এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৫ অক্টোবর : সম্ভবত পয়লা নভেম্বর থেকেই ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন(এসআইআর) শুরু হতে চলেছে এরাজ্যে । তৃণমূলের দুই সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি ও তার ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জি থেকে শুরু করে তৃণমূলের বড়-মাঝারি-ছোট নেতারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে লাগাতার হুঙ্কার দিচ্ছে যে কোনো “বৈধ” ভোটারের নাম বাদ গেলে তারা ছেড়ে কথা বলবে না । তবে তৃণমূলের নজরে বৈধ ভোটার কারা, এটা নিয়ে তারা খোলসা করছে না । বিজেপির অভিযোগ যে আদপে রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি মুসলিম অনুপ্রবেশকারী, মৃত ও ডবল এন্ট্রি ভোটার মিলে ১ থেকে ২ কোটি ভুয়া ভোটারের নাম বাদ চলে যাওয়ার আশঙ্কায় চরম উদ্বেগে আছে শাসকদল । তাই যাতে কোনো ভুয়া ভোটারের নাম বাদ না যায় সেজন্য তৃণমূল নিজের অনুগতদের বুথ লেভেল অফিসার(বিএলও)করেছে বলে অভিযোগ ।
আজ শনিবার এক্স-এ একটি পোস্টে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেছেন যে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার সরিষা অঞ্চলের টিএমসি সভাপতি মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লাকে বিএলও করেছে শাসকদল । তার স্ত্রী লিয়ালা বিবি ডায়মন্ড হারবার ব্লক নং ২-এর একজন নির্বাচিত সদস্য (টিএমসি)। তিনি প্রমানসহ লিখেছেন,’বিএলও-এর নাম – মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা। জেলা – দক্ষিণ ২৪ পরগনা । এসি নম্বর – ১৪৩। বিধানসভার নাম – ডায়মন্ড হারবার । অংশ নং – ৮৭ । অংশ নাম – পঞ্চশত বরকতিয়া উচ্চ মাদ্রাসা । রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা:- মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা – সরিষা অঞ্চলের টিএমসি সভাপতি । তার স্ত্রী লিয়ালা বিবি ডায়মন্ড হারবার ব্লক নং ২-এর একজন নির্বাচিত সদস্য (টিএমসি)।’ তিনি লিখেছেন,’আমি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারকে অনুরোধ করছি যে, ক্ষমতাসীন টিএমসি দলের পক্ষে কাজ করার জন্য বিএলও (বুথ লেভেল অফিসার) হিসেবে নিযুক্ত রাজনৈতিকভাবে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অপসারণ করুন, যাতে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করার সুযোগ না পান।’
প্রসঙ্গত,বুথ লেভেল অফিসার (BLO) হলেন একজন স্থানীয় সরকার/আধা-সরকারি কর্মকর্তা, স্থানীয় ভোটারদের সাথে পরিচিত এবং সাধারণত একই ভোটার এলাকার একজন ভোটার যিনি তার স্থানীয় জ্ঞান ব্যবহার করে তালিকা আপডেট করতে সহায়তা করেন। প্রকৃতপক্ষে, BLO হলেন তৃণমূল স্তরে ভারতীয় নির্বাচন কমিশনের (ECI) একজন প্রতিনিধি যিনি তালিকা সংশোধন এবং তাকে নির্ধারিত ভোটার এলাকার সাথে সম্পর্কিত তালিকা সম্পর্কিত প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মূলত সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের মধ্য থেকে বিএলও নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে কমিশন । কিছু ক্ষেত্রে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের শিক্ষকরাও বিবেচিত হতে পারেন । অথবা এমন শিক্ষক যারা নিয়মিত, পূর্ণকালীন চাকরিজীবী এবং মাসিক বেতন ও মহার্ঘ্য ভাতা (DA) পেয়ে থাকেন বা অস্থায়ী বা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা সাধারণত বিএলও পদে নিয়োগের যোগ্য । কিন্তু রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে দলের ক্যাডারদের বিএলও করার অভিযোগ উঠছে ।
গত অক্টোবরে চার হাজারেরও বেশি বিএলও-দের নিয়োগে অনিয়ন নজরে পড়ে নির্বাচনের কমিশনের । মূলত দক্ষিণ ২৪ পরগনা,পূর্ব মেদিনীপুর এলাকার ওই ৪০০০ জনকে বিএলও করেছিল তৃণমূল । বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেয় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকাকে দফতর । সিপিআইএমের তরফেও অভিযোগ জানানো হয়েছিল কমিশনে। তারপরই নড়েচড়ে বসে কমিশন। বিজেপির অভিযোগ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে তৃণমূল, কারন তারাই হল তৃণমূলের কোর ভোটব্যাংক ।।

