দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৩ নভেম্বর : সন্দেহের বসে স্ত্রীকে স্বাসরোধ করে খুনের কথা কবুল করল স্বামী । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বসতপুর গ্রামের বাসিন্দা রীনা লোহারের (২৭) অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকেলে ওড়গ্রাম বাজার এলাকা থেকে বধুর স্বামী গদাই লোহারকে গ্রেফতার করে ভাতার থানার পুলিশ । প্রাথমিক জেরাতেই গদাই তার স্ত্রীকে খুনের কথা কবুল করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ । ওইদিন রাতের দিকে পুলিশ ধৃতকে গ্রামে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুননির্মান করে । বুধবার ধৃতকে বর্ধমান আদালতে পাঠানো হয় ।
বসতপুর গ্রামের দাসপাড়ায় বাপের বাড়ি মৃতা রীনা লোহারের । একই গ্রামের লোহারপাড়ার বাসিন্দা গদাই লোহারের সঙ্গে বছর তেরো আগে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । পরে উভয় পরিবারের সম্মতিতে তাঁদের বিয়ে হয় । রীনা ও গদাইয়ের এক ছেলে ও এক মেয়ে । ছেলে রাকেশ (৯) জন্ম থেকেই বোবা । মৃতার বাপের বাড়ির অভিযোগ,দীর্ঘ বেশ কয়েক বছর ধরে গদাই তার স্ত্রীর উপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে । এনিয়ে গ্রামে মিমাংসায় বসা হলেও অত্যাচার বন্ধ হয়নি । শেষে মঙ্গলবার ভোর রাতের দিকে খবর পেয়ে ওই বধুর মৃতদেহ স্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করে ভাতার থানার পুলিশ । পরে মৃতার বাবা ফেলু লোহার এনিয়ে তাঁর জামাই গদাই লোহারের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগের ভিত্তিতে ওইদিনেই গদাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে,জেরায় গদাই কবুল করেছে তার স্ত্রী প্রায়ই মোবাইল ফোনে কথা বলতো । এনিয়ে সে সন্দেহ করত স্ত্রীকে । প্রায়ই স্ত্রীর সঙ্গে সে অশান্তি করত । মদ্যপ অবস্থায় স্ত্রীকে সে মারধরও করত । তারপর সোমবার রাত্রি ১০ টা নাগাদ সে যখন বাড়ি ফেরে তখন দেখতে পায় তার স্ত্রী ঘরে শুয়ে মোবাইল ফোনে কার সঙ্গে কথা বলছে । সেই সময় সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল । ফলে স্ত্রীকে ফোনে কথা বলতে দেখে নিজের উপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেনি । শেষে দু’হাত দিয়ে তীব্র আক্রোশে সে তার স্ত্রীর গলা চেপে ধরে । কিছুক্ষনের মধ্যেই তার স্ত্রী নিস্তেজ হয়ে পড়ে ।
জানা গেছে, রীনাদেবীর ছেলে রাকেশ ও মেয়ে মনি (৬) প্রায় সময়েই মামার বাড়িতেই থাকে । ঘটনার সময় মৃতার ছেলেমেয়ে তাদের মামার বাড়িতেই ছিল । পরে অনেক রাত্রি নাগাদ গদাইয়ের কোনও এক আত্মীয় বিষয়টি বুঝতে পেরে রীনা লোহারের বাপের বাড়িতে খবর দেয় । এদিকে ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত স্বামীর বিরুদ্ধে গোটা গ্রাম জুড়ে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । গ্রামবাসীদের আক্রোশের মুখে যাতে পড়তে না হয় তাই রাতেই ঘটনার পুননির্মাণ পর্ব সেরে নেয় পুলিশ । অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিবার পরিজন ও গ্রামবাসীরা ।।