এইদিন ওয়েবডেস্ক,পূর্ব মেদিনীপুর,২৭ নভেম্বর : বিভিন্ন স্তরের বিজেপি নেতাদের তৃণমূলের যোগ দেওয়ার জন্য প্রলোভন দেখানো হচ্ছে আই প্যাকের মাধ্যমে । কিন্তু যোগ দিতে অস্বীকার করায় প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে শাসকদল – এমনই অভিযোগ তুললেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি আরও অভিযোগ করেছেন যে নন্দীগ্রামের এক বিজেপি নেতা তৃণমূলের যোগ দিতে অস্বীকার করায় ভিলেজ পুলিশে কর্মরত তার ছেলের চাকরি পুলিশ সুপারকে দিয়ে কেড়ে নিয়েছে আইপ্যাক । শুধু তাই নয়, হিন্দু হওয়ার অপরাধে ১৭ জন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে বহুদূর থানায় বদলি করা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শুভেন্দু অধিকারী আইপ্যাককে “চিটিংবাজ সংস্থা” এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যকে “চটিচাটা” বলে অবিহিত করেছেন ।
আজ বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের হরিপুর বিজেপি কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন,”কয়েক মাস ধরে চিটিংবাজ সংস্থা আইপ্যাক নন্দীগ্রামের বিভিন্ন নেতাদেরকে প্রলোভন দেখাচ্ছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য । নন্দীগ্রাম দুই অঞ্চলের কনভেনার দিলীপ পালের কাছে আইপ্যাক গিয়ে তৃণমূলের যোগ দেওয়ার জন্য প্রলোভন দেখিয়েছিল। কিন্তু আত্ম সম্মানবোধ সম্পন্ন এবং শিক্ষিত লোকেরা তৃণমূল করতে চাইছেন না। দিলীপ পাল আগে সিপিএম এবং ২০১৮-১৯ সাল থেকে প্রত্যক্ষভাবে বিজেপির সঙ্গে যুক্ত । তার নেতৃত্বে এলাকায় বিজেপির সংগঠন শক্তিশালী হয়। কিন্তু তাকে বলা হয় যে বিভিন্ন সুবিধা পাইয়ে দেবে তৃণমূলের যোগ দিলে । তিনি দীর্ঘদিন ধরে আদর্শগতভাবে রাজনীতি করে এসেছেন । ভাই ওদের প্রস্তাবে রাজি হননি ।”
তিনি বলেন,”এরপরে প্রতিহিংসার রাজনীতি করে তার পুত্র দীপাঞ্জন পাল, আমতাবাদে ভিলেজ পুলিশের কাজ করতো, নন্দীগ্রাম দু নম্বর ব্লকের রেয়াপাড়া ফাঁড়ির ইনচার্জ তাকে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠিয়ে কর্মচ্যুত করে দেন ।” শুভেন্দু বলেন,
“তারপর আমাদের দলের নেতৃত্বরা দিলীপ পালের বাড়িতে খোঁজ নিতে গেলে তিনি বলেন, আমি তৃণমূলে যোগ দিতে রাজি হইনি বলে এসপি সৌম্যদ্বীপ ভট্টাচার্যকে দিয়ে এই কাজটা করিয়েছে আই প্যাক।”
তিনি বলেন,”এমনিতে সিভিক পুলিশ, ভিলেজ পুলিশদের চাকরির কোন নিশ্চয়তা নেই । ৮-১০ হাজার টাকা বেতন দেওয়া হয় । তারপরও এই ধরনের প্রতিহিংসার রাজনীতি এখানে চটিচটা এসপি সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যকে দিয়ে এই নোংরা কাজটা করিয়েছে আই প্যাক । আমি আপনাদের সামনে এই প্রতিহিংসার রাজনীতির সামনে আনলাম। কিন্তু ভাববেন না যে এখানেই শেষ । ইতিমধ্যেই দীপাঞ্জন পাল কলকাতা হাইকোর্টে গেছেন । কলকাতা হাইকোর্ট মামলা গ্রহণ করেছে । আমি বিশ্বাস করি যে যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিকে হারিয়েছিল, সেইভাবে মামলা জিতে গোটা রাজ্যের মধ্যে নজির সৃষ্টি করবে নন্দীগ্রাম ।” তিনি জানান,যতক্ষণ না পর্যন্ত মামলা জিতছে,ততক্ষণ পর্যন্ত দীপাঞ্জন যে অর্থ পেতো তার ব্যবস্থা করবেন তিনি ।
মমতা ব্যানার্জির প্রতিহিংসার রাজনীতির আর একটা দৃষ্টান্ত তুলে ধরে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “হিন্দু হওয়ার অপরাধে নন্দীগ্রাম এলাকার ১৭ জন সিভিক ভলেন্টিয়ারকে অন্য জায়গায় ট্রান্সফার করে দেওয়া হয়েছে৷” তিনি হুশিয়ারি দিয়ে বলেছেন,”যদি এই ট্রান্সফারের নির্দেশ প্রত্যাহার করা না হয় তাহলে গেরুয়া ধ্বজ নিয়ে থানা এবং পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করা হবে।”

