এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,০৪ ডিসেম্বর : মালদার রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রাক্তন প্রধান লাভলি খাতুনের পর পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনা মহকুমার হাটকালনা পঞ্চায়েতের তৃণমূলের প্রধান শ্রাবন্তী মণ্ডলের গায়ে লেগেছে বাংলাদেশি তকমা । তার ও তার স্বামী তৃণমূল নেতা স্বামী বনমালী মন্ডলের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি ৷ এনিয়ে দিন কয়েক আগে শ্রাবন্তী মণ্ডলের পঞ্চায়েত সদস্যপদ খারিজ করে নথিপত্র যাচাই করার দাবি তুলেছেন বিজেপির জেলা সভানেত্রী স্মৃতিকণা বসু । এবারে শ্রাবন্তী মণ্ডলদের ধর্ম পরিচয় নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্য বিজেপির নেত্রী লকেট চ্যাটার্জি । তিনি সন্দেহ প্রকাশ করেছেন শ্রাবন্তী মণ্ডল ও তার স্বামী বনমালী মন্ডল স্থানীয় এক দম্পতিকে বাবা-মা সাজিয়ে শুধু নাম বদল নয়,ধর্ম পরিচয়ও বদল করে ফেলেছেন । এনিয়ে লকেট চ্যাটার্জি ফেসবুকে লিখেছেন,“হাটকালনার তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান শ্রাবন্তী মণ্ডল বাংলাদেশি! আসল নাম সত্যিই শ্রাবন্তী মণ্ডল নাকি এপারে এসে হিন্দু হয়েছে? উঠছে প্রশ্ন?” পাশাপাশি তিনি একটি টিভি চ্যানেলের প্রতিবেদনের ক্লিপও শেয়ার করেছেন ।
বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলা সভানেত্রী স্মৃতিকণা বসুর অভিযোগ,শ্রাবন্তী মণ্ডল ও তার তৃণমূল নেতা স্বামী বনমালী মন্ডল সম্ভবত ২০২০ সালে বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। তারপর কালনার মুক্তারপুর গ্রামে স্বামী বনমালী মণ্ডলের সঙ্গে বসবাস শুরু করেন। প্রতিবেশী সচিন ব্যাপারীকে বাবা সাজিয়ে নাম তুলে নেন ভোটার তালিকায়। এমনকী তাঁর জন্মের শংসাপত্র থেকে তফসিলি জাতি( SC) শংসাপত্র, সবই ভুয়ো ! সেই জাতিগত শংসাপত্র তৈরি করে ভোটার কার্ডে নামও তুলে ফেলেন । তিনি আরও অভিযোগ করেন, শুধু তাইই নয়, সোহাগী মন্ডল, সুমন মন্ডল, জয় মন্ডল ও শ্যামল মন্ডল নামের এই চারজনের জন্য এনুমারেশন ফর্ম পর্যন্ত তোলেন পঞ্চায়েত প্রধান ও তার স্বামী ।’ যারা সকলেই বাংলাদেশী বলেও তিনি দাবি করেন । আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি নেতা ধনঞ্জয় হালদার। তার অভিযোগ,’ভুয়ো তথ্য দিয়ে তিনি প্রধান হয়েছেন। এখনও এনুমারেশন ফর্মও তিনি জমা করতে পারেননি। কারন তাদের আসল নথিপত্রই নেই ।’
প্রসঙ্গত,কালনার মুক্তারপুর গ্রামের বুথে বিগত নির্বাচনে শ্রাবন্তী মণ্ডলকে টিকিট দেয় তৃণমূল । জয়ী হওয়ার পর দল তাকে পঞ্চায়েত প্রধান করে । কিন্তু বিজেপির অভিযোগ যে ওই দম্পতি আদপে বাংলাদেশি নাগরিক । এহেন এক মহিলাকে শাসকদল পঞ্চায়েতে টিকিট দেওয়ায় প্রশ্ন তুলেছেন তারা । যদিও কালনার তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন যে শ্রাবন্তী মণ্ডল কালনারই মেয়ে এবং কালনাতেই পড়াশুনো করেছেন । ওর বাবা-মা আছে। তার ভিত্তিতেই ওর শংসাপত্র হয়েছে । অন্যদিকে কালনার বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গৌর মণ্ডলের পালটা দাবি, ‘যাঁকে বাবা-মা সাজিয়ে ভোটার লিস্টে নাম তুলেছে তাঁরা আসল বাবা-মা নয় । তফসিলি জাতি শংসাপত্র তুলেছে। সে বিষয়ে প্রমাণ দিক।’ যদিও বিষয়টি এখন প্রশাসনের তদন্তাধীন ।।

