এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেজিং,০৫ নভেম্বর : যাঁর মাধ্যমে চীনের উহানে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রথম জানতে পেরেছিল গোটা বিশ্ব, সেই সাংবাদিক জেলবন্দি ঝাং ঝানের শারিরীক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক । জেলবন্দি করার প্রতিবাদে ও মুক্তির দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে অনশন শুরু করেছেন ৩৮ বর্ষীয়া এই মহিলা সাংবাদিক । যার ফলে তাঁর শারিরীক অবস্থার এতটাই অবনতি হয়েছে যে,যেকোনও সময় তাঁর মৃত্যু হতে পারে বলে পরিবারের তরফ থেকে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত,গতবছর ফেব্রুয়ারিতে সাংবাদিক ঝাং ঝান কোভিডের কেন্দ্রস্থল উহানে গিয়েছিলেন পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে । এনিয়ে তিনি চীনা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণও করেছিলেন । পরে তিনি তাঁর প্রতিবেদনের মাধ্যমে চীনা কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ।শুধু তাইই নয়,প্রমানস্বরূপ তিনি নিজের মোবাইল ক্যামেরার মাধ্যমে উহান হাসপাতালের করিডোরে সারিবদ্ধ শয্যাশায়ী কোভিড রোগীদের ভিডিও রেকর্ড করে পরে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেন । তিনি যাতে ছবি তুলে বা ভিডিও রেকর্ড করে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে না পারেন তার জন্য চীনা পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা তাঁকে মারধরের পাশাপাশি ভয়ও দেখায় । শেষ পর্যন্ত ২০২০ সালের মে মাসে তাকে চীনা কর্তৃপক্ষ আটক করে । প্রায় ৭ মাস তাঁকে আটকে রেখে ডিসেম্বর মাসে সাংহাইয়ের একটি আদালত ঝানকে ঝগড়া ও ঝামেলা সৃষ্টির অভিযোগে এক বছরের জন্য কারাবাসের সাজা দেয় । এই সাজা সাধারনত রাজনৈতিক বন্দিদের দেওয়া হয় । কিন্তু ঝাং ঝানের মত একজন প্রাক্তন আইনজীবী তথা সাংবাদিককে এহেন সাজা দেওয়াও শি জিংপিং সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে প্রশ্ন উঠেছে ।
সম্পতি প্রকাশ্যে আসে মুক্তির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই অনশন শুরু করেছেন ঝা । যে কারনে তিনি খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছেন । ফলে অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি উঠতে শুরু করেছে । কিন্তু ঝাংকে মুক্তি দেওয়ার বিষয়ে কোনও আগ্রই দেখাচ্ছে না চীনের প্রশাসনিক আধিকারিকরা । এছাড়া ঝাংয়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য তাঁর পরিবার বিগত তিন সপ্তাহ ধরে কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছেন বলে পরিবার সুত্রে খবর । কিন্তু আধিকারিকরা এনিয়েও কোনও উচ্চবাচ্চই করছে না । এমনকি এযাবৎ ঝাংয়ের শারিরীক অবস্থা নিয়ে কোনও বুলেটিন পর্যন্ত জারি করেনি সাংহাই কারাগারের কর্মকর্তারা ।
এদিকে ঝাং ঝানের শারিরীক অবস্থা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সাংবাদিক মহল ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করেছে । অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রচারক গুয়েন লি বলেন, ‘যদি ঝাং ঝান কারাগারে মারা যাব, তবে তাঁর রক্ত চীন সরকারের হাতে লেগে থাকবে ।’।