এইদিন আন্তর্জাতিক ডেস্ক,১২ ডিসেম্বর : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-৭ এর বিকল্প হিসাবে ভারত-রাশিয়া ও চীনকে নিয়ে পাঁচ দেশীয় একটি নতুন জোট গঠন করতে আলোচনা চালাচ্ছে। মার্কিন রাজনীতি বিষয়ক সংবাদপত্র পলিটিকো একটি প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে। হোয়াইট হাউজ গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের কিছু অংশ প্রকাশ করে।ওই নিরাপত্তা কৌশলেই পাঁচ দেশীয় নতুন জোট গড়ার এই পরিকল্পনা আছে বলে খবর পাওয়া গেছে। যদিও এ সংক্রান্ত নথিটি এখনও প্রকাশ পায়নি।
ডিফেন্স ওয়ান নিউজ ওয়েবসাইট জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী, জি৭ এর বিকল্প হিসাবে গড়ে তোলা হবে সি-৫ জোট (কোর ৫)। এ জোটে থাকবে বিশ্বের ক্ষমতাধর নেতৃস্থানীয় পাঁচ দেশ- যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, ভারত ও জাপান।জি-৭ (কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র) এর মতো সি-৫-ও হবে অনানুষ্ঠানিক ফোরাম বা ক্লাব।
তবে এই জোটের সদস্যপদ রাজনৈতিক ব্যবস্থার নিরীখে নির্ধারিত হবে না, বরং দেশগুলোর জনসংখ্যা (১০ কোটির বেশি মানুষ) এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার নিরীখে হবে।তাছাড়া, জি৭ জোটের মতো সি-৫ জোটও বিশ্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত বৈঠক এবং আলোচনা চালিয়ে যাবে।
সি-৫ বৈঠকের আলোচ্যসুচির প্রথমেই প্রাধান্য পেতে পারে মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি। বিশেষত, ইসরায়েল এবং সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিষয়টি। মধ্যপ্রাচ্যকে স্থিতিশীল করার পথে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসাবে বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি আন্না কেলি সি-৫ সংক্রান্ত এই ধরনের কোনও নথি থাকার বিষয়টি পলিটিকো পত্রিকাকে নিশ্চিত করে বলতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তবে জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সি-৫ জোট গড়া হলে তা বর্তমান প্রশাসনের স্বার্থেই কাজ করবে।
হোয়াইট হাউজ ডিসেম্বরের শুরুতেই নতুন জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল প্রকাশ করেছে।৩৩ পৃষ্ঠার এই জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলের নথির ভাষায় অনেকটা ক্রেমলিনের বক্তব্যের সুরই অনুরণিত হয়েছে বলে অভিযোগ ইউরোপীয় ইউনিয়নের কয়েকটি দেশের কর্মকর্তা ও বিশ্লেষকদের। এই কৌশলপত্রের নথিতে ইউরোপ সভ্যতার দিক থেকে বিলুপ্তির মুখে আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এতে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য রাশিয়াকে হুমকি হিসেবেও দেখানো হয়নি।
এবার ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন সি-৫ জোট গড়া নিয়ে যে খবর পলিটিকো দিয়েছে তাতেও দেখা যাচ্ছে, এই জোটে রাখা হয়নি ইউরোপের কোনো দেশকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের ইউরোপীয় বিষয়ক পরিচালক হিসাবে কাজ করেছিলেন টোরি টাউসিগ।
তিনি বলেন,সি৫ জোট পরিকল্পনায় ইউরোপ না থাকার কারণে ইউরোপীয়রা মনে করতে পারে যে, এই মার্কিন প্রশাসন রাশিয়াকেই বিশিষ্ট ক্ষমতাধর দেশ হিসাবে দেখে, যাদের ইউরোপের ওপর নিজস্ব প্রভাব খাটানোর ক্ষমতা আছে।।

