এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,৩১ ডিসেম্বর : আজ বুধবার ঢাকায় বাংলাদেশের প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপি নেতা তারেক রহমানের হাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্যক্তিগত শোকবার্তা সম্বলিত চিঠি তুলে দিয়ে এসেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ৷ কিন্তু শেখ হাসিনার পতনের পর গজিয়ে ওঠা ভারত বিদ্বেষী বাংলাদেশি জিহাদি গোষ্ঠী “মঞ্চ ২৪” মনে করছে যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পাঠানো এই শোকবার্তা প্রত্যাখ্যান করা উচিত । তাদের কথায় “জয়শঙ্করের কাছ থেকে শোকবার্তা গ্রহণ খালেদা জিয়ার আদর্শ ও সম্মানের প্রতি আঘাত” ।
আজ ওই জিহাদি গোষ্ঠীর ফেসবুক পেজে তাদের আহ্বায়ক ফাহিম ফারুকী একটি “সংবাদ বিজ্ঞপ্তি” পোস্ট করেছে । যার বিষয়বস্তু হল : “ভারতের শোকবার্তা প্রত্যাখ্যানের দাবি এবং জয়শঙ্করের কাছ থেকে শোকবার্তা গ্রহণ খালেদা জিয়ার আদর্শ ও সম্মানের প্রতি আঘাত” । পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী লড়াই করা গণতন্ত্রের প্রতীক, বিএনপির সাবেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণীর মৃত্যুর পর বিভিন্ন দেশ থেকে শোক বার্তা পাঠানো হয়। একই সঙ্গে তার জনাজায় উপস্থিত হয়ে শোক জানায় অনেক দেশের প্রতিনিধি। যা খালেদা জিয়ার জন্য অত্যন্ত সম্মান এবং গৌরবের। যেখানে দেখা যায়, আপসহীন নেত্রী খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া, খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর শোকবার্তা হস্তান্তর করেছেন তারেক রহমানের হাতে। মঞ্চ২৪ মনে করে, ভারতের এই কথিত শোকবার্তা ভারতীয় আধিপত্যবাদ বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি চরমভাবে অসম্মান প্রদর্শন। একই সঙ্গে তাদের শোক বার্তা গ্রহণ খালেদা জিয়ার আদর্শ ও সম্মানের প্রতি আঘাত।’
লেখা হয়েছে,’খালেদা জিয়া তার জীবদ্দশায় গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে কারও সঙ্গে আপোষ করেননি। বাংলাদেশের মুক্তিকামী জনতা দেখেছে, ২০১৫ সালে আরাফাত রহমান কোকো যখন ইন্তেকাল করেন সেদিন সন্ধ্যায় হাসিনা গুলশানের কার্যালয়ে কার্যত বন্দি খালেদা জিয়াকে দেখতে যাওয়ার নাটক করে। সেদিন হাসিনার জন্য দরজাও খুলেনি বেগম জিয়া। নিজের সন্তানের খুনিকে তিনি শোক জানাতে দেননি। বিএনপির উচিত ছিল খালেদা জিয়ার সেই আপসহীন নীতিকে অনুসরণ করা। মাথা উঁচু করে ভারতের কথিত নাটকীয় শোকবার্তা প্রত্যাখান করা।’
শেখ হাসিনাকে সমর্থন করায় ওই জিহাদি গোষ্ঠী বিষোদগার করে লিখেছে,’চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানের স্পিরিটকে ধারণ করা মঞ্চ২৪ মনে করে, স্বৈরাচার হাসিনা ভারতের নির্দেশনা ছড়া কোনো কাজ করেনি। খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দি এবং মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছিল খুনি হাসিনা। হাসিনার দুঃশাসনের এই দীর্ঘ সময়ে বাংলাদেশে মানুষের উপর একের পর এক গণহত্যা চালায় আওয়ামী লীগ সরকার। যার পেছনে মদদ দিয়েছিল ভারত। তাদের আধিপত্যবাদে বিরুদ্ধে জীবদ্দশায় মাথা উঁচু করে লড়াই করে গিয়েছিলেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।’
এরপর লেখা হয়েছে,’মঞ্চ২৪ মনে করে- আজ পুরো বিশ্ব যখন শোকাহত, তখন বেগম জিয়াকে হত্যা কারি হাসিনার শোকবার্তা এবং ভারতের শোকবার্তার মধ্যে কোনো পার্থক্য করার সুযোগ নেই। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির নিকট মঞ্চ২৪-এর আহ্বান- বেগম জিয়াকে কারাগারে হত্যার পরিকল্পনাকারী, বাংলাদেশে একের পর এক গণহত্যা চালানো, ভারতীয় প্রক্সি খুনি হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়া ভারতের শোকবার্তা প্রত্যাখান করুন। খুনিদের আমরা শোক প্রকাশ করতে দেখতে চাই না। খুন করা এবং খুনিদের আশ্রয় দেওয়া সমনভাবে অপরাধী।’
সবশেষে ওই উগ্র ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠীটি লিখেছে,’মঞ্চ২৪ মনে করে- চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থানে গণহত্যা, শাপলা গণহত্যা, খালেদা জিয়াকে কারাগারে হত্যার পরিকল্পনা, শহিদ ওসমান বিন হাদিকে হত্যাসহ সব গুম খুনের মাস্টার মাইন্ড ভারত। এর সঙ্গে সরাসরি জয়শঙ্করের যোগসূত্র রয়েছে। একজন গণহত্যাকারী, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত, ফাঁসির আসামির সহযোগীদের হাত থেকে খালেদা জিয়ার জন্য শোকবার্তা গ্রহণ করা তার সম্মানের প্রতি আঘাত।’।

