এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,১৭ নভেম্বর : কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নামে বাংলাদেশে ইসলামি জিহাদি অভ্যুত্থানের সময় আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে৷ যাতে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল । তারপর মহম্মদ ইউনূস অনৈতিকভাবে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা রজু করে । সেই মামলার শুনানি আজ সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার পর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে হচ্ছে৷ ইতিমধ্যে হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগে কারাদণ্ড এবং দ্বিতীয় অভিযোগে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করা হয়েছে৷
বিচারপতি মহম্মদ গোলাম মর্তুজা মজুমদার রায় বলেছেন, এই রায় ৪৫৩ পৃষ্ঠার এবং ছয় ভাগে রায় ঘোষণা হবে। ট্রাইব্যুনালের অন্য ২ সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মহম্মদ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এর এজলাস থেকে রায় ঘোষণার কার্যক্রম সরাসরি সম্প্রচার করছে বাংলাদেশ টেলিভিশন। মামলায় শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও প্রাক্তন আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুনও আসামি। তাদের মধ্যে মামুন দায় স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন। এদিকে হাসিনাকে ফাঁসির সাজা ঘোষণা করতেই বাংলাদেশে গৃহযুদ্ধের সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে । ইতিমধ্যে তার ইঙ্গিতও মিলতে শুরু করেছে । হাসিনার বাবা শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসস্থান ভাঙতে আজ বুলডোজার নিয়ে গিয়েছিল জিহাদি ছাত্ররা । তারা ‘মুজিব বাদের আস্তানা এই বাংলায় হবে না’, ‘৩২ নম্বর বাড়িটি ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ প্রভৃতি শ্লোগান দেয় । জিহাদিদের ঠেকাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ লাঠিপেটা করে। পালটা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে জিহাদিরা । হঠাৎ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পুরো এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রের চেহেরা নিয়েছে ।
তার আগে, রবিবার রাতে কিশোরগঞ্জের শহরের স্টেশন রোড এলাকায় অবস্থিত গ্রামীণ ব্যাংকের যশোদল শাখায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । রাত ২ টার দিকে ব্যাংকের নিচ তলায় আগুন দেওয়া হয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মুখে মাস্ক পড়া এক ব্যক্তি ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে অগ্নিসংযোগ করছে। তবে সাথে সাথে আশপাশের লোকজন আগুন নিভিয়ে ফেলে। আগুনে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।
এদিকে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলায় শ্রীরামদী এলাকায় সড়কে বড় লিচু গাছ ফেলে রাস্তা আটকে দিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ফলে কিশোরগঞ্জ -পাকুন্দিয়া সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।স্থানীয়রা জানান, মোটর সাইকেলে করে কয়েকজন “জয় বাংলা” স্লোগান দিয়ে শ্রীরামদী এলাকায় আসে। তারা সড়কের পাশে থাকা একটি লিচু গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করে ফেলে। এতে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে গাছ অপসারণে কাজ শুরু করে। রাত তিনটায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ -পাকুন্দিয়া সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
পাশাপাশি রবিবার রাতে ঢাকা ও বিভিন্ন জেলায় ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ঢাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী; দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবনমুখী সড়কও বন্ধ রাখা হয়েছে। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে সেন্ট্রাল রোডে পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানের বাড়িতে লক্ষ্য করে হেলমেট পরা এক ব্যক্তি মোট রসাইকেল চড়ে এসে পরপর দুটি ককটেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়-এমন দৃশ্য ধরা পড়ে সিসিটিভিতে। খবর পেয়ে বোম্ব স্কোয়াড ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। বাড়িতে উপদেষ্টা উপস্থিত থাকলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
অন্যদিকে বাংলামোটরে রুপায়ন টাওয়ারে এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মতিঝিলের টিএন্ডটি বাসস্ট্যান্ড, কারওয়ানবাজারে সার্ক ফোয়ারার সামনে, ফার্মগেট রেলক্রসিং, সব জায়গায় একই ধরনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। ফার্মগেটে চলন্ত ট্রেনে ককটেল নিক্ষেপের পর স্থানীয়রা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
মধ্য বাড্ডায় দাঁড়িয়ে থাকা একটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে ডাম্পিংয়ে রাখা দুটি পরিত্যক্ত লেগুনায় অগ্নিসংযোগ করা হয়।
ঢাকার বাইরেও চলেছে এ ধরনের ঘটনা। কিশোরগঞ্জে স্টেশন রোডে গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখার নিচতলায় আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায় এক ব্যক্তি, স্থানীয়রা দ্রুত আগুন নেভায়। পাকুন্দিয়ায় গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করে মোটরসাইকেল আরোহীরা। গাজীপুরের টঙ্গীতে বিআরটি ফ্লাইওভারের ওপর থেকে সড়কে ককটেল নিক্ষেপ করা হয় । ধামরাইয়ের ঢুলিভিটা এলাকায় মোটরসাইকেলে এসে বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে।।

