এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২২ নভেম্বর : বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য পুলিশকে কখনো “চটিচাটা”, আবার কখনো “মমতা পুলিশ” বলে কটাক্ষ করে থাকেন । শুভেন্দু অধিকারীর এটা যে নিছক কথার কথা নয়,সেটার প্রমান পাওয়া গেল পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্ব রাউতের একটা মন্তব্যে ! ২০২৬ সালে মমতা ব্যানার্জিকে ফের মুখ্যমন্ত্রী করতে তিনি রীতিমতো “লড়াই” ঘোষণা করে বলেছেন,”মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে মুখ্যমন্ত্রী করার পরে আমাদের লড়াই থামবে”৷ যেকারণে রাজ্য পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠছে ।
আজ পশ্চিমবঙ্গ মহিলা ওয়েলফেয়ার কমিটির উদ্যোগে মহিলা পুলিশ কর্মীদের দ্বিতীয় রাজ্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় দীঘা রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের মাঠে। রাজ্যের মন্ত্রী মানস রঞ্জন ভূঁইয়া,বিপ্লব রায় চৌধুরী, বীরবাহা হাঁসদা,শিউলি সাহা, জ্যোৎস্না মান্ডি,শ্রীকান্ত মাহাতো ছাড়াও অনেক তৃণমূলের বিধায়ক ও নেতারা উপস্থিত ছিলেন ৷ উপস্থিত ছিলেন পুলিশের পদাধিকারীরাও । নিজের বক্তব্য রাখতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির কনভেনার বিজিতাশ্ব রাউত বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুলিশ কর্মীদের জন্য নানান ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। আমাদের বিভিন্ন দাবি দেওয়া রয়েছে ভবিষ্যতে ও দাবিতাবা থাকবে তবে ২০২৬ সালে মে মাসে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে পুনরায় প্রতিষ্ঠা করতে পারলে আমাদের এই লড়াই থামবে।’
এদিকে পুলিশের একজন পদাধিকারী হয়েও কিভাবে পার্টির নেতার মত তিনি প্রকাশ্য মঞ্চে এই প্রকার বক্তব্য রাখতে পারেন ? এই প্রশ্ন উঠছে । প্রশ্ন উঠছে রাজ্য পুলিশের নিরপেক্ষতার নিয়েও । বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ওই পুলিশ অধিকারীকের এহেন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, ‘যখন প্রশাসনিক প্রধান শাসনযন্ত্রকে তার ব্যক্তিগত বাড়ির ভৃত্য বা পরিচারকের মতো ব্যবহার করেন, তখন তার অবশ্যম্ভাবী ফল যা হওয়ার, তাই হচ্ছে। রাজ্যের আইন কাঠামো ভেঙে পড়েছে, এবং জনগণের অধিকার পদদলিত হচ্ছে। আইনের শাসন এখন অতীত: সংবিধানে বর্ণিত আইনের শাসন রাজ্যে আজ কার্যত বিলুপ্ত।রাজ্য জুড়ে এখন কেবল দুর্নীতির নিরঙ্কুশ শাসন। আর এই শাসন পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণরূপে শাসকের নিজস্ব আইন দ্বারা—যেখানে ন্যায়, নীতি বা বিধির কোনো স্থান নেই।
নিরাপত্তা ও পক্ষপাতিত্বের প্রশ্ন
সম্প্রতি মহিলা পুলিশি সম্মেলন থেকে যে সকল ঘোষণা বা আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে জনমনে গভীর সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কি নিরাপত্তার বিন্দুমাত্রও নিরপেক্ষতা বা পক্ষপাতিত্বহীনতা আশা করতে পারছেন? এমন এক ব্যবস্থার অধীনে, বাংলার সাধারণ মানুষ কীভাবে নিজেদের সুরক্ষিত ও সম্মানিত বোধ করবে?”

