শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১৪ নভেম্বর : পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের মধ্যমগ্রামের রায় পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন জগদ্ধাত্রী পূজোয় রবিবার ছিল বিজয়া দশমী । সকালে পূজো পর্ব শেষ হওয়ার পর সিঁদুর খেলায় মাতলেন মহিলারা । পরিবারের মহিলাদের পাশাপাশি গ্রামের বেশ কিছু গৃহবধূকে সিঁদুর খেলায় সামিল হতে দেখা যায় ।
মন্তেশ্বরের মধ্যমগ্রামের বনেদি পরিবারগুলির মধ্যে অন্ততম রায় পরিবার । পরিবারের মেয়ে রেখা হাজরা বলেন, ‘আমার দাদু জিতেন্দ্রনাথ রায় প্রায় ১১০ বছর আগে এই পূজোর সূচনা করেছিলেন । দীর্ঘদিন ধরে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে পূজো চালিয়ে যান । কিন্তু তাঁর ছোট ছেলে মারা যাওয়ার পর পূজো বন্ধ করে দিয়েছিলেন । ৩৬-৩৭ বছর আগে থেকে ফের পূজো শুরু করা হয়েছে ।’ তিনি জানান,তাঁর বাবারা ৩ ভাই । তাঁরা ৮ বোন । সকলের বিয়ে হয়ে গেছে । ভাই-বোনেদের মধ্যে অসম্ভব মিল । প্রতি বছর পূজোর সময় সকলে পৈতৃক বাড়িতে এসে জড়ো হয় । এক জায়গায় খাওয়া দাওয়া চলে । পূজোর প্রথমদিন অন্ন ভোগের আয়োজন করা হয় । গ্রামের লোকজনরাও প্রসাদ গ্রহন করেন বলে তিনি জানান ।
জানা গেছে,মধ্যমগ্রামের রায় পরিবারের জগদ্ধাত্রী প্রতিমা ও পূজোর রীতির মধ্যে বেশ কিছু বৈশিষ্ট রয়েছে । এক চালের দেবী মূর্তির দুই পাশে থাকেন দেবীর দুই সেবক নারদ মুনি ও বশিষ্ঠ মুনি । দেবীর সঙ্গে দেবীর দুই সেবকও পূজিত হন । পরিবারের সদস্য রাজীব রায় বলেন, ‘আমাদের জগদ্ধাত্রী পূজোয় ছাগবলি নিষিদ্ধ । দু’দিনের এই পূজোয় সপ্তমী, অষ্টমী ও নবমীর পূজো একদিনে সম্পন্ন হয় । ওইদিন কুমারী পূজো ও চণ্ডীপাঠ হয় । দশমীর দিন দেবীবরণের পর নিরঞ্জন হয় ।’ পাশাপাশি তিনি জানান,রায় পরিবারের দেবী খুব জাগ্রতা । তাই পূজোর রীতিনীতির কোনও অন্যথা হয় না । অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে রায় পরিবারের কূলদেবীর পূজো হয় ।।