প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ নভেম্বর : পুলিশের নজর এড়াতে নিপাট একজন ভদ্র মহিলার ছদ্মবেশে ঘুরে ঘুরে করতেন গাঁজা পাচার ।কিন্তু এমন কৌশল নিয়েও বেশীদিন পুলিশের নজর এড়িয়ে থাকতে পারেন নি বধূ কল্পনা হালদার।প্রচুর পরিমান গাঁজা সঙ্গে নিয়ে পাচার করতে বেরিয়ে শনিবার বিকালে তিনি ধরা পড়ে যান পূর্ব বর্ধমানের মেমারি থানার পুলিশের হাতে ।পুলিশের দাবি, ১৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার হয়েছে ধৃত কল্পনা হালদারের সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে।সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ রবিবার ধৃত মহিলাকে পেশ করে বর্ধমান আদালতে ।পুলিশ মাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে দেখে এদিন থানা চত্ত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়ে কল্পনাদেবীর নাবালক ছেলে ।
পুলিশ জানিয়েছে ,কল্পনা হালদার স্বামী পরিত্যক্তা । তিনি তাঁর নাবালক পুত্র সন্তানকে নিয়ে থাকেন হুগলী জেলার বলাগড় থানার দাদপুরে বাপের বাড়িতে । সংসার চালানোর জন্য রোজগারের পথ খুঁজতে বেরিয়ে মহিলা গাঁজা কারবারীদের খপ্পরে পড়েন । টাকার লোভে তিনি নেমে পড়েন মেমারি সহ বিভিন্ন জায়গায় গাঁজা পৌছে দেবার কাজে । নিপাট ভদ্র মহিলার ছদ্মবেশে তিনি সেই কাজ চালাচ্ছিলেন । গোপন সূত্রে সেই খবর পৌছায় মেমারি থানার পুলিশের কাছে । শনিবার সন্ধার মুখে কল্পনা হালদার বাসে চেপে মেমারির নুদিপুরে নামতেই পুলিশ তাঁকে ধরে। কল্পনাদেবীর সঙ্গে থাকা ব্যাগে পুলিশ তল্লাশী চালাতেই উদ্ধার হয় ১৫ কেজি গাঁজা । জেরায় মহিলা গাঁজা পাচারে জড়িত থাকার কথা কবুল করার পর রাতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে। গাঁজা পাচারে ওড়িশা রাজ্যের যোগ রয়েছে বলেও পুলিশ জানতে পেরেছে ।গাঁজা পাচার চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত রয়েছে তা পুলিশ খতিয়ে দেখা শুরু করেছে ।
এদিন কল্পনা হালদার কে যখন মেমারি থানা থেকে বর্ধমান আদালতে পাঠানো হচ্ছিল সেই সময় দিদিমার সঙ্গে থানায় পৌছে যায় তাঁর নাবালক ছেলে । মাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে নিয়ে যাচ্ছে দেখে কল্পনাদেবীর নাবালক ছেলে থানা চত্ত্বরে কান্নায় ভেঙে পড়ে । ছেলেকে বুকে জড়িয়ে নিয়ে সান্তনা দেন কল্পনাদেবী । পরে কল্পনাদেবীকে গাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে পুলিশ বর্ধমান আদালতের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় । সিজেএম ধৃত মহিলার জামিন নামাঞ্জুর করে বিচারবিভাগীয় হেপাজতে পাঠিয়ে সোমবার মাদক মামলার বিচারের জন্য গঠিত বর্ধমানে বিশেষ আদালতে তাঁকে পেশের নির্দেশ দিয়েছেন ।।