এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২০ ডিসেম্বর : বিধানসভা নির্বাচনের আবহে কলকাতা থেকে জেলাগুলিতে ফের বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক পড়ে গেছে৷ খাস কলকাতার তৃণমূলের দুর্গে বড়সড় ফাটল ধরিয়ে দিল বিজেপি। এছাড়া মালদা জেলার বৈষ্ণবনগর বিধানসভা এবং নদীয়া জেলার রানাঘাট বিধানসভার তাহেরপুরে শতাধিক মানুষ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেছে বলে দাবি করেছে গেরুয়া শিবির ।
বৃহস্পতিবার রাতে বেলেঘাটা বিধানসভার অন্তর্গত ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের এক ঝাঁক সক্রিয় তৃণমূল কর্মী আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগদান করেছে ।উত্তর কলকাতা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তমোঘ্ন ঘোষ এবং বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তাপস রায়ের হাত ধরে তৃণমূলের প্রাক্তন কর্মীরা পদ্ম পতাকা তুলে নেন। রাজনৈতিক মহলের মতে বেলেঘাটায় এই যোগদান বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ৷ কারণ,বিজেপির এবারের রণকৌশলে বড় নেতাদের চেয়ে সাধারণ কর্মীদের বেশ গুরুত্ব দেওয়া । যোগদানকারীদের অভিযোগ, তৃণমূলে সাধারণ কর্মীদের মর্যাদা নেই এবং স্থানীয় নেতৃত্বে একনায়কতন্ত্র চলছে। তাই মোদীজির উন্নয়নের নীতিতে বিশ্বাস রেখে তাঁরা বিকল্প পথ বেছে নিয়েছেন। তাপস রায় বলেছেন,’তৃণমূলের পতন শুরু হয়েছে বাড়ির অন্দর থেকেই, যার প্রমাণ নিচুতলার কর্মীদের এই জনস্রোত।’
অন্যদিকে মালদা জেলা বিজেপি জানিয়েছে, বৈষ্ণবনগর বিধানসভার ১-নম্বর মন্ডলের অন্তর্গত নতুন ১৬ মাইল এলাকায় বিভিন্ন দল থেকে আসা ২৫০ জনের উপরে কর্মীকে নিয়ে যোগদান কর্মসূচি করা হয়েছিল শুক্রবার । যোগদান করেছেন এলাকার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব জয়ন্ত মন্ডলও । এদিকে আজ শনিবার নদীয়া জেলার রানাঘাট বিধানসভার তাহেরপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার আগের রাতে নদীয়াতে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে শতাধিক মানুষ যোগদান করেছে বলে দাবি করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত,আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজ্য বিজেপি এক বিশেষ নীতিগত অবস্থান নিয়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, নির্বাচনের মুখে হাই-প্রোফাইল বা ‘হেভিওয়েট’ নেতাদের দলবদলকে তারা খুব একটা প্রাধান্য দেবে না। বরং যারা বুথ স্তরে সংগঠনের খুঁটি হয়ে কাজ করেন, সেই সমস্ত নিচুতলার কর্মীদেরই দলে টানতে চাইছে তারা। কলকাতার বেলেঘাটার পাশাপাশি নদীয়া ও মালদাতে যোগদানের মধ্য দিয়ে বিজেপির সেই ‘নিচুতলা নীতি’ লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷
এদিকে দলের নিচু তলায় ভাঙন শাসক শিবিরের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। বিশেষ করে বেলেঘাটার মতো এলাকা যেখানে তৃণমূলের আধিপত্য বহু বছরের, সেখানে এই ধরণের ভাঙন রুখতে তারা কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।।

