এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৬ ডিসেম্বর : ময়মনসিংহের ভালুকায় ২৭ বছরের হিন্দু যুবক দিপু দাসকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে আজ শুক্রবার ফের কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশনারের অফিসে বিক্ষোভ দেখালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তার সঙ্গে হাজার খানেক সন্ন্যাসী ও সন্নাসিনী ছিলেন । অবশ্য আজ বাংলাদেশের হাইকমিশনার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে দেখা করে তার কথা শোনেন । শুভেন্দুর সঙ্গে ছিলেন সন্ন্যাসীদের প্রতিনিধিদল । বাংলাদেশ হাইকমিশনারের অফিস থেকে বেরিয়ে এসে কি কি কথোপকথন হয়েছে তা সাংবাদিকদের জানান শুভেন্দু অধিকারী । তিনি বলেছেন,’যেভাবে ইহুদিদের বাঁচাতে গাজায় ইসরায়েল লড়াই করছে, ঠিক তেমনই ভারতের ১০০ কোটি হিন্দু বাংলাদেশের দেড় দূকোটি হিন্দু জন্য লড়াই করবে ।’
তিনি বলেন,’আমরা ডেপুটি হাইকমিশনারকে বলেছিলাম আজকে যদি মিট করবেন ভালো, না মিট করলে ১০০০০ লোক নিয়ে এসে বসবো । যাইহোক বলছে, আমাদের সরকার ক্লিয়ারেন্স দিয়েছে আপনার সঙ্গে কথা বলার জন্য । বা ভয় পেয়েছে, যাইহোক হবে ।’ তিনি বলেন,’ইতিমধ্যে বর্ডার এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে । আমরা আজকে এখানে জানতে এসেছিলাম দিপু চন্দ্র দাসের অপরাধ কি ? কিছু বলতে পারেনি । দিপু চন্দ্র দাস ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ দূরের কথা, আড়াইশো টাকা দামের ছোট মোবাইল ব্যবহার করতেন । সম্পূর্ণভাবে ধর্মীয় স্লোগান দিয়ে বাংলাদেশকে হিন্দু শূন্য করার জন্য তাকে মেরেছে এবং পুলিশের হেফাজত থেকে তাকে জিহাদি জঙ্গিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ।আধমরা করে পুড়িয়ে দিয়েছে।ওনারা বললেন দশ জনকে অ্যারেস্ট করেছি । আমাদের মহারাজরা বলেছেন তাহলে বেল পেয়ে যাবে । ওনারা বললেন বিচার না হওয়া পর্যন্ত বেল পাবে না।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’দ্বিতীয়, আমরা বলেছি মৃত্যুর কোনো ক্ষতিপূরণ হয় না । আপনারা ক্ষতিপূরণের কি করেছেন ? না,রাষ্ট্র দায়িত্ব নিয়েছে ওনার পরিবারের । আমরা বলিছি কি দায়িত্ব নিয়েছেন পাবলিকলি জানান ।’ তিনি বলেন,’আমরা পরিষ্কার বলেছি এটা বন্ধ হবে কবে ? হিন্দু নির্যাতন বন্ধ কবে হবে ? প্রভুরা বলেছেন চিন্ময় প্রভুকে কোন অপরাধে জেলে ঢুকিয়ে রাখা হয়েছে ? ওনাদের লিমিটেশন আছে । ডেপুটি হাই কমিশনার আর কতটা উত্তর দেবে ? তবুও অনেকগুলো কথার উত্তর দিতে পারেনি । সাধু সমাজও আজকে ছিলেন । তারা অত্যন্ত ব্যথিত কন্ঠে বলেছেন যে এইসব বন্ধ না হলে আমরা রিঅ্যাক্ট করবো ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’আমি উদাহরণ দিয়েছি, গাজাতে যে লড়াই ইসরাইল করছে, কেন করছে ? ইহুদিদের বাঁচানোর জন্য । ইরানসহ ইসলামিক কান্ট্রিগুলি প্যালেস্টাইনকে সাহায্য করছে কেন ? যেহেতু প্যালেস্টাইন ইসলামিক কান্ট্রি, তাই এটা ধর্মীয় কারণে । আমি প্রশ্ন করেছি আগের শেখ হাসিনার সরকার কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের থাকতে দিয়েছিল কেন? মুসলমান বলে । তাহলে ওপারে দু’কোটি হিন্দু আছে, তারা মার খাবে পুড়িয়ে দেবেন যুবক ছেলেগুলোকে, আর এপারের ১০০ কোটি হিন্দু বসে বসে দেখবে এই জিনিস হতে পারে না । আমরা ১০০ কোটি হিন্দু বাংলাদেশের দুই কোটি হিন্দুর জন্য লড়াই করব ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’খালা মমতাজ যত প্রাচীর করে পুলিশ দিয়ে ব্যারিকেড করে ঘিরে রাখুক, ব্যবস্থা যদি না নেয়, নতুন বছরে এই সবগুলোকে তুলে ফেলে দেব । যেমন মেসির দিন যুবভারতীতে যুব সমাজের তাড়া দেখেছেন রাজীব কুমাররা, আমরা এখানে দেখিয়ে দেব । আর আজকে এক হাজার সাধু সমাজ এসেছেন, ৩০০ নাগা সন্ন্যাসী, গঙ্গাসাগরে পাঁচলাখ সাধু যাবেন, গঙ্গাসাগরের স্নান করে ফেরার পরে আমি সব সাধুকে বাবুঘাট থেকে পথ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসব । কলকাতা পুলিশের মনোজ ভার্মার কত ক্ষমতা আছে ওই দিন দেখা হবে।’
আজ বিকেলে সাধুসন্তদের সাথে মিছিল করে বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশন যান শুভেন্দু অধিকারী । প্রত্যেকের গলায় ঝোলানো ছিল মৃত দিপু দাসের ছবি সহ পোস্টার । তার আগে বিশাল বিশাল ব্যারিকেড করে গোটা এলাকা ঘিরে রাখে পুলিশ । সংকীর্ণ পথ দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীসহ প্রতিনিধিদলকে ভিতরে ঢোকানো হয় । আগের দিনে একই রকম প্রতিবাদ মিছিলের উপর নির্মমভাবে লাঠিচার্জ করেছিল কলকাতা পুলিশ । আজ সেই প্রসঙ্গও তোলেন বিরোধী দলনেতা । তিনি বলেন,’পুলিশ শান্তিপূর্ণ মিছিলের উপর যে আক্রমণ করেছে, বলতে লজ্জা লাগে যে মোল্লা ইউনূসের পুলিশ যা মমতার পুলিশও তাই৷ ১০ জনেরও বেশী আহত হয়েছে । নাক ভেঙেছে । শিবাজী মহারাজসহ সাধুদের মেরেছে । ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে । সাতজন মহিলা আগে জামিন পেয়েছিলেন । আজকে ১২ জনকে কোর্টে তোলা হয়েছে ।’।

