এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৩ সেপ্টেম্বর : মাঠে যাতায়তের রাস্তার পাশে জমিতে ছিঁড়ে পড়েছিল হাইটেনশন বিদ্যুৎ লাইনের একটি তার । বৃহস্পতিবার সকালে ওই জমিতে কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে এক বৃদ্ধের মৃত্যু হল । ঘটনাটি ঘটেছে মালদা জেলার মোথাবাড়ি থানার সারাফতটোলা গ্রামে । পুলিশ জানিয়েছে,মৃতের নাম সিদ্দিকী সেখ(৬০) । ঘটনার পর গ্রামের রাস্তায় দেহ ফেলে রেখে বিক্ষোভ দেখায় ক্ষিপ্ত মানুষ । গ্রামবাসীদের দাবি,বিদ্যুৎ দপ্তরের লোকেদের গাফেলতির কারনেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে । তাই দপ্তর থেকে মৃতের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি বিদ্যুতের ওই লাইনটি সরানোর দাবি তোলেন গ্রামবাসীরা । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মোথাবাড়ি থানার পুলিশ । শেষে পুলিশ গ্রামবাসীদের বুঝিয়ে সুঝিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায় ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,সারাফতটোলা গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকী সেখের অল্পসল্প জমিজমা রয়েছে । তাঁর দুই ছেলে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন । বর্তমানে তাঁরা কর্মসুত্রে ভিন রাজ্যে রয়েছেন । বাড়িতে রয়েছেন সিদ্দিকী সেখের স্ত্রী ও দুই ছেলের পরিবার । চাষবাস থেকে উপার্জন ও ছেলের পাঠানো টাকা থেকেই কোনও রকমে সংসার চালাতেন ওই বৃদ্ধ ।
জানা গেছে,এদিন সকালে চাষের কাজে মাঠে যাচ্ছিলেন সিদ্দিকী সেখ । কিন্তু রাস্তার পাশে তাঁর জমিতেই যে হাইটেনশন বিদ্যুৎ লাইনের একটি তার পড়ে রয়েছে সেটি তাঁর নজরে পড়েনি । তিনি জমির জলে পা রাখতেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে লুটিয়ে পড়েন । ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয় । এরপর বিদ্যুৎ দপ্তরে ফোন করে ঘটনার কথা জানিয়ে সাময়িকভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার জন্য আবেদন জানান গ্রামবাসীরা । শেষে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হলে বৃদ্ধের মৃতদেহটি উদ্ধার করে গ্রামে আনা হয় । শুরু হয় বিক্ষোভ ।
গ্রামবাসী ওয়াসিম আক্রাম বলেন, ‘গ্রামের গায়ে বাঁশ বাগানের উপর দিয়ে গেছে ১১ হাজার ভোল্টের ওই বিদ্যুৎ লাইনটি । বুধবার ওই বিদ্যুৎ লাইনে মেরামতির কাজ করছিলেন বিদ্যুৎ কর্মীরা । ওই লাইনের একটা তার ছিঁড়ে জমিতে পড়েছিল । ওই অবস্থাতেই সেটিকে রেখে দিয়ে বিদ্যুৎকর্মীরা চলে যান । পরে বিদ্যুৎ সরবরাহও করা হয় । রাত্রি প্রায় সাড়ে ৮ টা নাগাদ আমরা লক্ষ্য করি জমির জল টগবগ করে ফুটছে । বিষয়টি আমরা ফোন করে বিদ্যুৎ দপ্তরে জানাই । খবর পেয়ে দপ্তরের কর্মীরা আসেন ।’
তাঁর অভিযোগ, ‘সব কিছু দেখে যাওয়ার পরেও ফের ওই লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় । অথচ দপ্তর থেকে আমাদের কোনও সতর্ক করা হয়নি । যদি আগাম সতর্ক করা হত তাহলে ওই বৃদ্ধকে এভাবে প্রাণ হারাতে হত না । তাই আমাদের দাবি দপ্তর থেকে বৃদ্ধের অসহায় পরিবারের হাতে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া হোক । সেই সঙ্গে বাঁশ বাগানের উপর থেকে বিদ্যুৎ লাইনটি সরানোর ব্যাবস্থা করুক বিদ্যুৎ দপ্তর । তা না হলে ফের কোনও গ্রামবাসীর বেঘোরে প্রাণ যাবে ।’ যদিও এই প্রসঙ্গে দপ্তর থেকে কোনও মতামত জানতে পারা যায়নি ।।