এইদিন ওয়েবডেস্ক, হাওড়া,০৮ ডিসেম্বর ঃ পিপিই কিট তো দুরের কথা,জোটেনা পর্যাপ্ত মাস্ক বা স্যানিটাইজার । অথচ এই অবস্থার মধ্যেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল হেল্থ মিশন প্রকল্পের অধীনে কর্মরত হাওড়া জেলায় প্রায় এক হাজার জন চুক্তি ভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্মী । তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে করোনাতে আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েকজন স্বাস্থ্য কর্মীর করোনায় মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। তা সত্ত্বেও হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের । তাই কর্মক্ষেত্রে নিজেদের সুরক্ষার দাবিতে হাওড়া জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করলেন পাঁচ শতাধিক চুক্তি ভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্মী । বেশ কিছুক্ষন ধরে চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন । শেষে পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিলে বঙ্কিম সেতুর নিচে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান স্বাস্থ্য কর্মীরা।
জানা গেছে, ন্যাশান্যাল হেলথ মিশন প্রকল্পে গোটা রাজ্য জুড়ে প্রায় কুড়ি হাজারের মত স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছেন । একদম প্রথম সারিতে থেকে তাঁদের করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হচ্ছে । অথচ তাঁদের ঠিকমত পিপিই কিট, মাস্ক বা স্যানিটাইজার দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ।
দেখুন ভিডিও :
চুক্তিভিত্তিক স্বাস্থ্যকর্মীদের সংগঠনের সম্পাদক অনন্যা বেরা জানিয়েছেন, ন্যাশনাল হেলথ মিশনের আওতায় তাঁরা মেডিক্যাল অফিসার, নার্সিং স্টাফ, ফার্মাসিস্ট, ব্লক এসিস্টেন্ট ম্যানেজার, নবজাতক সহায়িকা, ডাটা এন্ট্রি অপারেটর ও ল্যাব টেকনিশিয়ানসহ একাধিক পদে দীর্ঘদিন ধরে চুক্তি ভিত্তিক চাকরি করছেন । এমনকি কোভিড অতিমারীর সময়েও তারা সমস্ত রকম স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্ত। করোনা আবহে বাড়ি বাড়ি গিয়েও তাদের কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু প্রশাসনকে বারংবার জানানো সত্ত্বেও কোনো লাভ হয়নি। তাদের চাকরির স্থায়ীকরণ করার কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তাদের অভিযোগ স্থায়ী কর্মীদের মতো সমপরিমাণ কাজ করা সত্ত্বেও তারা তাদের এক তৃতীয়াংশ বেতন পাচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। কর্ম ক্ষেত্রের এই বৈষম্য দূর করার জন্যই তারা এই আন্দোলনে নেমেছেন।
পাঁচলা ব্লকের স্বাস্থ্য কর্মী সোমা মারিকের কথায়, অনেক ব্লকে স্থায়ী কর্মী না থাকলে তাঁরাই দায়িত্ব সামলান । অথচ একজন স্থায়ী কর্মীর যা বেতন সম কাজ করেও তার থেকে অনেক কম বেতন পান তাঁরা । তাঁদের মধ্যে কেউ পান মাসিক মাত্র ১৫ হাজার টাকা,আবার কেউ কেউ ৭ হাজার টাকা করেও পান । তাই এই বৈষম্যমুলক আচরনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে এদিন তাঁরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হয়েছেন ।
এই বিষয়ে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডঃ ভবানী দাস জানিয়েছেন,চুক্তি ভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্মীদের যে দাবী তা সঙ্গত । এই বিষয়ে তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি ।।