এইদিন ওয়েবডেস্ক,হরিশ্চন্দ্রপুর(মালদা)১৫ সেপ্টেম্বর : তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে নদী দখলের অভিযোগ উঠল কিছু মানুষের বিরুদ্ধে । অভিযোগ, বল্লম নিয়ে নদীর বাঁধ বরাবর তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে তারা জাল ফেলে মাছ ধরতে শুরু করে দিয়েছে । ফলে বিপাকে পড়ে গেছেন প্রায় পাঁচ শতাধিক মৎস্যজীবি । তাঁদের রুজিরুটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে অর্ধাহার অনাহারে দিন কাটছে । ঘটনাটি ঘটেছে ঘটনা মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের-২ ব্লকের ভালুকা বাজার এলাকার ফুলহার নদীতে । মৎস্যজীবিরা জানান,নদীতে তাঁদের মাছ চাষ ধরার অনুমতি দিয়েছে রাজ্যপাল থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসন । তাঁরা যাতে মাছ ধরতে গিয়ে কোনও সমস্যায় না পড়েন তার জন্য ওই এলাকায় ১৪৪ ধারাও জারি রয়েছে । অথচ তৃণমূলের একদল কর্মী সমর্থক সেই সবের পরোয়া না করে তাঁদের বঞ্চিত করে গায়ের জোরে বিগত এক মাস ধরর মাছ ধরতে শুরু করে দিয়েছে বলে অভিযোগ । বুধবার এনিয়ে বঞ্চিত মৎস্যজীবিরা তুমুল বিক্ষোভ দেখান ।
ভালুকা বাজার এলাকায় ফুলহার নদীর একটা অংশ বাঁধের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে । এলাকার প্রায় ৫০০ মাছ চাষি এই নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালান । বাঁধ লাগোয়া নদীর এই অংশ একরকম ভেরির মত হয়ে থাকে । ফলে সেখান থেকে বছরভর প্রচুর মাছ ওঠে । আর সেই কারনেই ওই ভেড়ির দিকে শ্যেন নজর এলাকার প্রভাবশালীদের একাংশের ।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,বেশ কিছুদিন আগে ভেড়ির ওই অংশ দখল করে মাছ ধরার মতলব করেছিল এলাকার বহু প্রভাবশালী মানুষ । এনিয়ে একাধিকবার অশান্তিও হয়েছে । ঘটেছে সংঘর্ষের ঘটনাও । বিষয়টি রাজ্যের রাজ্যপালের কাছ পর্যন্ত গড়ায় । শেষে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে ঝামেলার সাময়িক নিষ্পত্তি হয় । এলাকার ৫০০ মাছ চাষির পরিবারকে ওই এলাকায় মাছ চাষ করার অধিকার দিয়ে চিঠি দেন এসডিও । পাশাপাশি তাঁরা যাতে সুশৃঙ্খল ভাবে মাছ ধরতে পারেন তার জন্যে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে দেওয়া হয় ।
ফুলহার নদীর ভেড়িতে মাছ ধরার অধিকারপ্রাপ্ত মৎস্যজীবিদের অভিযোগ,রাজ্যপাল, স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে, এমনকি ১৪৪ ধারা লঙ্ঘন করে ভেড়ির দখল নিয়ে নিয়েছে সশস্ত্র তৃণমূল কর্মীরা । তৃণমূলের লোকজনের ভয়ে তাঁরা ভেড়ি দিয়ে ঘেঁষতেই পারছেন না । এনিয়ে পুলিশ প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও সুরহা হচ্ছে না বলে তাঁদের অভিযোগ । এদিকে নিজেদের তৃণমূল কর্মী বলে দবি করা ওই সমস্ত লোকজন বুক ফুলিয়ে ভেড়ি দখল করার কথা স্বীকার করছেন ।
এদিকে এই ঘটনায় শাসকদলের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব । বিজেপির মালদহ জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন, ‘তৃণমূল গৃহযুদ্ধের মত পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে । কারন মৎস্যজীবিদের মধ্যে অনেক তৃণমূল সমর্থকও আছেন । তৃণমূল ক্ষমতার অপব্যাহার করে সম্পুর্ন বেআইনিভাবে এই কাজ করছে ।’ অন্যদিকে এই ঘটনার কথা স্বীকার করে নিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি হজরত আলী । তবে তাঁর দাবি, ‘একদল মানুষ তৃণমূলের নাম ভাঁড়িয়ে দলের বদনাম করছে ।’।