এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ নভেম্বর : আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি(এআই) ব্যবহার করে বিজেপির যুবনেতা তরুনজ্যোতি তিওয়ারি,বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ ও সন্দেশখালির নেত্রী রেখা পাত্রের আপত্তিকর ব্লার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার ঘটনায় এবার তৃণমূলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে দায়ের হল এফআইআর । কলকাতার আনন্দপুর থানার এফআইআরটি দায়ের করেছেন রেখা পাত্র । দেবাংশুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কেয়া ঘোষ এক্স-এ লিখেছেন,”আনন্দপুর থানার দ্বিতীয় কর্মকর্তা, ক্ষীণ কারণ দেখিয়ে, দেবাংশু ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে অস্বীকৃতি জানান, যিনি সন্দেশখালির বিক্ষোভকারী শ্রীমতি রেখা পাত্র, আমার ভাই এবং দলের সহকর্মী অ্যাডভোকেট তরুনজ্যোতি তিওয়ারি এবং আমার এআই ছবি শেয়ারকারীদের প্রকাশ্যে সমর্থন জানিয়েছিলেন। রেখাদি একজন এসসি মহিলা এবং তিনি নিজেই অভিযোগ জানাতে এসেছিলেন। আমাদের প্রায় ২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়েছিল কিন্তু অবশেষে তিনি নতি স্বীকার করেন। মামলাটি বরানগর থানার মামলার সাথে যুক্ত করা হয়েছে। যারা এআই ছবি শেয়ার করেছেন বা যারা তাদের প্রকাশ্যে সমর্থন করেছেন; আইনের আওতায় কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না।’ তিনি তরুনজ্যোতি তিওয়ারি ও পুলিশ আধিকারিকের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের ভিডিও ফুটেজটিও শেয়ার করেছেন ।
প্রসঙ্গত,বিজেপির তিন নেতানেত্রীর আপত্তিকর ছবিটি প্রথম তৃণমূল কর্মী ফেসবুক ব্যবহারকারী শ্রীকৃষ্ণ পালের মাধ্যমে ছড়ায় । এরপর তৃণমূলের একাধিক “ডিজিটাল যোদ্ধা” ও বীরভূমের এক সিপিএম নেতার ছেলে ছবিটি ভাইরাল করে দেয়। এরপর রাজ্য বিজেপির যুবমোর্চার সহ-সভাপতি ও কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুনজ্যোতি তিওয়ারি শ্রীকৃষ্ণ পালসহ তৃণমূলের কয়েকজন “ডিজিটাল যোদ্ধা”র বিরুদ্ধে সাইবার সেলে এফ আই আর-এর পাশাপাশি ৫ কোটি টাকার মানহানীর মামলা করেন ।
এদিকে দেবাংশু ভট্টাচার্য শ্রীকৃষ্ণ পালের পাশে দাঁড়ানো এবং তার যাবতীয় আইনি খরচ দল বহন করবেন বলে ঘোষণা করলে তরুনজ্যোতি তাকে অন্যতম মূল অভিযুক্ত হিসাবে আখ্যা দিয়ে তার বিরুদ্ধে এফ আই আর করার কথা ঘোষণা করেছিলেন । তিনি দেবাংশুর এক্স পোস্টটির স্ক্রীন শর্ট শেয়ার করে লেখেন,”দেবাংশু, ধন্যবাদ—তোমার পোস্টে পরিষ্কার জানিয়ে দিলে এই নোংরামির পিছনে কারা আছে। কিন্তু একটা কথা ভালো করে কানে তুলো—তুমি ভুল জায়গায় হাত দিয়েছো।তুমি কন্টেন্ট ক্রিয়েটার, তোমার কাজ নাচ-গান- লাফালাফি করে ভিডিও বানানো।।এমন বিষয়ে মাথা ঘামালে ভবিষ্যতে নিজেরই বিপদ বাড়বে।”
এরপর তিনি লিখেছেন,”এবার শুনে রাখো—আইনি পথে পাঁচ ধাপের ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। প্রথম ধাপ—থানায় অভিযোগ ; দ্বিতীয় ধাপ—বিভিন্ন কমিশনে নোটিস ; তৃতীয় ধাপ—মানহানির নোটিশ ; চতুর্থ ধাপ—National Commission for Women নোটিশ পাঠিয়েছে এবংপঞ্চম ধাপ—আজ বরাহনগর থানায় FIR রেজিস্টার্ড । অভিযোগ নয়—সরাসরি কেস শুরু হয়েছে।”
তরুনজ্যোতি সব শেষে লেখেন,”এটা শুধু একটা ঘটনা নয়—আমার অধ্যায়ের শুরু। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। রেখা পাত্র একজন SC মহিলা, তাই আদালতে বিষয়টা আরও কঠোরভাবে দেখা হবে।এটা ভারতবর্ষ, এখানে দেশের আইন চলে—তোমার কালীঘাটের আইন নয় যা তোমরা কালীঘাটে যা চালাও, সেটা কালীঘাটেই মানাবে। ভারতের আইনের সামনে তোমাদের রাজনৈতিক দাদাগিরি একেবারেই চলবে না।এবার কেউ ছাড়া পাবে না— কোর্ট-কাচারিতে দৌড়াতে দৌড়াতে জীবন কেটে যাবে। তৃণমূলের বড় বড় নেতা বাঁচেনি—তুমি কী জিনিস? আমি গান-বাজনা করতে করতে বা ভিডিও বানাতে বানাতে রাজনীতিতে আসিনি। আর তোমাদের মতো কনটেন্ট ক্রিয়েটার তো নইই। এর আগে তৃণমূলের বড় বড় বিধায়করা মামলায় বাঁচেনি—তুমি তো নেহাতই ফুটেজ-খোর।
তোমাদের সরকারের আইনজীবীরা কোর্টে যে দাবি রেখেছিল,সেগুলো সব আমাদের কাছে আছে।এক একটা জায়গায় সেগুলো তুলে ধরা হবে।বেল হয়তো পেয়ে যাবে,কিন্তু মামলা চলবে।নামটা মনে রেখো —Tarunjyoti Tewari.তোমার ডিজিটাল যোদ্ধাদের দেশ ভ্রমণের প্রস্তুতি নিতে বলো যারা মহিলাদের সম্মানহানির পাশে দাঁড়ায়,তাদেরও আইনি প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে।এটা রাজনৈতিক লড়াই নয়—নোংরামির জবাব আইন দেবে। তুমি আজ যা লিখেছো তা তোমার দলের চরিত্রকেই প্রমাণ করেছে।কিন্তু এবার আর কিছুই চাপা থাকবে না—এবার সবকিছুই আইনি পথে যাবে।তুমি খেলা হওয়ার কথা বলতে না? এবার খেলা হবে।”

