এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২১ অক্টোবর : কন্যাসন্তান হয়ে জন্মানোর অপরাধে সদ্যজাতকে মেরে ধানজমিতে পুঁতে দিল বাবা । শেষ পর্যন্ত শিশুর মৃতদেহই ধরিয়ে দিল ‘খুনি বাবা’কে । চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের জিড়রা গ্রাম পঞ্চায়েতের তুলশা গ্রামে । বুধবার লক্ষ্মীপূজোর দিন গ্রামের একটি ধান ক্ষেত থেকে ১৬ দিনের শিশুকন্যার মাটি চাপা পচাগলা দেহ উদ্ধার করল পুলিশ । নিজের মেয়েকে খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত আসিনাথ সরেনকে গ্রেফতার করেছে ছাতনা থানার পুলিশ । ধৃত ব্যক্তি পুলিশের জেরায় খুনের কথা কবুল করেছে বলে জানা গেছে । বৃহস্পতিবার ধৃতকে আদালতে পাঠানো হয় ।
জানা গেছে,আসিনাথ সরেনের দুই মেয়ে । ১৬ দিন আগে তাঁর ছোট মেয়ের জন্ম হয় । মৃত শিশুর মা সোহাগি সোরেন জানান,দিন তিনেক আগে তাঁর ছোট মেয়ে শ্বশুরবাড়ি থেকে আচমকা উধাও হয়ে যায় । তখন তিনি থানায় নিখোঁজ ডাইরি করার কথা বললে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন রাজি হয়নি । কিন্তু তিনি এনিয়ে জোর করলে তাঁকে চুপ করিয়ে দেওয়া হয় ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,সোহাগি সোরেনের শ্বশুরবাড়ি থেকে ২-৩ কিমি দুরে ধান জমি থেকে কয়েক দিন ধরেই তীব্র পচা দূর্গন্ধ আসছিল । কিন্তু কিছুতেই দূর্গন্ধের উৎসস্থলের সন্ধান পাচ্ছিলেন না গ্রামবাসীরা । শেষে খবর পেয়ে ছাতনা থানার পুলিশ গিয়ে সন্ধান চালাতে শুরু করলে একটা ধানজমির মধ্যে মাটিচাপা অবস্থায় এক সদ্যজাত শিশুকন্যার পচাগলা দেহ উদ্ধার হয় । মৃতদেহটি নিজের ছোট মেয়ে বলে সনাক্ত করে সোহাগি সোরেন । মৃত শিশুর মা কাছে ঘটনার কথা শোনার পর পুলিশ তাঁর স্বামী আসিনাথ সরেনকে আটক করে জেরা করতেই কবুল করে পরপর দুই মেয়ে হওয়ার কারনেই সে তার ছোটো মেয়েকে পরিকল্পনা করে খুন করেছে ।
পুলিশ সুত্রে খবর,পুলিশি জেরায় আসিনাথ জানায়,দিন তিনেক আগে তার স্ত্রীর নজর এড়িয়ে সদ্যজাত সন্তানকে বাড়ি থেকে প্রথমে তুলে নিয়ে গিয়েছিল । তারপ প্রথমে সে তার মেয়েকে একটা কুয়োতে ফেলে দেয় । কিছুক্ষণ পর মেয়ের মৃতদেহ কুয়োর জলে ভেসে উঠলে মৃতদেহটি প্লাস্টিকে মুড়ে গ্রাম থেকে দু’তিন কিলোমিটার দূরে নিয়ে গিয়ে একটা ধান জমিতে পুঁতে ফেলে ।
কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । মেয়ের মৃতদেহের পচা দূর্গন্ধই শেষ পর্যন্ত ধরিয়ে দিল ‘খুনি বাবা’কে । পুলিশ জানিয়েছে,সদ্যজাতকে খুনের ঘটনায় পরিবারের আর কোনও যোগসুত্র আছে কিনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে ।।