দিব্যেন্দু রায়, ভাতার (পূর্ব বর্ধমান), ১৯ সেপ্টেম্বর :কয়েকজন মিলে একটি বড়সড় আকৃতির কচ্ছপকে ধরে তার মাংস খাওয়ার মতলব করেছিল । তাদের মতলব বুঝতে পেরে গিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার রাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হাসান সেখ ও সেখ মহম্মদ সালাউদ্দিন নামে পশুপাখি প্রেমী দুই ভাই । তাঁরা রীতিমত ঝগড়াঝাঁটি করে ওই লোকজনের হাত থেকে কচ্ছপটি কার্যত ছিনিয়ে নেন । তারপর কচ্ছপটি নিয়ে তাঁরা সোজা চলে আসেন ভাতার থানায় । পরে তাঁরা কচ্ছপটিকে বনদপ্তরের কর্মীদের হাতে তুলে দেওয়ার পরেই বাড়ি ফেরেন ।
জানা গেছে,ভাতার থানার রাজিপুর গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ হাসান সেখ ও সেখ মহম্মদ সালাউদ্দিনের বাবা রাইহান সেখ চাষবাস করেন । মা মাজকুরা শেখ গৃহবধূ । হাসান বিএ প্রথমবর্ষে উত্তীর্ণ হওয়ার পর পড়াশোনা ছেড়ে দিয়ে পোলট্রির মুর্গীর ফার্ম করেন । বিজিপুর গ্রাম যেতে মূল সড়ক পথের পাশেই রয়েছে তাঁর ফার্মটি । হাসানের ভাই মহম্মদ সালাউদ্দিন ভাতার এমপি হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়াশোনা করেন ।
মহম্মদ সালাউদ্দিন জানান,রবিবার ভোর রাতের দিকে তাঁদের ফার্মে মুর্গী দিতে এসেছিল কোম্পানীর লোকজন । সেই সময় ফার্মের আশেপাশেই ঘোরাঘুরি করছিল একটি বড় আকৃতির কচ্ছপ । তখন কোম্পানীর লোকেরা কচ্ছপটি ধরে তাদের গাড়িতে রেখে দেয় । তারপর কচ্ছপটিকে মেরে কিভাবে তার মাংস খাওয়া যায় সেই নিয়েই তারা নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করছিল । কিন্তু তাদের কথাবার্তা তাঁর কানে চলে যায় । তারপর তিনি তাঁর দাদা হাসনকে এসে বিষয়টি জানান ।
জানা গেছে, হাসান ও সালাউদ্দিন মিলে কচ্ছপিকে মুরগির গাড়ি থেকে উদ্ধার করতে গেলে কোম্পানীর লোকজনের সঙ্গে তাঁদের রীতিমত বচসা বেধে যায় । শেষে দুই ভাই মিলে তাদের কাছ থেকে কচ্ছপটিকে কার্যত ছিনিয়ে নেয় । যদিও কোম্পানীর লোকজন দলে ভারি ছিল । তবে পশুপাখি প্রেমী দুই ভাইয়ের অনড় মানসিকতা দেখে শেষ পর্যন্ত তাঁরা হাল ছেড়ে দেন । এরপর সকাল হতেই দুই ভাই মিলে কচ্ছপিকে নিয়ে সোজা চলে আসেন ভাতার থানায় । পরে খবর পেয়ে বনদপ্তরের লোকজন এলে তাদের হাতে কচ্ছপিটে তুলে দিয়ে নিশ্চিন্ত মনে বাড়ি ফিরে যান ওই দুই যুবক । জীবপ্রেমী ওই দুই যুবকের এই প্রকার মানসিকতার প্রশংসা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।।