প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৭ নভেম্বর : দুই রোগীর নাম এক। কিন্তু পদবি আলাদা। তবুও তাদের নাম নিয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপতালে ঘটেযায় বিভ্রাট। সেই বিভ্রাটের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা নমিতা মাঝির জন্য আনা রক্ত দেওয়া হয়ে যায় নমিতা বাগদীকে। এতেই ঘটে যায় মহা বিপত্তি।নমিতা বাগদী আজ শুক্রবার ভোরে বর্ধমান হাসপাতালে নমিতা বাগদী মারা যান ।এই ঘটনা নিয়ে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ এনে মৃতের ছেলে বর্ধমান হাসপাতাল কর্তৃরক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে।
এ বিষয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সুপার তাপস ঘোষ এদিন বলেন, নমিতা বাগদী সাপে কাটা অবস্থায় গত সপ্তাহে ভর্তি হয়ে ছিলেন।তাঁর চিকিৎসা চলছিল। ভুল করে তার শরীরে অন্য গ্রুপের রক্ত দেবার অভিযোগ পেয়েছি। মৃতার দেহের ময়নাতদন্ত হবে।ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে । পাশাপাশি মৃতার পরিবারের দায়ের করা অভিযোগেরও তদন্ত করা হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে,নমিতা বাগদী বাড়ি বীরভূম জেলার বোলপুর থানার রামচন্দ্রপুর গ্রামে। সাপে কামড়ানোর চিকিৎসার জন্য সপ্তাহ খানেক আগে তিনি বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন। তাঁর রক্তের গ্রুপ “বি“ পজিটিভ। আর নমিতা মাঝির বাড়ি ভাতার থানার তুলসীডাঙ্গা গ্রামে। রক্তাল্পতায় ভোগা নমিতা মাঝি গত শনিবার সকালে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ছিলেন। তাঁর রক্তের গ্রুপ “এ’“ পজিটিভ।
নমিতা বাগদীর ছেলে রাহুল জানান ,সাপের কামড়ের চিকিৎসা শুরু হওয়ার পর তাঁর মা ভালই ছিল। নার্সদের ভুলে তার মায়ের প্রাণ চলে গেল। সেদিন ভুল গ্রুপের রক্ত মাকে দেবার পর থেকে মায়ের শরীর খারাপ হতে শুরু করে। মাকে আইসিইউ(ICU) তে রাখা হয়। বৃহস্পতিবার মা ভালভাবেই ডায়ালেসিস নেয়। কিন্তু রাতে হঠাৎ করেই তাঁর মায়ের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ফের আইসিইউ (ICU) তে নিয়ে যেতে হয় । মা মারা যাওয়ার কথা আজ শুক্রবার ভোরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে জানায় ।হাসপাতালের নার্সদের ভুলেই তাঁর মাকে প্রাণ খোয়াতে হল বলে ছেলে রাহুল বাগদী অভিযোগ করেছেন।মেয়ে নমিতার মৃত্যুর জন্য বাবা দুকড়ি বাগদীও একই অভিযোগ করেছেন।
এমন ঘটনা প্রসঙ্গে বর্ধমান হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অপর রোগী নমিতা মাঝির ছেলে সঞ্জিত মাঝি বলেন,হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁদের পরিবারের লোকজনকে দুটি কাগজ দিয়ে ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনতে বলে। নমিতা মাঝির ছেলে সঞ্জিত মাঝি বলেন,“ব্ল্যাড ব্যাঙ্ক থেকে রক্ত আনার পর নার্স সেই রক্ত নমিতা মাঝির বদলে নমিতা বাগদী নামে অন্য রোগীর শরীরে প্রয়োগ করান। এতেই নমিতা বাগদী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন টনক নড়ে নার্সের । তিনি এরপর দ্রুত রক্ত পরিবর্তন করােন। কিন্তু ততক্ষণে অন্য গ্রুপের অনেকটা রক্ত নমিতা বাগদীর শরীরে চলে যায় । তার কারণে নমিতা বাগদী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তিনি প্রাণ হারান ।।

