এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১০ নভেম্বর : বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) মাধ্যমে রাজ্যে কত বিনিয়োগ এসেছে ? মঙ্গলবার বিকেলেই ট্যুইট করে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের কাছে এই কথা জানতে চেয়েছেন জগদীপ ধনখড় । বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যে আসা বিনিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথিও তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারকে দেখানোর জন্য বলেছেন । বছর খানেক আগেও রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের দাবি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন রাজ্যপাল । রাজ্যপাল বলেন, ‘৫ টি শিল্প সম্মেলনের মাধ্যমে রাজ্যে বিনিয়োগ সম্পর্কে যে তথ্য দেওয়া হয়েছে তার বাস্তবতা ভিন্ন । বিনিয়োগ নিয়ে যে দাবি করা হচ্ছে তা ভুল ।’
বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার ২০১৫ সাল থেকে রাজ্যে বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের (বিজিবিএস) আয়োজন করে আসছে । বিগত দু’বছর গত ধরে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে এই সম্মেলনের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি । পরবর্তী ব্যবসায়িক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজিত হতে চলেছে ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে । সোমবার বিজয়া সম্মেলনীর আসরে রাজ্যপালকে শিল্প সম্মেলন নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগী হওয়া ও বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে কথা বলার জন্য আবেদন জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
আর ঠিক তার পরের দিনেই জোড়া ট্যুইটে মুখ্যমন্ত্রীর পাঁচ বছরের শিল্প সম্মেলনের উদ্যোগকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় । তিনি বলেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের আধিকারিকদের বিজিবিএসের স্বচ্ছ তথ্য দেখানোর জন্য দিয়ে ডাকা হয়েছে । তাদের দায়িত্বের সঙ্গে এই সংক্রান্ত তথ্য দিতে হবে । বিনিয়োগের জন্য মানবাধিকার ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাও অপরিহার্য ।’ধনখড় বলেছেন, ‘যে এই বিষয়ে আরও অনেক কিছু করার আছে ।’
গত বছরের ২৫ আগস্ট মাসে লেখা একটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে রাজ্যপাল পাঁচটি বাণিজ্য সম্মেলনের তথ্য চেয়েছিলেন । তিনি চিঠিতে বলেছিলেন, ‘রাজ্যে বিনিয়োগের বিষয়ে যে চিত্র দেখানো হচ্ছে তা স্বচ্ছ নয় ।’ রাজ্যের তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র দাবি করেছিলেন, ২০১৫-২০১৯-এর মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্য ১২.৩২ লক্ষ কোটিরও বেশি প্রস্তাব পেয়েছিল । রাজ্যে ২৮ লক্ষ কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে বলেও অর্থমন্ত্রী দাবি করেন । গত বছর বিধানসভাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানিয়েছিলেন,পাঁচ শিল্প সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত বিনিয়োগের প্রস্তাবগুলির মধ্যে ৫০ শতাংশ গৃহীত হয়েছে । তার কাজও চলছে ।
কিন্তু এনিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যপাল ট্যুইটারে লেখেন, ‘ইতিপূর্বে বিজিবিএসের ৫ সম্মেলনের তথ্য চেয়েও পাওয়া যায়নি ।’পাশাপাশি তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে বিজিবিএস নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করার আহ্বান জানান । বিজিবিএস নিয়ে রাজ্যপালের জোড়া ট্যুইটের পর ফের রাজ্য সরকার-রাজ্যপালের সংঘাত শুরু হলে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল ।।