এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ ডিসেম্বর : আজ শনিবার শনিবার নদিয়া জেলার রানাঘাট বিধানসভার তাহেরপুর নেতাজি পার্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘পরিবর্তন সংকল্প’ জনসভা ছিল। কিন্তু বিপুল জনসমাগম হওয়া সত্ত্বেও খারাপ আবহাওয়ার কারনে সভায় উপস্থিত হতে পারেননি তিনি । পরিবর্তে তাঁর অডিও রেকর্ড চালানো হয় সভায় । তবে সেই রেকর্ডে যেকথা তিনি বলতে পারেননি তা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন তিনি । নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ লিখেছেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের তৈরি করা ‘মহা জঙ্গল রাজ’ থেকে পশ্চিমবঙ্গকে মুক্ত করার সময় এসে গেছে ।”
তিনি লিখেছেন,’আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে, যা আমি রাণাঘাটের সভায় আলোচনা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আবহাওয়ার কারণে সেখানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকতে পারিনি। নিচে একটি থ্রেডে সেই বিষয়গুলির বিবরণ দিলাম…
আমরা যারা ভারতীয় সংস্কৃতির মহত্ত্বে বিশ্বাস করি, তাঁদের কাছে নদিয়া এক বিশেষ স্থান। এই পবিত্র ভূমি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত। পরোপকারের ঐতিহ্য এই মাটিতে প্রবাহিত হয়েছে যুগ যুগ ধরে, যার জীবন্ত প্রতিফলন আমার মতুয়া ভাই-বোনদের মধ্যে দেখা যায়। তাই নদিয়া ও পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নে কাজ করতে পারা আমার কাছে এক গৌরবের বিষয়।
পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে ক্ষমতায়িত করতে আমাদের সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। ইতিমধ্যেই ৫২ লাখ বাড়ি মঞ্জুর হয়েছে, যা প্রত্যেক নাগরিকের মাথার ওপর ছাদ সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে। রাজ্যের এক কোটিরও বেশি পরিবার জল জীবন মিশনের সুবিধা পেয়েছে। একবার পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠিত হলে এই কাজের গতি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং সুবিধাপ্রাপকদের সংখ্যাও বাড়বে।
পশ্চিমবঙ্গের জনগণকে উন্নতমানের ও সাশ্রয়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ১৩,০০০-এরও বেশি আয়ুষ্মান আরোগ্য মন্দির নির্মাণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৭৫০-টিরও বেশি পি এম- বিজেপি কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে সুলভ মূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হয়।
বিহারের জনগণ আবারো প্রমাণ করেছেন যে তারা আর ‘জঙ্গল রাজ’-এর প্রত্যাবর্তন চান না। এখন সময় এসেছে পশ্চিমবঙ্গকেও তৃণমূল কংগ্রেসের তৈরি করা ‘মহা জঙ্গল রাজ’ থেকে মুক্ত করার।
বিজেপি বিশ্বাস করে কাজের গতি ও পরিসরে । সুশাসনেও। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেসের একমাত্র চিন্তা কাটমানি ও কমিশন নিয়ে। আবাসন, স্বাস্থ্য, খাদ্য নিরাপত্তা, শিক্ষা সহ হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প শুধুমাত্র তৃণমূলের অসহযোগিতামূলক ব্যবহারের কারণে থমকে আছে।
তৃণমূল যদি মোদীর বিরোধিতা করতে চায়, তারা শতবার তা করতে পারে। তৃণমূল যদি বিজেপির বিরোধিতা করতে চায়, তারা বারবার তা করতে পারে। কিন্তু কেন তারা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন আটকে দিচ্ছে? তাদের রাজনীতি শুধু স্বার্থপরতায় ভরা।গত কয়েক বছরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ অনেক সহ্য করেছেন। রাজ্যের নারীশক্তির অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। ফুটবলপ্রেমী রাজ্য হিসেবে পরিচিত পশ্চিমবঙ্গ আজ লজ্জিত, সৌজন্যে তৃণমূল । সাম্প্রতিক ঘটনাটি রাজ্যের অসংখ্য ফুটবলপ্রেমী তরুণ-তরুণীর হৃদয় ভেঙে দিয়েছে।
তৃণমূল সর্বশক্তি দিয়ে সেই অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে চলেছে, যারা পশ্চিমবঙ্গের গরিব মানুষকে লুট করছে, রাজ্যে সন্ত্রাস ও অস্থিরতা ছড়াচ্ছে এবং আমাদের নারীশক্তির উপর বর্বর অত্যাচার চালাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের জনগণের প্রতি মোদীর প্রতিশ্রুতি, রাজ্যে একবার বিজেপি সরকার গঠিত হলেই অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আমি প্রত্যেকটি মতুয়া ও নমঃশূদ্র পরিবারকে আশ্বাস দিচ্ছি, আমরা সর্বদা তাঁদের সেবা করব। তাঁরা তৃণমূলের অনুগ্রহে এখানে নেই। তাঁরা আমাদের সরকারের প্রণয়ন করা CAA-এর মাধ্যমে সম্মানের সঙ্গে ভারতে বসবাস করার অধিকার পেয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠিত হলে মতুয়া ও নমঃশূদ্র সমাজের জন্যে আমরা আরো বেশি করে কাজ করব।।
