প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৪ নভেম্বর : পেরিয়ে গিয়েছে এক দশক। তবু চাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা ধানের টাকা আজও পরিশোধ করেনি রাইস মিল কর্তৃপক্ষ ।প্রতিবাদে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরের মাঝেরগ্রাম এলাকার একটি রাইসমিলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়ে চাষি ও ব্যবসায়ীরা। পাওনা টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত মিল চালু করতে দেওয়া হবেনা বলেও মিলের দেওয়ালে লিখে দেন পাওনাদারেরা ।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এদিন মিল চত্ত্বরে ব্যপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ।খবর পেয়ে মন্তেশ্বর থানার পুলিশ মিলে পৌছে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলে আশ্বস্ত করার পর তারা বিক্ষোভ তুলে নেয় ।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চাষি ও ব্যবসায়ীরা অভিযোগে বলেন ,তাঁদের মাঝেরগ্রাম এলাকার রাইসমিলটি প্রায় দশ-বারো বছর আগে হঠাৎ বন্ধ করেদেয় মালিক কর্তৃপক্ষ। তার কারণে মাথায় হাত পড়ে যায় এলাকার বহু চাষি ও ধান ব্যবসায়ীর।তাঁরা জানান মিল বন্ধ করার আগে মিল মালিক তাঁদের কাছ থেকে প্রচুর ধান কিনেছিলেন । সেই ধানের দাম পরিশোধ না করেই মিল কর্তৃপক্ষ মিলটি বন্ধ করেদেয় । ধান বিক্রি বাবদ একএক জনের লক্ষ লক্ষ টাকা পাওনা রয়েছে । পাওনাদাররা মিল বলেন, ‘তাঁরা মিল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন । তখন মিল মালিক তাঁদের বলে,ব্যাঙ্কের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় তাঁর মিলটি ব্যাঙ্ক অধিগ্রহন করেছে ।’ তাই যখন মিলটি নতুন করে কেনাবেচা হবে তখন পাওনাদারদের টাকার ব্যবস্থা করবেন বলে মালিক আশ্বাস দেন ।
সম্প্রতি পাওনাদাররা জানতে পারেন , মিলটি
বিক্রি হয়ে যাওয়ায় অন্য ব্যক্তি মিলটির মালিক হয়েছেন । এই কথা জানার পরেই পাওনাদারা এদিন মিলের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন । বিক্ষোভে অংশ নেওয়া চাষি সুভাষ মাঝি, নারায়ন পাল,প্রকাশ মন্ডলরা বলেন ,মিল মালিক তাঁদের সঙ্গে প্রতাড়না করেছে ।
এক দশক আগে ধান কিনে টাকা পরিশোধ না করেই মিল মালিক মিল বন্ধ করে দেয় । মিল বিক্রী হয়ে গেছে বলে জানতে পারার পর তাঁরা মিল মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । কিন্তু এখন মিল মালিক তাঁদের পাত্তা দিচ্ছে না। সেই কারণেই এদিন মিলের গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে বাধ্য হয়েছেন বলে পাওনাদাররা মন্তব্য করেন । একই সঙ্গে তাঁরা জানিয়েদেন , পুলিশ অফিসারদের আশ্বাস মেনে এদিন তাঁরা বিক্ষোভ তুলে নিয়েছেন । কিন্তু ধান বিক্রী টাকা না মিললো ফের তারা বড়সড় আন্দোলনে নামবেন ।
চাষিদের ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান কেনার কথা স্বীকার করেনিয়ে মিল মালিক অমরেশ মন্ডল বলেন ,লোনের টাকা শোধ করতে না পারায় ব্যাঙ্ক তাঁর মিলটি অধিগ্রহন করেছে । এখন যিনি মিলটি কিনেছেন তিনি তো চাষীরা ও ব্যবসায়ীরা যে টাকা পাবেন সেটা জেনেই কিনেছেন। তাহলে এরপরেও তাঁর কাছে কেন টাকার দাবি করা হচ্ছে ।’।