এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেরালা,২৬ অক্টোবর : লাভ জিহাদের বিষয়বস্তু নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র “দ্য কেরালা স্টোরি” নিয়ে যারা সবচেয়ে বেশি সরব হয়েছিল, তার মধ্যে শীর্ষস্থানে ছিল তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল সিপিএম । তারা এই ছবিটি হিন্দু প্রচারণামূলক চলচ্চিত্র হিসেবে বর্ণনা করেছিল । কিন্তু খোদ সিপিএমের একজন নেতার মেয়ে যখন এক বিবাহিত মুসলিম পুরুষের “লাভ জিহাদ”-এর ফাঁদে পড়ে যায় তখন ওই নেতার মাথা থেকে সেকুলারিজমের ভুত নেমে যায়৷ মেয়েকে বাঁচাতে তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন । হ্যাঁ…. এমনই ঘটনা ঘটেছে সিপিএম শাসিত কেরালায় ।
আসলে,কেরালার উদমার সিপিএম নেতা পিভি ভাস্করণের মেয়ে সঙ্গীতার সঙ্গে রশিদ নামে একজন বিবাহিত মুসলিম ব্যক্তির প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । বিষয়টি ওই সিপিএম নেতা মেনে নিতে পারেননি । মেয়েকে লাভ জিহাদ থেকে বাঁচাতে তিনি মাসের পর মাস ধরে তাকে গৃহবন্দী করে রাখেন । একথা ভাস্করণের মেয়ে সঙ্গীতা ফেসবুক লাইভে এসে প্রকাশ করেন৷ এদিকে যখন সিপিএমের এই প্রকার “ভন্ডামি” নিয়ে দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে, তখন নিজের সাফাই দিতে গতকাল একটি সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন সিপিএম নেতা পিভি ভাস্করণ ।
ভাস্করণ বলেছেন যে তার মেয়ের দাবি সত্য নয় এবং তিনি জাতি বা ধর্ম নির্বিশেষে তার বিয়েকে সমর্থন করতেন। কিন্তু আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আমার মেয়ের জীবন এবং সুস্থতা। সে কোমরের নীচে পক্ষাঘাতগ্রস্ত, এবং এটিই আমার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ । পি.ভি. ভাস্করণের কথায়, ‘আমি আমার মেয়ের চিকিৎসা এবং আরামের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছি। রশিদ(মেয়ের প্রেমিক) তার চিকিৎসার সময় বিষয়টির মুখোমুখি হয়েছিলেন, কিন্তু তার আচরণ যথাযথ ছিল না। তার নিজের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে হয়রানির মামলা করেছেন। মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার সন্দেহও রয়েছে। আমি তার সম্পর্কে আরও জানতে তার শহর কোট্টাপুরমে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে কেউ তার সম্পর্কে ভালো ধারণা পোষণ করেনি ।
ভাস্করণ বলেন,আমি কীভাবে আমার মেয়েকে এমন একজনের সাথে পাঠাতে পারি যার নিজের পরিবার বা সম্প্রদায় তাকে সম্মান করে না? ঘটনাটি নিশ্চিত করার জন্য আমি স্থানীয় জামায়াত নেতাদের সাথে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার মেয়ে সঙ্গীতা একটি দুর্ঘটনার পর কোমরের নীচে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়েছিল। তাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১.৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে, এবং আমার সন্দেহ যে রশিদের আসল উদ্দেশ্য হল সেই টাকা হাতানো । সে কেবল সেই কারণেই তার এক বন্ধুর মাধ্যমে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল। গণমাধ্যমে যে তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে তা সত্য নয় ।
এর আগে, ভাস্করণের মেয়ে সঙ্গীতা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও প্রকাশ করে অভিযোগ করেছিলেন যে তাকে গত পাঁচ মাস ধরে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে। তিনি বলেছিলেন যে তার একমাত্র “অপরাধ” ছিল অন্য ধর্মের একজন ব্যক্তির প্রেমে পড়া। সঙ্গীতা আরও দাবি করেছিলেন যে তার বাবা এমন কিছু করেছেন যা কোনও বাবার তার মেয়ের সাথে করা উচিত নয়।।

