প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৬ সেপ্টেম্বর :ব্যাঙ্ক ম্যানেজার পরিচয় দিয়ে তথ্য জেনে নিয়ে গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওরার ঘটনার আকছার ঘটে চলেছে ।এবার জালিয়াতি চক্রের শিকার হল খোদ পূর্ব বর্ধমানের কালনা পৌরসভা ।চেক ও সই জাল করে কেউ পৌরসভার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে নিয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা । বিষয়টি জানাজানি হতেই বৃহস্পতিবার ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় কালনা পৌরসভার প্রশাসনিক মহলে । পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ঘটনা বিষয়ে কালনা থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। জালিয়াতির রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করেছে কালনা থানার পুলিশও। ব্যাঙ্কে টাকা রাখা আদৌ আর নিরপদ হবে কিনা সেই বিষয়টি এখন ভাবিয়ে তুলেছে কালনা পৌরসভা কতৃপক্ষ,বিধায়ক ও কালনার বাসিন্দারদের ।
কালনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কথায় জানা গিয়েছে, কালনা শহরের একটি রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কে কালনা পৌরসভার নিজস্ব অ্যাকাউন্ট রয়েছে।ওই ব্যাঙ্কেরই চেকবই ব্যবহার করে কালনা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।বুধবার পৌরসভা কর্তৃপক্ষ ত্যাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাসবই আপডেট করেন । পাসবই আপডেট করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দেখেন তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের চেক পুরোপুরি নকল করে রাঝিদেবী নামে এক মহিলার অ্যাকাউন্টে ৯৭ হাজার ৩৪৭ টাকা ট্রান্সফার করা হয়েছে । পরে ওই টাকা আবার তুলেও নেওয়া হয়েছে। এরপরেই পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এই জালিয়াতির বিষয়টি নিয়ে ওই রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাঙ্কের দ্বারস্থ হন ।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরেই ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষ টাকা তোলা সংক্রান্ত সব তথ্য খতিয়ে দেখেন । ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পৌরসভার আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন ,“চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেউ কালনা পৌরসভার একটি চেক জাল করে কলকাতার একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শাখা অফিসে জমা করে ।সেই টাকা একটি নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে জমা হবার পর তা তুলেও নেওয়া হয়েছে ।’
কালনা পৌরসভার প্রশাসক আনন্দ দত্ত এদিন বলেন,“ব্যাঙ্কের পাসবই আপডেট করার পরই জালিয়াতির বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে ।জালিয়াতরা তাঁদের পৌরসভার
ব্যাঙ্ক অ্যাঙন্টের যে নম্বারের চেক জমা দিয়ে টাকা তুলে নিয়েছে সেই নম্বারের আসল চেকটি এখনও পুরসভার কাছেই রয়েছে”।
কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ বলেন,রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাঙ্কের ওই নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে সরকারের ভর্তুকির টাকা ঢোকে । সেই অ্যাকাউন্টের চেক ও সই জাল করে টাকা তুলে নেওয়ার ঘটনায় হয় পৌরসভার কেউ নয়তো ব্যাঙ্কেরই কেই যুক্ত থাকতে পারে বলে বিধায়ক সন্দেহ প্রকাশ করেছেন । একই সঙ্গে তিনি জানান পুলিশি তদন্তেই এই জালিয়াতির পর্দা ফাঁস হবে“।
কালনা শহরের ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার অসীম কুমার ঘোষ এই বিষয়ে বলেন,“জালকরা পৌরসভার চেকটি ক্লিয়ারিংয়ের জন্য অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কে কলকাতার কোনও একটি শাখা অফিসে জমা পড়ে।গত ১০ সেপ্টেম্বর তারিখে চেকের ক্লিয়ারেন্স হয়।যে অ্যাকাউন্টটিতে টাকাটি ক্লিয়ার হয়েছে তা ’ফ্রিজ’ করার জন্য উচ্চ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’।