এইদিন ওয়েবডেস্ক,মেদিনীপুর,২৯ অক্টোবর : বিটেক পড়ুয়া ছেলে মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন । যেকারনে মা তাকে বাড়ি ফিরিয়ে আনছিলেন । কিন্তু স্টেশন ঢোকার একটু আগে মা ট্রেনের শৌচাগারে যেতেই চলন্ত ট্রেন থেকে নদীতে ঝাঁপ দেয় ওই যুবক ৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় সাড়ে ৭টা নাগাদ এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীর উপর কাঁসাই রেল ব্রীজে । রেলপুলিশ ও জিআরপি তল্লাশি চালানোর সময় আজ বুধবার সকালে প্রায় ৯ টা নাগাদ নদীর জলে সোহম পাত্র নামে ওই যুবকের দেহ ভাসতে দেখে । ছেলের মৃতদেহ দেখে নদীর পাড়ে বসে থাকা মা কান্নায় ভেঙে পড়েন৷
জানা গেছে,বাঁকুড়া শহরের প্রনবানন্দ পল্লির বাসিন্দা দীপক কুমার পাত্র ও মল্লিকা পাত্রের একমাত্র সন্তান সোহম । সোহম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিটেক ইঞ্জিনিয়ারিং করছিলেন । পারিবারিক কোনো বিষয় নিয়ে মানসিক চাপের মধ্যে ছিল ওই যুবক৷ যেকারণে ছেলেকে কলকাতা থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনছিলেন মা ৷
জানা যায়,মঙ্গলবার দুপুরে হাওড়া থেকে শিরোমনি এক্সপ্রেস ট্রেনে চড়ে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন মল্লিকাদেবী । ট্রেনটি তখন মেদিনীপুর স্টেশনে ঢোকার মুখে । সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ মল্লিকাদেবী শৌচাগারে গিয়েছিলেন ৷ ট্রেনটি মেদিনীপুরের কংসাবতী নদীর কাঁসাই রেল ব্রীজ পার হচ্ছিল ।সেই সময় সোহম পাত্র সিট থেকে উঠে গেটের দিকে এগিয়ে যায়৷ কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই গেট থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে দেয় । মা মল্লিকা পাত্র বাথরুম থেকে বের হলে সহযাত্রীরা ছুটে এসে তাকে বিষয়টি জানায় । এই মর্মান্তিক ঘটনার কথা শোনার পর কার্যত কিংকর্তব্যবিমুঢ় বিমূঢ় হয়ে পড়েন তিনি । টেন থেকেই স্বামী দীপকবাবুকে ফোন করে ঘটনার কথা জানান । ইতিমধ্যে ট্রেনটি মেদিনীপুর স্টেশনে চলে আসে । মল্লিকাদেবী কাঁদতে কাঁদতে জি আর পি ও আরপিএফ-এর কাছে ছুটে গিয়ে ঘটনার কথা জানান ।
জানা গেছে,এরপর রেলদপ্তর যুবকের সন্ধানে তৎপর হয় । কিন্তু তখন প্রবল বৃষ্টি চলছে । ফলে উদ্ধার অভিযান শুরু করা সম্ভব হয়নি । বৃষ্টি কমলে আরপিএফ ঘটনাস্থলে ছুটে যায় । কিন্তু অন্ধকারের কারনে মঙ্গলবার রাতে তল্লাশি সম্ভব হয়নি । এদিকে রাতেই মেদিনীপুরে চলে আসেন মৃতের বাবা দীপক কুমার পাত্র । আজ বুধবার সকাল হতেই নদীতে তল্লাশি অভিযান শুরু হয় । তার আগে থেকেই নদীর পাড়ে গিয়ে পাগলের মত ছেলেকে খুঁজতে শুরু করেন ওই দম্পতি । পরে তল্লাশি চালানোর সময় সকাল ৯ টা নাগাদ যুবকের দেহ নদীতে ভাসতে দেখতে পায় রেলপুলিশ ও জিআরপি । ছেলের মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন মা মল্লিকাদেবী । যুবকের দেহটির ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ ।।

