দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৬ সেপ্টেম্বর : শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হল কাটোয়ার মোস্তাপুর গ্রামের ত্রাস ‘ডন’ নামে ষাঁড়টির ৷ সোমবার সন্ধ্যায় তার হামলায় স্থানীয় এক গোপালকের মৃত্যুর পর ষাঁড়টিকে ঘিরে ব্যাপক আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল এলাকায় । ঘাতক ষাঁড়টিকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রাণীসম্পদ বিকাশ বিভাগ ও পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা । খবর পেয়ে বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে মোস্তাপুর গ্রামে যায় কাটোয়ার প্রাণীসম্পদ বিকাশ বিভাগের একটি প্রতিনিধিদল । সুযোগ বুঝে তাঁরা ষাঁড়টিকে লক্ষ্য করে ঘুমপাড়ানি গুলি ছোড়ে । তারপর তাকে তুলে এনে স্থানীয় একটি স্কুলঘরে রাখা হয়েছিল । কিন্তু রাতেই মারা যায় ষাঁড়টি । প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের আধিকারিক রমেশ কয়াল বলেন, ‘ষাঁড়টিকে এক গ্রাম ডোজের ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছিল । কিন্তু ষাঁড়টি তিনদিন অভুক্ত ছিল । যার ফলে হার্টফেল করে মারা গেছে ।’ পাশাপাশি তিনি জানান, একটি ষাঁড়ের গড় আয়ূ সাধারনত ১৫ বছর হয় । ওই ষাঁড়টির ১৪ বছর বয়স হয়ে গিয়েছিল ।
বছর পাঁচেক আগে এলাকায় আবির্ভাব হয়েছিল কালচে খয়েরি রঙের দশাসই চেহারার ওই ষাঁড়টির । মোস্তাপুর, রায়পাড়াসহ দুতিনটে গ্রামে সে ঘুরে বেড়াতো । উগ্র স্বভাবের জন্য গ্রামের লোকজন ষাঁড়টির ‘ডন’ নাম রাখে । ইতিমধ্যে অনেককে সে ঘায়েল করেছে । তবে সোমবার সন্ধ্যায় ষাঁড়টির হামলায় মৃত্যু হয় মোস্তাপুর গ্রামের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বিশ্বাস নামে এক গোপালকের । রবীন্দ্রনাথবাবু তাঁদের গাভীটিকে নিয়ে গোয়ালে ঢোকাতে যাচ্ছিলেন । তখন আশপাশে চড়ছিল ষাঁড়টি । সেসময় আচমকা সে রবীন্দ্রনাথবাবুকে গুঁতিয়ে দেয় । তার ফলেই মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধের ।
জানা গেছে, সেই দিন থেকে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথবাবুর গোয়ালের সামনে ঠায় দাঁড়িয়েছিল ষাঁড়টি । শেষে প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্মীদের ছোড়া ঘুমপাড়ানি গুলিতে তার মৃত্যু হয় । এরপর মৃত ষাঁড়টির ময়নাতদন্ত করার বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করছিল প্রাণীসম্পদ বিকাশ বিভাগ ।
কিন্তু বৃহস্পতিবার ভোরে স্থানীয় গ্রামবাসীরা ষাঁড়টির দেহ সৎকার করে দেয় ।।