এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ ডিসেম্বর : ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে নিউটাউনে “দুর্গাঙ্গন” নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়েছিল রাজ্যের মন্ত্রিসভা। জমি চিহ্নিত করা হয়। দরপত্র ডেকে কাজ শুরু করে দেয় হিডকো। সেই দরপত্রের প্রক্রিয়াও সম্পন্ন হয়েছে। আগামিকাল সোমবার দুর্গাঙ্গন-র শিলান্যাস করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর । কিন্তু বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, মাটি ভরাটের কাজ শুরু হওয়ার পরেও স্থানীয় বসবাসকারী মুসলমান সমাজের আপত্তিতে দুর্গাঙ্গন নির্মাণের স্থান পরিবর্তিত করা হয়েছে। তার কটাক্ষ, “নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে বিপাকে মাননীয়া” ।
বছর তিন আগে দুর্গাপুজো ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড ইনট্যানজিবেল হেরিটেজ’ তকমা পাওয়ার পর চলতি বছরের ২১ জুলাই শহিদ দিবসে ধর্মতলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, নিউটাউনে দুর্গাঙ্গন তৈরি হবে। থাকবে দেবী দুর্গার মূল মন্দির । দেবী দুর্গার পাশাপাশি তাঁর চার সন্তানেরও আলাদা মন্দির থাকবে এখানে। প্রত্যেক মন্দিরেই প্রতিদিন পুজোর ব্যবস্থা থাকবে। মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হওয়ার পরে গত ২২ অগস্ট দরপত্র আহ্বান করে হিডকো। তাতে আনুমানিক খরচ (এস্টিমেটেড অ্যামাউন্ট) ধার্য করা হয় ২৬১ কোটি ৯৮ লক্ষ ৩০ হাজার ৩০৪ টাকা। দরপত্রে সময়সীমাও ধার্য করে দেওয়া হয়।যেখানে নিত্য পূজার আয়োজনও থাকবে।কিন্তু প্রস্তাবিত দুর্গাঙ্গন নির্মানের স্থানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করে শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন যে স্থানীয় মুসলিমদের আপত্তিতে নির্মাণের স্থান সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ।
তিনি লিখেছেন,’ঠেলার নাম বাবাজি !!!নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে বিপাকে মাননীয়া…পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ি আগামীকাল ২৯ ডিসেম্বর নিউটাউনে ‘দুর্গাঙ্গনের’ শিলান্যাস করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
বিগত দু’মাস ধরে রীতিমতো টেন্ডার ডেকে তোলামূলী ‘সিন্ডিকেট চক্র’ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের সংস্থা কে বরাত দেওয়া হয় মাটি ভরাটের কাজ করানোর।
নিউটাউনের বিশ্ব বাংলা সরণিতে স্থিত ‘ওয়েস্ট-ইন’ হোটেলের উল্টো দিকে, ইকো পার্কের কাছে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনস্থ পূর্ব নির্ধারিত স্থানে বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয় শিলান্যাসের জন্যে। কিন্তু হঠাৎ বিপত্তি !!!
কানা ঘুসো শোনা যাচ্ছে যে, সেই জমি যখন অধিগ্রহণ হয়েছিলো, তখন সেখানে জমির মালিকানা কিছু মুসলিম ব্যক্তিদের ও ছিল। তাদের পরিবারের ও স্থানীয় বসবাসকারী মুসলমান সমাজের আপত্তি কেনো তাদের অধিকৃত জমিতে সরকারি অর্থে হিন্দু ধর্মস্থল নির্মাণ করবে সরকার।এবার ছুঁচো গেলার অবস্থা হয় মাননীয়ার !নিজেকে হিন্দু প্রমাণ করতে গিয়ে দুর্গাঙ্গন, মহাকাল মন্দির ইত্যাদি বানানোর ঘোষণা করা হয়ে গেছে, আবার মুসলিম ভোট ব্যাংক কে চটালে সাড়ে সর্বনাশ!
অজ্ঞতা ভোট ব্যাংকের ওজনের ভারের তুলনায় হিন্দুদের ভাবাবেগ হালকা, তাই তাড়াতাড়ি স্থান পরিবর্তন করে বর্তমানে দুর্গাঙ্গনের স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে নিউটাউনের বাস স্ট্যান্ডের পাশে। এবারের চিহ্নিত জমি শিল্পের জন্যে নির্ধারিত ছিল ! তিনি শেষে লিখেছেন,’আসলে মাননীয়ার সময় খারাপ, এবারও ‘মেসি ম্যাজিক’ দেখাতে গিয়ে ‘মেসি ম্যাসাকার’ হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়ে গেছে। মা দুর্গা কে নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়ে এই অবস্থা হলো, আগামী দিনে আরও খারাপ দিন অপেক্ষা করছে মাননীয়ার জন্যে…।’।

