এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২৯ ডিসেম্বর : একদিকে যখন বিধানসভার ভোটের আগে প্রতিটি ব্লকে “পথশ্রী প্রকল্প” নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস,পাশাপাশি অন্যদিকে রাস্তা নির্মানের আগে আগাম বোর্ড টাঙিয়েও রাস্তা না করে বোর্ড খুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল । এমনই অভিযোগ ঘিরে আজ সোমবার কার্যত উত্তাল হয়ে উঠল মালদা জেলার গাজোল বিডিও অফিস চত্বর । বেশ কয়েকটি গ্রামের শতাধিক বাসিন্দা মিছিল করে বিডিও অফিস ঘেরাও করে তুমুল বিক্ষোভ শুরু করেন । শেষ পর্যন্ত গাজোলের বিডিও বিপ্লব কুমার বিশ্বাসের আশ্বাসে বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন ।
জানা গেছে,গাজোল ব্লকের বৈরগাছি-১ নম্বর অঞ্চলের আলিনগর হাইস্কুল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা দীর্ঘ দিন বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে । ফলে আলিনগর, কয়লাবাদ, রাইখাদিঘি সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হচ্ছে । গ্রামবাসীরা জানান,বৃষ্টি হলে এক হাঁটু কাদা হয়ে যায় । স্কুল পড়ুয়ারা চলাচল করতে গিয়ে বিপাকে পড়ে । গ্রামে অ্যাম্বুলেন্স ঢোকেনা । রোগীকে খাটিয়ায় করে প্রায় ২ কিমি পথ নিয়ে গিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় । পঞ্চায়েত, বিডিও,পঞ্চায়েত সমিতি,জেলা পরিষদের কাছে তদ্বির করেও কোনো সুরাহা হয়নি বলে তাদের অভিযোগ ।
আজ বিক্ষোভে যোগ দেওয়া আলিনগরের বাসিন্দা মহম্মদ আলফাজ আলি বলেন,’আলিনগর হাইস্কুল থেকে জনৈক মকবুল হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার ঢালাই রাস্তার জন্য ২.৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল । বোর্ডও টাঙানো হয়েছিল । ভেবেছিলাম হয়তো এবার দুঃখের অবসান হবে। কিন্তু কিছুদিন পরেই দেখি বোর্ড খুলে নেওয়া হয়েছে । খবর নিয়ে জানতে পারি যে বরাদ্দকৃত টাকাও ফেরত চলে গেছে । তাই কার গাফিলতিতে টাকা ঘুরে গেল? কেন দীর্ঘদিন পরেও রাস্তার কাজ হলোনা এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর জানতে আজ আমরা বিডিও-এর কাছে এসেছিন ।’ আর এক আন্দোলনকারী মহম্মদ আজমল আলির অভিযোগ,’শুধু ওই একটি রাস্তাই নয়,কবরস্থান যাওয়ার রাস্তাসহ গ্রামের সমস্ত রাস্তাই দীর্ঘদিন বেহাল হয়ে পড়ে আছে । স্বাস্থকেন্দ্র বেহাল। স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থা বেহাল । আমরা সব রকমভাবে বঞ্চিত ।’
জানা গেছে,আজ বৈরগাছি-১ অঞ্চলের ৩-৪ গ্রামের শতাধিক গ্রামবাসী হাতে প্লাকার্ড নিয়ে সড়কপথ ধরে মিছিল করে গাজোল বিডিও অফিস যান । প্লাকার্ডে লেখা ছিল “রাস্তা কেন সস্তা, জবাব চাই”, “রাস্তা চাই” ও “আমরা কেন বঞ্চিত” প্রভৃতি শ্লোগান । পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরা শ্লোগান তোলেন, “জবাব তোমায় দিতেই হবে,নইলে গদি ছাড়তে হবে” । বিক্ষোভে প্রচুর মহিলাও সামিল হয় । মিছিলটি বিডিও অফিসে আসার পর আন্দোলনকারীদের গলার সুর আরও বেড়ে যায় । উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিডিও অফিস চত্বর । শেষ পর্যন্ত নিজের অফিস ছেড়ে বেড়িয়ে আসেন বিডিও বিপ্লব কুমার বিশ্বাস। তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। গ্রামে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন । এরপর বিক্ষোভকারীরা শান্ত হন ।।

