দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২২ ডিসেম্বর : ধান কাটার কাজ করার জন্য সকালে সাইকেলে চড়ে জমির উদ্দেশ্যে রওনা হন বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ় । জমির কাছাকাছি আসতে সড়ক পথের ধারে একটি গাছে সাইকেলটি ঠেসিয়ে রাখেন । তারপর ব্যাগে থাকা জলের বোতলটি সঙ্গে নিয়ে যেই তিনি জমির উদ্দেশ্যে পা বাড়াতে যাবেন ঠিক সেই সময় একটি বেপরোয়া গতির মারুতি ভ্যান রাস্তার ডান দিক ঘেঁষে গিয়ে তাঁকে গাছের সঙ্গে কার্যত পিষে দেয় । ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ের । সোমবার সকালে দূর্ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারে বলগোনা-গুসকরা রোডের পাশে এরুয়ার বাসস্ট্যান্ড ও মুরাতিপুরের মাঝামাঝি এলাকার একটি কালভার্টের কাছে । মৃতের নাম হাবল বাগদি । খবর পেয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে আনে পুলিশ । পরে ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় । পুলিশ জানিয়েছে, মারুতি গাড়িটিকে আটক করা হয়েছে । চালক পলাতক । তার সন্ধান চলছে ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,পেশায় খেতমজুর হাবল বাগদির বাড়ি বীরভূম জেলার ইলামবাজার থানা এলাকায় । বেশ কিছুদিন আগে স্ত্রী মারা গেছেন । তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে ।ভাতার থানার এরুয়ার গ্রামের পুরাতন পুকুর পাড় এলাকায় তাঁর শালিকা সুমিত্রা মন্ডলের শ্বশুরবাড়ি । শালিকার বাড়িতে থেকে জমি ভাগে নিয়ে চাষ করতেন হাবলবাবু । এবারেও অল্পবিস্তর জমিতে তিনি আমন ধানের চাষ করেছিলেন । এদিন সকালে একটি জমিতে ধান কাটতে গিয়ে মর্মান্তিক দূর্ঘটনায় তাঁর মৃত্যু হয় ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রফিক মল্লিক,মহাদেব মন্ডলরা বলেন, ‘আমরা জমিতে ধান কাটার কাজ সবে শুরু করেছি । দেখি হাবলদা সাইকেলটি রাস্তার পাশে ঠেসিয়ে রেখে ব্যাগে রাখা পানীয় জলের বোতল বের করছে । ঠিক সেই সময় মুরাতিপুরমুখি একটি মারুতি ভ্যান প্রবল গতিতে রাস্তার ডান দিক ঘেঁষে এসে হাবলদাকে গাছের সঙ্গে পিষে দেয় । গাড়িটির এতটাই বেগ ছিল যে সংঘর্ষের পর বাড়ির মুখ উলটো দিকে গুসকরার মুখে হয়ে যায় । আমরা সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে যাই । তার আগেই মারুতির চালক গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় ।’
খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ওই প্রৌঢ়কে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষণা করেন । পরে ইলামবাজার থেকে ভাতার থানায় আসে মৃতের পরিবার পরিজনেরা । মর্মান্তিক এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে । চালক ঘুমিয়ে পড়ার কারনেই এই দূর্ঘটনা ঘটে বলে অনুমান স্থানীয় বাসিন্দাদের ।।