প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,৩১ অক্টোবর : বাংলার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন হবে। তার জন্য রাজ্যের স্কুল শিক্ষকদের এবার সেই সংশোধনী প্রক্রিয়ার সরিক অর্থাৎ বিএলও(BLO) করা হয়েছে।তবে নজিরবিহীন ভাবে পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের পালিশগ্রাম উত্তরপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক এখন হয়ে গিয়েছেন বিএলও। আর তাতেই মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে এই স্কুলের দুই শতাধিক পড়ুয়া ও তাঁদের অভিভাবকদের । ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ যতদিন চলবে ততদিন কি তাহলে স্কুলে শিক্ষকদের পাঠদান থমকে থাকবে?এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক নানা কারণে মঙ্গলকোট নামটা বাংলার মানুষের কাছে খুবই পরিচিত । এহেন মঙ্গলকোটের এক অখ্যাত গ্রাম হল পালিশ গ্রাম। গ্রামটির উত্তর পাড়ায় রয়েছে রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ পরিচালিত অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে পড়ুয়া রয়েছে ২১২ জন।তাদের পাঠ দানের জন্য বিদ্যালয়ে নিযুক্ত রয়েছেন ৫ জন শিক্ষক।তাঁরা বিদ্যালয়ে মিডডে মিলের দেখভালও করেন।বর্তমানে এই পাঁচ শিক্ষকেই ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন কাজের বিএলও (BLO) হিসাবে নিযুক্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। তার কারণে বিদ্যালয় বিদ্যালয়ে পঠন পাঠন সচল রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে ঘোর অনিশ্চয়তা।
এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য,’তিনি গোটা বিষয়টি নিয়ে উচ্চ কর্তৃপক্ষকে সবিস্তার জানিয়েছেন।স্কুল চালানোর স্বার্থে কিছু শিক্ষককে যাতে বিএলও দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়,সেই আর্জি তাঁরা রেখেছেন। তবে এখনো পর্যন্ত কোনও জবাব মেলেনি বলে প্রধান শিক্ষকের দাবি । বিদ্যালয়ের বাকি শিক্ষকদের কথা অনুযায়ী, সব শিক্ষক বিএলও কাজের দায়িত্ব সামলাতে চলে গেলে বিদ্যালয়ের ২১২ জন পড়ুয়াক কে পাঠদান করবে। বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা মিডডে মিল কি করে পাবে।সামনেই বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষা। রয়েছে । পরীক্ষা নেওয়া ,খাতা দেখা থেকে শুরু করে বিদ্যালয়ের সব কিছুই বন্ধ হয়ে যাবে“।
কমিশনের নির্দেশেএ কথা শুনে অভিভাবকদের অনেকেই বিস্মিত হয়েছেন।তারা বলেন,’ভোটার তালিকা সংশোধন কাজের বিএলও করে স্কুলের শিক্ষককে তুলে নেওয়াটা সঠিক কাজ হয়নি। সব শিক্ষককে তুলে নেওয়া হলে বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীদের লেখা পাড়ার কি হবে,সটা ভাবা দরকার ছিল।স্কুল বন্ধ হয়ে থাকল ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎতই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে অভিভাবকরা জানিয়েছেন।
এমন ঘটনা নিয়ে মঙ্গলকোট ব্লকের বিডিও অনামিত্র সোম ক্যামেরার সামনে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।তবে মৌখিক ভাবে তিনি শুধু বলেন,’ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ীই BLO-র দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, এ বিষয়ে আমার কিছু করার নেই।’অন্যদিকে জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’পড়ুয়াদের স্বার্থে আমি বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবো । অনুরোধ রাখবো যাতে পালিশগ্রাম উত্তরপাড়া অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সব শিক্ষককে তুলে না নেওয়া হয়।’।

