস্থলে পৌছায় বনদফতরের আধিকারিকরা। ঘটনার তদন্তে নেমে তাঁরাও ওই দুই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।বনমালী সাঁতরা ও সনাতন ভদ্র বন আধিকারিকদের কাছেও পাখি মারার দায় স্বীকার করে নেয় । বনদফতরের নির্দেশে পুলিশ মূল অভিযুক্তদেরও খোঁজ শুরু করেছে । ধৃতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন পূর্বস্থলীর পক্ষী প্রেমীরা ।।