প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ নভেম্বর : বর্ধমান রাজ পরিবারের বদান্যতায় ২০৫ বছর আগে তৈরি হয়েছিল রাজ কলিজিয়েট স্কুল । দুই শতাব্দী কালের পুরানো সেই বিদ্যালয়ের গোটা ভবন জুড়ে এখন দেখা দিয়েছে জরাজীর্ণ দশা।খসে পড়ছে বিদ্যালয় ভবনের চাঙর। তার কারণে বিদ্যালয়ে এসে আতঙ্কিত থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।বিষটি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা প্রশাসনের নানা মহলে দরবার করেছিলেন। কিন্তু আজ অবধি কাজের কাজ কিছুই হয়নি ।এরই মধ্যে সরকারি নির্দেশিকা মেনে আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে ফের খুলতে চলেছে রাজ্যের স্কুল-কলেজ।কিন্তু জরজীর্ণ বিদালয় ভবনে বসে কিভাবে হবে পঠন পাঠন তা বুঝে উঠতে পারছেন না শিক্ষক শিক্ষিকারা।এমন পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় ভবন রক্ষার আর্জির বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য মঙ্গলবার পোস্টার হাতে নিয়ে মাইকে শ্লোগান তুলে পথে নামলেন শিক্ষক শিক্ষিকারা ।
বিদ্যালয় শিক্ষকদের কথায় জানা গিয়েছে,১৮১৭ সালের ৬ জানুয়ারি স্থাপিত হয়েছিল বর্ধমানের রাজ কলেজিয়েট স্কুল।জেলার অন্যতম প্রাচীন স্কুল এটি।বাঙলা নবজাগরণের সঙ্গেও জড়িয়ে রয়েছে রাজ কলিজিয়েট স্কুলের ইতিহাস। ১৯৯৬ সালে এই স্কুলের একাংশ ভেঙে যায়। তারপরও ভেঙ্গেছে হেরিটেজ বিদ্যালয়েয় অংশ। তবু কারো হেলদোল নেই। ২০০৫ সালে এই স্কুলের ছাত্র সংখা ছিল ১,৫০০ এর মত। কিন্তু দিনের পর দিন স্কুল ভবনের অবস্থা আরও বেহাল হয়ে পড়ায় বিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যাও দিনের পরদিন কমতে থাকে । বর্তমানে বিদ্যলেয়ে পড়ুয়া সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ এর মত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুব্রত মিশ্র জানান,
তাঁদের বিদ্যালয় ভবনের বয়স অনেক হয়েছে। সংস্কারের অভাবে বিদ্যালয় ভবন এখন একেবারেই জরাজীরর্ণ হয়েছে পড়েছে। মাঝেমধ্যেই স্কুল বিল্ডিংয়ের চাঙর খসে পড়ছে। তার কারণে ছাত্ররা আতঙ্কে থাকে। এইসবের জন্য এখন অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেদের রাজ কলিজিয়েট স্কুলে ভর্তি করতে দ্বিধাবোধ করেন। আবার যারা ভর্তি হয় তাদের অনেকে পরে আবার বিদ্যালয় ছেড়ে অন্য স্কুলে চলে যায়। সুব্রত মিশ্র বলেন,’ছাত্রদের বিদ্যালয় ছেড়ে চলে যাওয়াটা শিক্ষক শিক্ষিকাদের কাছে অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও কষ্টের।’
প্রধান শিক্ষক আরও জানান,১৬ নভেম্বর থেকে স্কুল খুলতে হবে। সেদিন থেকেই নবম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ক্লাস শুরু হবার কথা । কিন্তু বিদ্যালয় ভবনে চাঙর খসে পড়ছে বলে অবিভাবকরা তাঁদের বাড়ির ছেলে মেয়েদের আদৌ আর ওই দিন থেকে বিদ্যালয়ে পাঠাবেন কিনা সেটা ভেবেই তাঁরা চিন্তিত রয়েছেন । ঐতিহাসিক বিদ্যালয়ের ভবন রক্ষায় প্রশাসন এগিয়ে আসুক এই আবেদন রেখেছেন বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্ররা । এই বিষয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক শ্রীধর প্রামাণিক বলেন, ‘বিষয়টি জেলাপ্রশাসনের নজরে রয়েছে।তারাই এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন ।’।