এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতাড়,১০ ডিসেম্বর ঃ একটা ট্রান্সফর্মার থেকে দুই চাষির সাবমার্সিবল পাম্পে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় । কিন্তু এক চাষি বকেয়া বিদ্যুৎ বিল না মেটানোয় দপ্তর থেকে ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে । এর ফলে অপর চাষি পাম্প থেকে জল তুলতে না পারার কারনে তাঁর বীজধান জমিতেই শুকতে শুরু করেছে ।ফলে এবারে তাঁর বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি ভাতার ব্লকের বড়বেলুন গ্রামের । এই ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ভাতার ব্লকে বিজেপির ৩৪ নম্বর জেডপি মন্ডলের সভাপতি রাজকুমার হাজরার নেতৃত্বে ভাতাড় বাজারে বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখালেন বিজেপি কর্মীরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে । পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করে । শেষে ভাতাড় বিদ্যুৎ অফিসের স্টেশন ম্যানেজার বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয় ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,বড়বেলুন গ্রামের গোপিনাথ দিঘির পশ্চিম দিকে দুটি সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে । একটি জনৈক দিনেশ কোড়া নামে এক চাষির৷ অপরটি গৌতম ঘোষের । গৌতমবাবুর বাবার নামে বিদ্যুৎ সংযোগটি রয়েছে । একটি দশ কিলো ভোল্টের বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার থেকে ওই দুটি পাম্পে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় । কিন্তু নভেম্বর মাসের শেষের দিকে বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে লোকজন গিয়ে ট্রান্সফর্মারের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়ে চলে যায় বলে জানা গেছে ।
গৌতম ঘোষ জানিয়েছেন,তাঁদের দুজনেরই বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল । তার মধ্যে তাঁর বকেয়ার পরিমান ছিল ৬৩ হাজার টাকা । নভেম্বরের ১৮ তারিখে তাঁর বিল জমা করার শেষ দিন ছিল । কিন্তু অত টাকা জোগাড় করতে তাঁর একটু সময় লেগে যায় ৷ এনিয়ে তিনি এসএমকে জানিয়েও ছিলেন । শেষে চলতি মাসের ৩ তারিখ নাগাদ তিনি বকেয়া সমস্ত বিল পরিশোধ করে দেন ।
পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর আমি ৪০-৫০ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করি । অনেক আগে থেকেই তার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিলাম । আড়াই বিঘা জমিতে ধানের চারা লাগিয়েছিলাম । এদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ায় জমিতে জল দিতে পারছি না । বারবার দপ্তরে যাচ্ছি। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাচ্ছি না । এদিকে ধান গাছের চারা জমিতেই শুকিয়ে যাচ্ছে । এই অবস্থায় এবারে বোরো চাষ করতে পারবো বলে মনে হয় না ।’
জানা গেছে,গৌতমবাবু তাঁর বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে দিলেও দিনেশ বেড়া নামে ওই চাষির লক্ষাধিক টাকার বিল এখনও বকেয়া আছে । এই কারনে বিদ্যুৎ দপ্তর ওই ট্রান্সফর্মারে বিদ্যুৎ সংযোগ জুড়তে চাইছে না বলে অভিযোগ । এভাবে এক চাষির কৃতকর্মের সাজা আর এক চাষিকে দেওয়ার প্রতিবাদে সরব হয় বিজেপি । এদিন এনিয়ে ভাতার ব্লকে বিজেপির ৩৪ নম্বর মন্ডলের পক্ষ থেকে আন্দোলনে নামে বিজেপি কর্মী সমর্থকরা । তাঁরা অবিলম্বে ট্রান্সফর্মারে বিদ্যুৎ সংযোগ জোড়ার দাবিতে ভাতাড় বাজারে বিদ্যুৎ দপ্তরের অফিসের সামনে বসে তুমুল বিক্ষোভ দেখান ।
বিজেপির ভাতাড় ৩৪ নম্বর মন্ডলের সভাপতি রাজকুমার হাজরা বলেন, ‘বিদ্যুতের বিল মেটানো সত্ত্বেও এলাকার অনেক কৃষকের সাবমার্সিবল পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে । ফলে তাঁদের মধ্যে অনেকেরই এবারে বোরো চাষ অনিশ্চিত হয়েছে ।যে সমস্ত কৃষকরা বিজেপিকে সমর্থন করছেন একমাত্র তাঁদেরই এই সাজা দেওয়া হচ্ছে । এলাকার যে সমস্ত কৃষকের সাবমার্সিবলের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে সেগুলো অবিলম্বে জুড়ে না দিলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব ।’।