প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৬ ডিসেম্বর : ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) খসড়া তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর এখন “ম্যাপিং মিস ম্যাচ” ভোটারদের উপযুক্ত তথ্য সরবরাহ করতে শুনানিতে ডাকছে নির্বাচন কমিশন । ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও তথ্য না মেলায় অনেকের ডাক পড়ছে । আর এই প্রক্রিয়াতে ডাক পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের মা,ভাই এবং ভাইয়ের স্ত্রীর । কিন্তু নোটিশ হাতে পেয়ে বেজায় চটেছেন তৃণমূল বিধায়ক । বিধায়ক এই ঘটনাকে বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখছেন । তার অভিযোগ যে তৃণমূলের বিধায়ক বলেই তাঁর পরিবারকে অপদস্ত করতে নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এইসব করাচ্ছে।
প্রসঙ্গত,গত ১৬ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের তরফে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। যাঁরা এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছেন কিন্তু যাঁদের ম্যাপিং সম্পূর্ণ হয়নি বা প্রদত্ত তথ্য ম্যাচ করছে না, তাঁদের নোটিস দিয়ে শুনানিতে ডেকে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কমিশন।
এসআইআর-এর (SIR in Bengal) নিয়ম হল, ২০০২-এর সমীক্ষার লিস্টের সঙ্গে নাম মেলাতে হবে। যদি কোনও ভোটার ২০০২-এর পরে ভোটার হয়ে থাকেন, সে ক্ষেত্রে ওই সমীক্ষার লিস্টে থাকা বাবা-মা বা দাদু-দিদার নাম মেলাতে হবে। এটাই হল ম্যাপিং।নাম মিলছে না মানেই চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ যাবে এমনটা নয়। ২০০২-এর সঙ্গে ম্যাপিং না হলে শুনানিতে ডাকা হবে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে। তাঁকে প্রমাণপত্র বা যোগ্য ভোটার হওয়ার জন্য নথিপত্র জমা করতে হবে। তাতে যদি কমিশন সন্তুষ্ট হয়, তাহলে নতুন এসআইআর তালিকায় জায়গা পাবে ওই ভোটারের নাম, নাহলে নাম বাদ যাবে।আগামী শনিবার থেকে শুনানী পর্ব শুরু হবে।সেই শুনানিতে হাজির থাকার জন্য নির্বাচন কমিশণের তরফে তৃণমূল বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের মা নন্দরানী বাগ, ভাই বিপিন বাগ এবং ভাইয়ের স্ত্রীকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নবীনচন্দ্র বাগের কথায়,’২০০২ সালের খণ্ডঘোষ বিধানসভার ২৯ নম্বর বুথের ভোটার তালিকায় আমার মা নন্দরানী বাগের নাম ৪০৫ ক্রমিক নম্বরে রয়েছে।আর আমার ভাই বিপিন বাগের নাম একই বুথের ৪০৬ ক্রমিক নম্বরে স্পষ্টভাবে রয়েছে।২৩ বছর আগের ভোটার তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও শুনানিতে হাজির থাকার কথা জানিয়ে আমার মা ও ভাইকে কেন কমিশনের তরফে নোটিস পাঠানো হলো সেটাই বুঝে উঠতে পারছি না।’
নোটিশ আসায় তিনি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে বিজেপির ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব খাড়া করছেন এখন । তার কথায়,’আমি তৃণমূলের বিধায়ক বলেই হয়তো বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহার করে আমার পরিবারকে এইভাবে মানসিক চাপের ফেলছে।’ নোটিস পাওয়ার পর থেকে তাঁর মা ভীষণ আতঙ্কে রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি ।
যদিও বিজেপির রাজ্য সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বিধায়কের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন । তার সাফ কথা হল,’এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া । শুনানিতে যাঁদের ডাকা হয়েছে তাঁদের নাম হয়তো ভোটার তালিকায় আছে,কিন্তু বিএলও-এর অ্যাপে নাই। তাঁরা শুনানিতে গিতে তাঁদের সব তথ্য দেখিয়ে দেবেন।তাহলেই তো সব মিটে যাবে। নির্বাচন কমিশনের নোটিশ পেয়ে বিধায়ক এত উতলা হচ্ছেন কেন ?’

