এইদিন ওয়েবডেস্ক,চাঁচল(মালদা),০২ অক্টোবর : বাপের বাড়ি থেকে দাবিমত অতিরিক্ত পনের টাকা আনতে না পারায় এক গৃহবধুকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার চাঁচল ব্লকের ধানগাড়া অঞ্চলের বালুয়াঘাট গ্রামে । শনিবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিক্যালে কলেজ ও হাসপাতালে পাঠানো হয় । পুলিশ জানিয়েছে,মৃত বধূর নাম মতাম্মারা খাতুন (২৬) । পরিবারের পক্ষ থেকে এনিয়ে মৃতার স্বামী আকবর আলী ওরফে রাজীব,শ্বশুর,শাশুড়ি,ননদসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । অভিযুক্তদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ ।
স্থানীয় ও পরিবার সুত্রে জানা গেছে, বালুয়াঘাট গ্রামে বাপের বাড়ি মতাম্মারা খাতুনের । বছর সাতেক আগে ধানগাড়া গ্রামের বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর আকবর আলীর সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । তাঁদের ৫ বছর ও ১ বছরের দুই পুত্রসন্তান রয়েছে ।
মৃতার বাবা শেখ রাজ্জাকের অভিযোগ,’জামাই মদের নেশায় আসক্ত । কখনও সে কাজে যায় আবার কখনও মদ পান করে নেশায় চুর হয়ে পড়ে থাকে । এদিকে বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত পণের দাবিতে আমার মেয়ের উপর চাপ দিন জামাই । কিন্তু আমার অত আর্থিক সামর্থ্য নেই । তাই দাবি পূরণ করতে পারিনি । তার জন্য আমার মেয়ের উপর জামাই,জামাইয়ের মা ও বোনেরা শারিরীক ও মানসিক নির্যাতন চালাত । কিন্তু ওরা যে আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে কল্পনাও করিনি ।’
মৃতার কাকা মহম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ আমার ভাইঝির বড় ছেলে ফোন করে বলে তার মাকে নাকি বাবা-ঠাকুমারা মেরে ফেলেছে । প্রথমে মনে করেছিলাম বাচ্ছাটা মজা করছে । পরে পাড়ার লোকজনদের ফোন করে খবর নিতে বলি । কিছুক্ষণ পরে তাঁরা জানান আমার ভাইঝিকে একটা ঘরের মধ্যে ঢুকিয়ে রেখেছে জামাইসহ শ্বশ্বরবাড়ির লোকজন । কেউ কিছু জানাতে চাইছে না । তারপর আমরা ধানগাড়া গ্রামে ছুটে যাই । গিয়ে ভাইঝিকে ঘরের মধ্যে মৃত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি । ভাইঝির নিম্নাঙ্গ নিয়ে ব্যাপক রক্তপাত হচ্ছিল । ভাইঝির বড় ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলে বলে তার বাবা,দাদু,ঠাকুমা,পিসি ও আরও কয়েকজন মিলে তার মায়ের পেটে লাথি, কিল, চড়, ঘুঁসি মারার পর গলা টিপে ধরেছিল । তারপরেই তার মা মারা যায় ।’
জানা গেছে, মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন আসার আগেই আকবর আলী ও তাঁর পরিবারের লোকজন পালিয়ে যায় । খবর পেয়ে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে বধুর দেহটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় । পরে এনিয়ে মৃতার স্বামী,শ্বশুর,শাশুড়িসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর দায়ের করা হয় । দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন মৃতার পরিবার পরিজনেরা ।।