প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৫ অক্টোবর : প্রেমিকের প্রতিশোধের আগুনে কখনও মুখ পুড়েছে প্রেমিকার। আবার কখনও বর্থ্য প্রেমিকের হাতে খুন হতে হয়েছে প্রেমিকাকে । কিন্তু পূর্ব বর্ধমানের মন্তেশ্বরে আদিবাসী মহিলার উপর হওয়া নৃশংস অত্যাচারের কাহিনী এইসব কিছুকেই হার মানিয়ে দিয়েছে ।বছর ৩৫ বয়সী আদিবাসী মহিলার সঙ্গে বিরোধ তৈরি হওয়ায় তাঁর উপর হাড়হিম করা নির্যাচন চালয় প্রেমিক সুনীল টুডু । নির্যাতন চালিয়ে প্রেমিকার গোটা শরীর ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েই খান্ত হয়নি প্রেমিক সুনীল ।
মুগুর জাতীয় কিছু দিয়ে যৌনাঙ্গে আঘাত করেও প্রেমিকাকে চুড়ান্ত ভাবে তিনি ঘায়েল করে দিয়েছে । এমনকি জলে মুখ ডুবিয়ে তিনি তাঁর প্রেমিকাকে প্রাণে মেরে দেওয়ারও চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ।বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নির্যাতিতা আদিবাসী মহিলার মুখ থেকে এমন অত্যাচারের কাহিনী শোনার পর মঙ্গলবার পুলিশ সুনীল টুডুকে গ্রেপ্তার করে ।এই ঘটনা জানার পর শিউরে উঠেছেন মন্তেশ্বরের বাসিন্দারা । তারা সুনীল টুডুর কঠোরতম শাস্তির শাস্তির দাবি করেছেন ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে ,সুনীল টুডুর বাড়ি মন্তেশ্বরের মামুদপুর ১ পঞ্চায়েতের পুরুনিয়া গ্রামে । তাঁর প্রেমিকার বাড়ি জেলার নাদনঘাট থানা এলাকায় । তাঁর সন্তান রয়েছে । বছর দেড়েক আগে মারা গিয়েছেন তাঁর স্বামী ।
মহিলা খেত মজুরির কাজ করেন । মাস ছয় আগে মহিলার সঙ্গে সুনীলের প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। তার পর থেকে আদিবাসী ওই মহিলা সুনীলের সঙ্গেই থাকা শুরু করেন। কিন্তু সম্পর্কে চিড় ধরায় দু’ জনের মধ্যে অশান্তি শুরু হয় । মহিলা রাগারাগি করে নাদনঘাট চলে যান। সুনীল রবিবার তাঁর প্রেমিকাকে নিজের কাছে ফিরিয়ে আনতে নাদনঘাটে যান । মহিলা সুনীলের সঙ্গে আসতে প্রথমে রাজি হয় নি ।পরে নানারকম ভুজুং ভাজুং দিয়ে রবিবার সুনীল তাঁর প্রেমিকাকে নাদনঘাট থেকে মন্তেশ্বরে নিয়ে আসেন।ওইদিন সন্ধ্যায়
পুরুনিয়া গ্রামে ঢোকার মুখে দু’জনের মধ্যে ফের ঝামেলা বাঁধে । তখনই সুনীল তাঁর প্রেমিকার উপর চড়াও হয়ে হাড়হিম করা নির্যাতন চালায় । নিজের এই কুকীর্তি আড়াল করতে পরদিন সকালে সুনীল স্থানীয়দের কাছে দুস্কৃতি হামলার গল্প বলে পার পাবার চেষ্টা করে । কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি ।
জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ধ্রুব দাস জানিয়েছেন,“ মঙ্গলবার ওই মহিলার সঙ্গে পুলিশ কথা বলে ।জিজ্ঞাসাবাদে মহিলা পুলিশকে জানায় তাঁর ওপর এমন অমানুষিক নির্যাতন চালিয়েছে সুনীল টুডু । এরপরেই পুলিশ সুনীল টুডুকে গ্রেপ্তার করে । কেন সুনীল মহিলার উপর এমন নৃশংস নির্যাতন চালালো তা জানতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে ।’।