শ্যামসুন্দর ঘোষ,পূর্ব বর্ধমান,২১ নভেম্বর : এরাজ্যে ২০২৬ সালের বিধানসভার ভোটের লড়াই অনেকাংশেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বনাম বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে । শাসকদলের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি থেকে শুরু করে তোষামোদি রাজনীতির অভিযোগে নাগাড়ে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন শুভেন্দু । নিজেকে “হিন্দুত্ববাদের ব্রান্ড” হিসাবে তুলে ধরে রাজ্যের সমস্ত হিন্দুদের একজোট করার আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি । আর জেলায় জেলায় শুভেন্দুর সভা বা মিছিলে ভিড় শাসকদলের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছে । তাই শুভেন্দুকে আটকাতে মরিয়া শাসকদল । যেকারণে কোনো জেলাতেই শুভেন্দুর সভা বা মিছিলে রাজ্য পুলিশ সহজে অনুমতি দিচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলছে বিজেপি । সভা বা মিছিল করতে নিতে হচ্ছে কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতি । খোদ শুভেন্দুর কথায়, চলতি বছরে ৯৮ বারের অধিক তাকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হয়েছে সভা বা মিছিল করার জন্য । ফের একবার কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিক্রমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় সভা করতে আসছেন বিরোধী দলনেতা ।
আজ শুক্রবার বিজেপি কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার ডাকে মেমারিতে “পরিবর্তন সংকল্প সভা” করবেন শুভেন্দু অধিকারী । বিকেল ৩:৩০ নাগাদ মেমারির উদয় সংঘ খেলার মাঠে হবে এই সভা । সভার উদ্দেশ্য “পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সীমাহীন চুরি,খুন, ধর্ষণ,নারী নির্যাতন এবং এসআইআর নিয়ে মিথ্যাচারের প্রতিবাদ” জানানো । ইতিমধ্যেই সভা সফল করতে আসরে নেমে পড়েছে বিজেপির জেলা নেতৃত্ব ।
উল্লেখ্য,পূর্ব বর্ধমানের মেমারিতে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় নিরাপত্তার কারন দেখিয়ে অনুমতি দেয়নি রাজ্য পুলিশ । এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা । বিচারপতি কৃষ্ণা রাও-এর এজলাসে এই মামলার শুনানি হয় । যেখানে রাজ্য সরকারের কোনো প্রকার আপত্তি ধোপে টেকেনি । রাজ্যের আপত্তি খারিজ করে মেমারিতে শুভেন্দুর সভার অনুমতি দেয় হাইকোর্ট ।
কয়েকদিন আগেই বর্ধমানের বড়নীলপুর থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত শুভেন্দু অধিকারীর মিছিলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল রাজ্য পুলিশ । প্রথমে ৫ নভেম্বর ওই মিছিল করতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু, পুলিশ অনুমতি দেয়নি । এরপর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় গেরুয়া শিবির। সেখানে রাজ্য সরকার যুক্তি দিয়েছিল, ৫ নভেম্বর গুরুনানকের জন্মজয়ন্তী। ওইদিন ওই এলাকায় বহু মানুষ জড়ো হন। তাই মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয় । এরপর বিজেপি মিছিলের দিন পরিবর্তন করে ৯ নভেম্বর করে । শেষে আদালতের অনুমতিক্রমে ওইদিনই বড়নীলপুর থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত বিশাল মিছিল করেন শুভেন্দু ।
তবে আজকে মেমারিতে শুভেন্দুর সভায় কিছু শর্ত আরোপ করেছে হাইকোর্ট । হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, দুপুর ২টো থেকে সন্ধে ৭টা পর্যন্ত সভা করা যাবে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতার সভাস্থল পর্যন্ত পৌঁছানোর রাস্তায় নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে পুলিশ-প্রশাসনকে।সর্বোচ্চ ৫ হাজার সমর্থক নিয়ে সভা করতে পারবেন শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সভার সময় দমকলকে ২টি ইঞ্জিনের ব্যবস্থা রাখতে হবে ।।
This Article written by Journalist Shyamsundar Ghosh. He is working as a repoter approx two decades for various online news platform.

