এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২৯ সেপ্টেম্বর : বিষ্ণুপুর টেন্ডার দুর্নীতি কান্ডে এবার গ্রেফতার হলেন উজ্জল নন্দী নামে এক তৃণমূল নেতা । বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি উজ্জল নন্দী এক সময়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী হিসাবে পরিচিত ছিলেন । বিষ্ণুপুর টেন্ডার দুর্নীতি মামলায় মঙ্গলবার দিনভর তাঁকে ম্যারাথন জেরা চালায় পুলিশ । কথায় অসঙ্গতি থাকায় তদন্তকারী আধিকারিকরা শেষ পর্যন্ত তাঁকে গ্রেফতার করে । শ্যামাপ্রসাদের বেআইনি আর্থিক লেনদেন উজ্জ্বল নন্দীর হাত ধরেই হয়েছিল বলে পুলিশ তদন্তে জানতে পেরেছে বলে জানা গেছে ।
বিষ্ণুপুর পৌরসভার ১০ কোটি টাকার টেন্ডার দুর্নীতি কাণ্ডে গত ২২ অগস্ট গ্রেফতার গ্রেফতার হয় রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে । পাশাপাশি গ্রেফতার করা হয়েছে শ্যাম ঘনিষ্ঠ দুই নেতা দিলীপ গড়াই ও রামশঙ্কর মোহান্তি ওরফে খোকনকে । খোকন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের ব্যক্তিগত হিসাবরক্ষক ছিলেন বলে জানা গেছে । দিলীপ গড়াই বিষ্ণুপুর পৌরসভার তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব সামলাতেন । এবার গ্রেফতার করা হল শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের আরও এক সহযোগী বিষ্ণুপুর পুরসভার প্রাক্তন ওভারশিয়ার উজ্জল নন্দীকে ।
২০২১ বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত বাঁকুড়া জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সহ-সভাপতি ছিলেন উজ্জল নন্দী ।
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বাঁকুড়া জেলার তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি থাকাকালীন উজ্জ্বল নন্দীকে বিষ্ণুপুর টাউন সভাপতি করা হয়েছিল । তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ওই পদে বহাল ছিলেন । তার আগে বেশ কয়েক বছর জাতীয় কংগ্রেসের বিষ্ণুপুর টাউন সভাপতির দায়িত্ব সামলেছিলেন উজ্জলবাবু । শেষ পর্যন্ত টেন্ডার দুর্নীতিকাণ্ডে তাঁকে গ্রেফতার করল পুলিশ । বুধবার ধৃতকে বিষ্ণুপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
এদিকে স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন ধৃত উজ্জ্বল নন্দীর স্ত্রী শুভ্রা নন্দী। তিনি বলেন, ‘উজ্জ্বল নন্দী ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন । কিন্তু দলে থেকেও কিভাবে এই পরিস্থিতি হলো বুঝতে পারছি না। আমার স্বামী প্রতিবাদী ছিলেন। অন্যায়কে প্রশ্রয় দিতেন না বলেই কি এই পরিস্থিতি ?
পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘উনি বরাবর বিষ্ণুপুর ও দলের উন্নতি চেয়ে এসেছেন । এই অবস্থায় যাদের অসুবিধা হচ্ছে তাঁরাই আমার স্বামীকে বসিয়ে দিতে চাইছে । আমাদের ভাঙ্গা বাড়ি । রঙ করার ক্ষমতা নেই । বাবার দেওয়া এই বাড়ি না থাকলে আমাদের গাছ তলায় থাকতে হত । ব্যাঙ্কে মাত্র দেড় হাজার টাকা । পুলিশি তদন্তে সহায়তা করার পরেও আমার স্বামীকে ফাঁসানো হচ্ছে ।’।