এইদিন ওয়েবডেস্ক,নদীয়া,০১ নভেম্বর : ইসলামি কট্টপন্থা আর সন্ত্রাসবাদের প্রবল বিরোধী বাংলাদেশী মুক্তমনা লেখক ও ব্লগার মুফতি আবদুল্লা আল মাসুদ প্রাণ বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গে পালিয়ে এসেছিলেন কয়েক বছর আগে৷ আত্মগোপন করে রয়েছেন নদীয়া জেলার কল্যাণী থানা এলাকায় । গয়েশপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের এক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি ভাড়ায় আছেন তিনি । কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাংলাদেশী ব্লগারকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে কল্যাণী থানার গয়েশপুর ফাঁড়ির পুলিশ৷ আর এতে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তার ভক্তরা । কয়েকদিন ধরে তারা সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে তারা তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ।
বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও একইভাবে নিজের দেশের ইসলামি চরমপন্থীদের রোষের মুখে পড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন । ব্লগার মুফতি আবদুল্লা আল মাসুদ পুলিশের হাতে আটক হওয়ার খবরে তিনিও উদ্বেগ প্রকাশ করে ফেসবুকে দিন দুয়েক আগে একটি পোস্ট করেছেন৷ যাতে তিনি লিখেছেন,’যে মুসলমানরা ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান আহরণের পর ইসলাম ত্যাগ করেছে,এবং মানববাদে, মানবাধিকারে, মানবতায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, শুধু তাই নয়, মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করার জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে, ধর্মান্ধ জিহাদিদের ফতোয়ার শিকার হচ্ছে, জীবন বাঁচাতে দেশান্তরী হতে বাধ্য হয়েছে; পায়ের নিচে মাটি নেই, অথচ এই সাহসী মানুষেরা নিরবধি সমাজকে সভ্য করার সংগ্রামে রত, তাঁদের মূল্য বা গুরুত্ব বোঝার ক্ষমতা যাদের নেই, তাদের জন্য আমার বড় করুণা হয়।’ তিনি আরও লিখেছেন,’আবদুল্লাহ আল মাসুদকে শুনেছি এক পুলিশ ফাঁড়িতে আটকে রাখা হয়েছে। আশা করি আবদুল্লাহ আল মাসুদের স্ট্রাগল সম্পর্কে পুলিশ জানবেন এবং তাঁকে সসম্মানে মুক্তি দেবেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গে থেকে যদি অন্ধকারে পড়ে থাকা মুসলমান সমাজের মানুষকে বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতে পারেন, তাহলে লাভ পশ্চিমবঙ্গেরই। কেউ কেউ তো জগতে এমন আছেনই, যাঁরা নিজেদের পুড়িয়ে অন্যকে আলো দিয়ে যান।’
জানা গেছে যে তাকে জেরা করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে । স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়, গয়েশপুরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে এক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি ভাড়া করে রয়েছেন ওই ব্লগার । তবে স্কুল শিক্ষক থাকেন চাকদহে । কিন্তু মাসুদ প্রতিবেশীদের থেকে সর্বদা এড়িয়ে থাকাতেন । এছাড়া,মাঝেমধ্যে বাংলাদেশ থেকে লোকজন আসায় সন্দেহের উদ্রেক হয় স্থানীয়দের । বিষয়টি তারা গয়েশপুর ফাঁড়িতে জানালে পুলিশ তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মাসুদের পাসপোর্টের ভিসার মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। তবে ঠিক কী কারণে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, সে বিষয়ে মুখ খুলছে না পুলিশ।ওই বাংলাদেশি লেখক ও ব্লগারকে ফের স্বদেশে ফেরানো হলে জিহাদি হামলায় প্রাণহানির আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন নেটিজেনরা ।।

