দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০২ নভেম্বর : শ্বশুরবাড়িতে অস্বাভাবিক মৃত্যু হল এক গৃহবধুর । ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার বসতপুর গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম রীনা লোহার (২৭) । মঙ্গলবার ভোর রাতে খবর পেয়ে বধুর মৃতদেহ উদ্ধার করে আনে ভাতার থানার পুলিশ । মৃতার বাবা ফেলু লোহার এনিয়ে তাঁর জামাই গদাই লোহারের বিরুদ্ধে এদিন অভিযোগ দায়ের করেন ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে মৃতার স্বামীকে আটক করেছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে,বসতপুর গ্রামের দাসপাড়ার বাসিন্দা পেশায় জনমজুর ফেলু লোহার ও অঞ্জনাদেবীর ৩ মেয়ে ও ১ ছেলের মধ্যে ছোট রীনা । অন্যদিকে একই গ্রামের লোহার পাড়ার বাসিন্দা গনেশ লোহারের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে বড় গদাই । গনেশবাবুর স্ত্রী মারা গেছেন । একমাত্র মেয়েরও বিয়ে হয়ে গেছে । একটি হোটেলে কাজ করেন গনেশবাবু । ছেলে গদাইয়ের সঙ্গে তিনি একই সংসারে থাকেন । কর্মসুত্রে অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে থাকেন গনেশবাবু ।
জানা গেছে,প্রায় ১৩ বছর আগে একই গ্রামের লোহার পাড়ার বাসিন্দা গনেশ লোহারের ছেলে গদাইয়ের সঙ্গে রীনার প্রেম বিবাহ হয় । গদাই টিউবওয়েল মিস্ত্রির অধীনে শ্রমিকের কাজের পাশাপাশি ঘরবাড়ি রঙের কাজও করেন । গদাই ও রীনার ৯ বছরের এক ছেলে ও ৬ বছরের এক মেয়ে রয়েছে । ছেলে রাকেশ জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না বলে জানা গেছে ।
ফেলু লোহারের অভিযোগ,’আমার জামাই মদের নেশায় আসক্ত । প্রায় দিনই সে মদ পান করে । আমার মেয়ে প্রতিবাদ করলে তাকে ব্যাপক মারধর করত । এই কারনে বছর তিনেক আগে পুলিশের দ্বারস্থ হতে হয়েছিল । পরে গ্রামে পঞ্চভদ্রের উপস্থিতিতে মিমাংসা হয় । তারপর থেকে কিছুদিন ঠিকঠাকই চলছিল । কিন্তু সম্প্রতি মেয়ের উপর ফের অত্যাচার শুরু করেছিল গদাই । কিন্তু ও যে আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে স্বপ্নেও কল্পনা করিনি ।’
মৃতার সম্পর্কীয় দাদা উত্তম লোহার বলেন, ‘রাত্রি প্রায় বারোটা নাগাদ সরস্বতী লোহার নামে গদাইয়ের এক পিসিমা আমাদের এসে বলে রীনা নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে । কোনও কথা বলছে না । তারপর আমরা সেখানে ছুটে যাই । রীনাকে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে তার ছেলে রাকেশকে এনিয়ে জিজ্ঞাসা করি । তখন রাকেশ ইশারায় জানায় তার মাকে গলা টিপে ধরে মেরে ফেলেছে তার বাবা । এরপর আমরা ভাতার থানায় খবর দিই ।’
জানা গেছে,খবর পেয়ে পুলিশ বসতপুর থেকে বধুকে উদ্ধার করে ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন । এদিন মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয় । অভিযুক্ত স্বামীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিবারের লোকজন ।।