প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ নভেম্বর : অসমের বৃষ্টিতে জমির ধান চাষের ক্ষতি হওয়া দেখে হতাশায় কীটনাশক খেয়ে ফের আত্মঘাতী হলেন এক প্রান্তিক চাষি । মৃতের নাম লক্ষণ ঘোষ (৪৬)। তাঁর বাড়ি হুগলীর বলাগড় থানার আয়দা পাড়ায় । বুধবার ধানচাষের জমির অবস্থা দেখে বাড়িতে ফিরে রাতে লক্ষণবাবু কীটনাশক খেয়ে নেন । পরিবারের লোকজন দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে সোজা পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে চলে যান।সেখানে পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষনা করেন। বৃহস্পতিবার কালনা মহকুমা হাসপাতাল পুলিশ মর্গে মৃত ব্যক্তির দেহের ময়নাতদন্ত হয় ।
মৃতের ছেলে অলোক ঘোষ জানিয়েছেন ,তাঁর বাবা লক্ষণ ঘোষ পেশায় ছিলেন চাষি । এবছর তিনি ৭ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করে ছিলেন। চাষের জন্য তিনি ঋণও করেছিলেন ।জমিতে ভালো ধানও ফলেছিল । কিন্তূ নিম্নচাপের জেরে বিগত কয়েকদিন ধরে চলা বৃষ্টির কারণে জমির পাকা ধান গাছ নষ্ট হয়ে যায় । অলোক জানান , বুধবার বেলার জমির এমন অবস্থা দেখে তাঁর বাবা মনমরা হয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন । এরপর রাতে তিনি কীটনাশক খেয়ে নেন । বৃষ্টিতে ধান চাষের জমির ক্ষতি হওয়া দেখে হতাশায় লক্ষণ ঘোষ আত্মঘাতী হয়েছেন বলে তাঁর ছেলে অলোক ঘোষ জানিয়েছেন । একই কথা বলেছেন,মৃতের আত্মীয় সুকুমার বিশ্বাস ও উত্তম ঘোষ । পুলিশ চাষি মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।
অসমের বৃষ্টিতে জমির ধান গাছ চাষ নষ্ট হয়ে যাওয়া দেখে লক্ষণ ঘোষ শুধু আত্মঘাতী হলেন এমনটা নয় । কয়েক দিন আগে পূর্ব বর্ধমানের কালনার বড়দাড়িয়া টোন গ্রাম নিবাসী ৫২ বছর বয়সী ভাগচাষী পুষ্কর মজুদারও একই কারণে আত্মঘাতী হন । মৃতের ছেলে সোমনাথ মজুমদার দাবি করেছিলেন,তাঁর বাবা এবছর বেশ কয়েক বিঘা জমি ভাগে নিয়ে ধান চাষ করেছিলেন। কিন্তু নিম্নচাপের জেরে হওয়া অসমের বৃষ্টিতে জমিতে জল জমে যাওয়ায় ধানগাছ নষ্ট হয়ে যায় । তা দেখে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে তাঁর বাবা পুষ্কর মজুমদার কিটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হন ।এই অবস্থায় সরকার কি ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করে সেদিকেই এখন তাকিয়ে মৃত দুই চাষির পরিবার ।।