এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২২ ডিসেম্বর : রাজ্যের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন(এস আই আর)-এর পর খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন । তাতে প্রায় ৫৯ লাখ নাম বাদ যাওয়া এক প্রকার নিশ্চিত । এখন খসড়া তালিকার নাম আসা ভোটারদের নথিপত্র যাচাই বাছাই করা হচ্ছে । কোনো অসঙ্গতি দেখলেই পাঠানো হচ্ছে রি-ভেরিফিকেশনের নোটিশ । এরই ধারাবাহিকতায় মালদা জেলার চাঁচল ব্লকের সুতিগ্রামের ১৭ নম্বর বুথের বাসিন্দা ২৭৮ জনের কাছে একসাথে রি- ভেরিফিকেশনের নোটিশ আসায় তোলপাড় পড়ে গেছে এলাকায় ।
জানা গেছে,সুতিগ্রামের ১৭ নম্বর বুথটি মুসলিম অধ্যুষিত । শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত । এমতবস্থায় রি-ভেরিফিকেশনের ডাক পাওয়া ব্যক্তিরা নির্বাচন কমিশনকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন । একই অভিযোগ তুলছে তৃণমূল নেতৃত্বও । যদিও বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছে যে তৃণমূল তাদের অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলে দিয়েছিল ।একটাও অনুপ্রবেশকারীর এদেশে ঠাঁই হবে না বলে জানিয়েছে বিজেপি ।
এদিকে আজ সোমবার সুতিগ্রামের ১৭ নম্বর বুথের বাসিন্দাদের একাংশ গ্রামের রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায় । বিক্ষোভকারীদের দাবী, তারা সঠিক তথ্য দিয়ে এসআইআর-এর এনামুরেশন ফর্ম ফিলাপ করেছেন। ফর্ম ফিলাপের পর তাদের নাম খসড়া তালিকাতেও তাদের নাম উঠেছে। কিন্তু খসড়া ভোটার, তালিকায় নাম ওঠার পরেও এখন নির্বাচন কমিশন একই বুথের ২৭৮জনকে রি- ভেরিফিকেশনের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে। এনিয়ে তারা চরম আতঙ্কের মধ্যে আছে ।
বিক্ষোভকারী মতিউর রহমান বলেন,’২০০২ সালের ভোটার তালিকায় আমার বাবা-মায়ের নাম ছিল। সেই সূত্রে আমি গননা ফর্ম ফিল আপ করেছিলাম । খসড়া তালিকায় নামও আছে । কিন্তু আমাদের বুথের বিএলও রি- ভেরিফিকেশনের নোটিশ ধরিয়ে দিয়ে চলে গেছে ।’তার কথায়,’নির্বাচন কমিশনের কিছু একটা ভুল হচ্ছে । কারন আমি যথাযথ তথ্য দিয়েই গননা ফর্ম অনলাইনে জমা করেছি ।’ আর এক বিক্ষোভকারী মামুদ মিঁয়ার কথায়,’আমাদের বুথ তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি । মনে হচ্ছে, সেই কারনে বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে একসঙ্গে এত জনের নাম বাদ দিতে চাইছে বলে মনে হচ্ছে ।’
একই অভিযোগ করেছেন তৃণমূল পরিচালিত মালদা জেলাপরিষদের সহকারি সভাধিপতি রফিকুল হোসেন । তার অভিযোগ, ‘নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। তবে এতে কিছু লাভ হবেনা। সাধারণ মানুষ সঠিক তথ্য দেখিয়ে ফাইনাল ভোটার তালিকায় নিজেদের নাম তুলবেন ।’ যদিও বিজেপির উত্তর মালদার সাধারণ সম্পাদক অভিষেক সিংহানিয়ার বক্তব্য, ‘বৈধ ভোটারদের নাম বাদ যাবেনা। বাদ পড়বে অবৈধ ভোটারদের নাম । তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীরদের নাম অবৈধভাবে ভোটার তালিকায় নাম তুলে দিয়েছিল । এখন নির্বাচন কমিশন তাদের নাম বাদ দিচ্ছে । এটাই স্বাভাবিক । অনুপ্রবেশকারীদের এদেশে কোনো ঠাঁই হবে না ।’ সুতিগ্রামের ১৭ নম্বর বুথের বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) সইফুর রহমান জানিয়েছেন, যা কিছু হবে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মোতাবেক হবে । নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, প্রায় দু’কোটি ভোটারকে রি-ভেরিফিকেশনের জন্য নোটিশ পাঠানো হবে । ফলে ঠিক কত সংখ্যক নাম রাজ্যের ভোটার তালিকা থেকে বাদ যেতে চলেছে তা এখনো স্পষ্ট নয় ।।

