এইদিন ওয়েবডেস্ক,সুরাট,২০সেপ্টেম্বর : কৈশোর অবস্থা থেকেই প্রতিবেশী যুবকের সাথে প্রেম । কিন্তু এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি কিশোরীর বাবা । তাই ১৮ বছর উত্তীর্ণ হওয়ার দু’দিনের মাথায় সে তার বাবা-মা ও ভাইকে খাওয়ারের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে । যদিও বিষের মাত্রা কম থাকায় সৌভাগ্যক্রমে তাঁরা সকলেই প্রাণে বেঁচে যান । শেষে মেয়েটির বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে প্রেমিক ও প্রেমিকের বাবাসহ তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ । ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের সুরাটের দিনদৌলি থানা এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম খুশবু বাঞ্জারা(১৮), শচীন মোরে (২২) ও অশোক মোর (৪৯)। ধৃতদের মধ্যে মেয়েটির প্রেমিক হল শচীন । আর অশোক মোরে শচীনের বাবা ।
সর্বভারতীয় এক সংবাদ মাধ্যম সুত্রে জানা গেছে, দিনদৌলি এলাকার একটি আবাসনে পাশাপাশি বসবাস খুশবু বাঞ্জারা ও শচীন মোরের পরিবারের । খুশবুরা এক ভাই ও এক বোন । খুশবু দশম শ্রেনী উত্তীর্ণ হওয়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দেয় । তাদের বাবা দীপক বাঞ্জারা একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতেন । কিন্তু প্রথম লকডাউনের সময় তাঁর চাকরি চলে যায় । অন্যদিকে শচীন মোরে বেকার । তাঁর বাবা অশোক মোরে জমি জায়গার প্রমোটারির ব্যাবসা করেন ।
পাশাপাশি বসবাসের সুবাদে খুশবু-শচীনের মধ্যে পরিচয় থেকে প্রেম । চলতি মাসের ১২ তারিখে তারা একবার পালিয়েও গিয়েছিল । শচীনের এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয় দু’জনে । যদিও তখন খুশবুকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে আনে তার বাবা দীপকবাবু । তবে তিনি শচীনের সঙ্গে মেয়ের সম্পর্ক মেনে নিতে পারেননি । তারপর থেকেই খুশবুর উপর কড়া নজরদারি শুরু করে তার পরিবারের লোকজন । আর তখন থেকেই নতুন পরিকল্পনা করতে শুরু করে খুশবু ।
পুলিশ সুত্রে খবর, দিন দুয়েক আগে ১৮ বছর পূর্ণ হয় খুশবুর । তার আগে প্রেমিককে নিয়ে সে প্লান ছকে নেয় । গত শুক্রবার সে নিজের হাতে মা, বাবা এবং ভাইয়ের জন্য আলুর পরোটা রান্না করে । তার আগে প্রেমিককে দিয়ে ওষুধের দোকান থেকে কিছু ট্যাবলেট আনিয়ে নেয় । সেগুলো গুঁড়ো করে খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে দিয়ে পরিবারের সদস্যদের পরিবেশন করে । তবে খুশবুকে খাওয়ার জন্য তার বাবা-মা জোরাজুরি করলে সে খিদে নেই বলে এড়িয়ে যায় । এদিকে খাওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেও অচৈতন্য হয়ে যায় খুশবুর বাড়ির লোকজন । তার কিছু আগেই বাড়ির নিজে বাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিল শচীনের বাবা । বাড়ির লোকজন ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়লে প্রেমিকের বাবার বাইকে চেপে পালিয়ে যায় খুশবু । তারপর শচীন ও খুশবু রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করে সোজা দিনদৌলি থানায় গিয়ে উপস্থিত হয় । পুলিশের কাছে খুশবু দাবি জানায় তাকে স্বামীর সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয় । এদিকে পরের দিন সকালে ঘুম ভাঙলে দীপক বাঞ্জারা দেখেন তাঁর স্ত্রী ও ছেলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন । মেয়ে বাড়িতে নেই । ইতিমধ্যে থানা থেকে দীপকবাবুর মোবাইলে ফোন করে জানানো হয় তাঁর মেয়ে বিয়ে করে স্বামীকে নিয়ে থানায় হাজির হয়েছে ।
জানা গেছে,এদিকে দীপকবাবুর স্ত্রী ও ছেলের ঘুম ভেঙে যায় । তাঁরা সকলেই অসুস্থ বোধ করেন । বিষয়টি তাঁরা পুলিশকে জানান । তারপর দিনদৌলি থানার পুলিশ গিয়ে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করে । কিছুটা সুস্থ হওয়ার পর এনিয়ে শনিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করেন দীপকবাবু । অভিযোগের ভিত্তিতে ওই খুশবু,তাঁর স্বামী ও শ্বশুরকে গ্রেফতার করে পুলিশ ।।