এইদিন ওয়েবডেস্ক, আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান), ১৩ সেপ্টেম্বর : আউশগ্রামের যুব তৃণমূল নেতা চঞ্চল বক্সি খুনের ঘটনায় দেবশালা পঞ্চায়েতের টেণ্ডার ও এলাকার কাজকর্মের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিয়েই সংঘাতই মূল কারন। খুব পরিকল্পনামাফিক সুপারিকিলার দিয়ে খুন করানো হয়েছে চঞ্চলকে। দলেরই তিন নেতাকর্মী গ্রেফতারের পর স্পষ্ট তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে। রবিবার গ্রেফতারের পর ধৃত দেবশালা পঞ্চায়েতের সদস্য আসানুর মণ্ডল, মনির হোসেন মোল্লা এবং দেবশালা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতির ছেলে বিশ্বরূপ মণ্ডলকে সোমবার আদালতে পাঠায় পুলিশ। ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানিয়েছিল পুলিশ। বিচারক ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেছেন। ধৃতদের জেরা করে এবার পুলিশ জানার চেষ্টা করছে এই খুনে আর কারা জড়িত। যদিও পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ সুপার কামনাশীস সেন বলেন,” এখন তদন্ত চলছে। তদন্তের পর বিষয়টি জানা যাবে।”
গত মঙ্গলবার আউশগ্রামের গেরাই গ্রামে এক কর্মীর বাড়িতে অনুষ্ঠান সেরে বিকেল তিনটে নাগাদ বাইকে চড়ে বাবাকে নিয়ে ফেরার সময় গুলি চালিয়ে খুন করা হয় দেবশালা অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন যুব সভাপতি চঞ্চল বক্সিকে।এই ঘটনায় পুলিশের হাতে ধরা পড়ে দলেরই তিন নেতাকর্মী।
জানা গিয়েছে চঞ্চল বক্সি খুনের ঘটনার পর থেকে নিহতের পরিবারের সন্দেহ ছিল আসানুরদের প্রতিই ।পুলিশকে তারা জানিয়েছিলেন আগেই।পুলিশ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পায়। তারপর গ্রেফতার করা হয় তাদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ঘটনার দিন গেরাই গ্রামে আবদুল লালন নামে তৃণমূল নেতার পারিবারিক অনুষ্ঠানে আসানুর ও বিশ্বরূপের নিমন্ত্রণ থাকলেও তারা সেদিন যায়নি। গিয়েছিল মনির হোসেন মোল্লা। কিন্তু দুপুরের খাওয়াদাওয়া না করেই বেড়িয়ে চলে আসেন মনির। কেন সে অন্যান্যদের আগেই না খেয়ে বেড়িয়ে এসেছিল তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।তাহলে কি সেদিন চঞ্চল বক্সির গতিবিধি সম্পর্কে খুনিদের খবরাখবর দিতেই গেরাই গিয়েছিল মনির হোসেন মোল্লা? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে মনির হোসেনকে জেরা করবে পুলিশ।
দলীয় সূত্রে জানা যায় দেবশালা পঞ্চায়েতের টেণ্ডার সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আগে একাধিকবার আসানুর, মনির হোসেনদের সঙ্গে চঞ্চল বক্সি ও তার বাবার মতবিরোধ হয়েছিল।তখন দলের দুই পক্ষের মধ্যে পঞ্চায়েত অফিসের ভিতরেই সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে।যদিও দলের উচ্চ নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে বিষয়টি চাপা পড়ে যায়।কিন্তু তুঁষের আগুন জিইয়ে ছিল ভিতরে ভিতরে। ইদানিং চঞ্চল বক্সি অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি হওয়ার সম্ভাবনার কথা জানতে পারে তার বিপক্ষ গোষ্ঠী। তার ফলে এলাকায় কর্তৃত্ব হাতছাড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চঞ্চলকে সরিয়ে দিতেই তাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় বলে এখনও পর্যন্ত জানতে পেরেছে পুলিশ।।