এইদিন ওয়েবডেস্ক,কালাবুর্গি,২৭ ডিসেম্বর : কর্ণাটকের কালাবুর্গিতে ভূত-প্রেত তাড়ানোর নামে এক মহিলাকে পিটিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে । ঘটনাটি ঘটেছে কালাবুর্গির আলান্দ এলাকায় । মহিলাকে নিম গাছের ডাল দিয়ে এমন নির্মমভাবে পেটানো হয়েছে যে সেই আঘাতেই মৃত্যু হয়েছে তার । নিহতের নাম মুক্তাবাই (২৬), তিনি আলান্দেরই বাসিন্দা।
জানা গেছে,কিছুদিন ধরে শারিরীক অসুস্থতায় ভুগছিলেন মুক্তাবাই । শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সন্দেহ হয় যে তাকে ভুতে ধরেছে । তাই ভুত তাড়াতে শ্বশুরবাড়ির লোকজন নিম গাছের ডাল দিয়ে তাকে নির্মমভাবে পেটাতে শুরু করে । সেই অমানবিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মুক্তাবাই সেখানেই নিস্তেজ হয়ে লুটিয়ে পড়েন । তাকে জিআইএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার ।
মৃতার বাপের বাড়ির সদস্যরা জানান, আলান্দ শহরের ভেঙ্কটেশ্বর নগরের বাসিন্দা মুক্তাবাইয়ের ছয় বছর আগে মহারাষ্ট্রের মুরুম গ্রামের গিদ্দেপ্পার সাথে বিয়ে হয়েছিল। এই দম্পতির পাঁচ বছরের একটি ছেলে রয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে, মুক্তাবাই তার স্বামীর পরিবার দ্বারা হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন৷ তাদের দাবি যে মুক্তাকে ভূতে ধরেছে । অভিযোগ করা হচ্ছে যে মুক্তার মা বারবার তাকে মারধর না করার জন্য কাতর অনুরোধ করেন । তিনি তার মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেন । কিন্তু তার পরেও স্বামীর পরিবার তার কথা শোনেনি এবং তার মেয়েকে ভূতে ধরেছে মনে করে লাগাতার মারধর করে ।
শুক্রবার যখন মুক্তাবাঈ বাড়িতে পড়ে যান, তখন আত্মীয়স্বজনরা, এটাকে ভুতে ভর করেছে ভেবে, তার পাঁচ বছরের ছেলের সামনে নিম কাঠ দিয়ে নির্বিচারে মারধর করে। মাথা ও শরীরে গুরুতর আঘাত সত্ত্বেও, তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পরিবর্তে, তারা তাকে গঙ্গাপুরের সঙ্গমা নদীতে স্নান করাতে এবং ভগবান দত্তের কাছে প্রার্থনা করতে নিয়ে যায় ।সেখান থেকে গুরুমঠকলে আর একটি পূজার জন্য নিয়ে যাওয়ার সময়, মুক্তাবাই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে তাৎক্ষণিকভাবে কালাবুর্গির জিআইএমএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়, কিন্তু চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এই ঘটনার বিষয়ে কালাবুর্গীর ব্রহ্মপুর থানায় একটি ‘জিরো এফআইআর’ দায়ের করা হয়েছে এবং আরও আইনি ব্যবস্থা ও তদন্তের জন্য মামলাটি মহারাষ্ট্রের মুরুম থানায় স্থানান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।।

