এইদিন ওয়েবডেস্ক,বরিশাল,২১ নভেম্বর : বাংলাদেশে “লাভ জিহাদ” কার্যত মহামারীর আকার নিয়েছে । শুধুমাত্র বরিশাল জেলাতেই মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে বেশ কয়েকটি হিন্দু মেয়ে “লাভ জিহাদ”-এ ফেঁসে ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম প্রেমিককে নিকাহ করেছে৷ তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার শান্ত এলাকার এক ধনী পরিবারের মেয়ে পূজা দাস থেকে “মারিয়া আক্তার” এবং পটুয়াখালীর সজনী রানী শীল থেকে “আয়েশা সিদ্দিকা”র ঘটনা ।
প্রথম ঘটনায় জানা গেছে, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার মধ্য শিহিপাশা এলাকার নারায়ণ চন্দ্র দাসের কন্যা এবং বরিশালের সুপরিচিত মিষ্টি ব্যবসায়ী কার্তিক দাসের নাতনি হল পূজা দাস । গত ৯ নভেম্বর কলেজে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বের হয়ে সে নিখোঁজ হয়ে যায় । নিখোঁজের পরদিন পূজার দাদা রিমন দাস থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। কিন্তু পুলিশ প্রথম দিকে যথারীতি হাত গুটিয়ে বসে থাকে । কিন্তু নিখোঁজের ষষ্ঠ দিনের মাথায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হঠাৎ ছড়িয়ে পড়ে পূজা দাসের ধর্মান্তর হওয়ার কিছু কাগজপত্র। কাগজপত্রে দেখা যায় তার নাম পরিবর্তন করে ‘মারিয়া আক্তার’ করা হয়েছে । তার আগে পূজার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একটি রহস্যময় বার্তা আসে । যাতে লেখা ছিল : “আমাকে খুঁইজেন না। আমি আমার বয়ফ্রেন্ডের সঙ্গে আছি এবং ভালোই আছি।” বার্তা আসার পরপরই নম্বরটি বন্ধ হয়ে যায় । যেকারণে পুলিশও ধন্দ্বে পরে যায় যে বার্তাটি সত্যিই পূজার পাঠানো কিনা।
পুলিশ মনে করছে, ঘটনাটি নিছক অপহরণও হতে পারে, আবার পূজার স্বেচ্ছায় গা–ঢাকা দেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আগৈলঝাড়া থানার ওসি অলিউল ইসলাম জানান, পরিবার কোনো সহযোগিতা করছে না, আর নম্বর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রযুক্তিগত অনুসন্ধান ব্যাহত হলেও তারা নিজেদের পদ্ধতিতে সামনে এগোচ্ছেন এবং আশা করছেন শিগগিরই পূজাকে খুঁজে পাওয়া যাবে। যদিও পূজা দাসের ধর্মান্তর হওয়ার কাগজপত্র সোশ্যাল মিডিয়ায় সামনে আসার প্রসঙ্গে তিনি জানান,কাগজপত্র যাচাই না করা পর্যন্ত তারা এটিকে নিশ্চিত তথ্য হিসেবে ধরছেন না তারা । এদিকে পূজার পরিবারও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি৷
এদিকে এই ঘটনার জের মিটতে না মিটতেই বরিশালের পটুয়াখালীর গলাচিপা থানার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের বিপুল শীলের মেয়ে সজনী রানী শীলের ধর্মান্তরিত ও মুসলিম প্রেমিককে নিকাহ করার ঘটনায় চরম উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে । জানা যায়, এলাকার যুবক ইমরান খান–এর সঙ্গে ফেসবুকের মাধ্যমে সজনীর পরিচয় হয়। দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন যোগাযোগের মাধ্যমে ইমরান তাকে বিভিন্ন ইসলামিক শিক্ষা, ভিডিও ও ধর্মীয় ব্যাখ্যা দেখাতে থাকে। পাশাপাশি সনাতন ধর্ম ও সংস্কার সম্পর্কে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য উপস্থাপন করে তার মগজধোলাই করে ধীরে ধীরে তাকে ইসলামের প্রতি আগ্রহী করে তোলে । ক্রমে পরিবার থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে সজনী রানী ।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তারা বহুবার সজনীকে সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু সে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় ও ধর্মান্তরিত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। পরে তারা জানতে পারেন যে সজনী শীল এখন আয়েশা সিদ্দিকা নামে পরিচিত হয়েছে ।এই বিষয়ে প্রশাসনের আনুষ্ঠানিক মন্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি।
এই দুই ঘটনা ছাড়াও বরিশালের আরও বেশ কয়েকজন হিন্দু তরুনীর লাভ জিহাদের ফাঁদে পরে ধর্মান্তরিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে । স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু তরুণীদের ধর্মান্তরের এই ধারাবাহিক ঘটনাগুলো রোধে জরুরি নজরদারি ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি তুলছেন তারা ।।
Author : Eidin.

