এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৪ অক্টোবর : দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার কাকদ্বীপ থানার সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তর চন্দনপুর গ্রামের পুজো মণ্ডপের কালীপ্রতিমার মস্তক কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দা নারায়ণ হালদার নামে একজন যুবককে গ্রেপ্তারে করেছে পুলিশ । সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও-এর দাবি করেছেন যে ধৃত ব্যক্তি প্রতিমাটি ভাঙার কথা স্বীকার করেছে এবং সেই সময় সে মদ্যপ অবস্থায় ছিল । যদিও স্থানীয় বাসিন্দা ও বিজেপি কিছুতেই মানতে চাইছে না যে একজন “হিন্দু” এই ধরনের ঘৃণ্য কাজ করতে পারে,যতই সে মদের নেশায় থাকুক না কেন৷ ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল ও হিন্দুত্ববাদী লেখক তথাগত রায়ও ওই যুবকের গ্রেপ্তারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । চাঁচাছোলা ভাষায় কথাবলার জন্য প্রায়শই সমালোচিত ওই বর্ষীয়ান বুদ্ধিজীবী মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও কাকদ্বীপের পুলিশকে নিশানা করে বলেছেন,’আমি জানতাম যে একটা হিন্দু নাম দিয়ে মাননীয় নিজেদের বজ্জাতি ঢাকার চেষ্টা করবে ।’
তিনি আজ শুক্রবার এক্স-এ এই বিষয়ে লিখেছেন, ‘আমি কিচ্ছু না জেনে আন্দাজ করেছিলাম যে কাকদ্বীপে মা কালীর মূর্তির মাথা ভেঙে দেওয়া ও তারপর প্রতিমাকে প্রিজন ভ্যানে তোলার ঘটনাটায় মাননীয়া ভালরকম ভড়কেছেন। এবার তার হুকুমে একটা হাঘরে বেকারকে পুলিশ ধরবেই, আর তাকে একটা হিন্দু নাম দিয়ে নিজেদের বজ্জাতি ঢাকার চেষ্টা করবে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের কুমিল্লায় দুর্গাপুজোর সময় কাঠমোল্লাগুলো এরকম একটা নেশাখোরকে দিয়ে, মা দুর্গার পায়ের কাছে একটা কোরান গুঁজে এরকম করে হিন্দুহত্যা চালু করেছিল, বহু হিন্দুর মৃত্যু ঘটিয়েছিল।’
তথাগত রায় আরও লিখেছেন,’এটা হচ্ছে যাকে বলে oldest trick in the book. যেরকম খাপে খাপে মিলে গেল তা দেখে আমি নিজেই আশ্চর্য হচ্ছি । তারপর কালীঘাটের পচা খালধারের ভাষার সঙ্গে আক্রা ফটকের মসজিদে শেখা ভাষার তুফান মেল ছুটিয়েছে ভাইপোশ্রীর ডিজিটাল জোকার বাহিনী।হে মা কালী ! তোমার সোনার বাংলার এ কি দশা ! দেখেও তুমি কেন চুপ করে আছ গো মা ?’
উত্তর চন্দনপুর গ্রামের পুজো মণ্ডপের কালীপ্রতিমার মস্তক কেটে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাই নয়, ওই খন্ডিত কালীপ্রতিমাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশ জুড়ে ব্যাপক সমালোচিত হচ্ছে কাকদ্বীপ থানার পুলিশ৷ বিশেষ করে সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও-কে এনিয়ে কাঠগড়ায় তুলে নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । গতকাল তিনি বলেছেন, ‘পুলিশ যে কায়দায় অপবিত্র করা মা কালীর মূর্তিকে প্রিজন ভ্যানে তুলেছে, স্বাধীনতার আগে বা পরে কেউ দেখেনি । মা কালী কে প্রিজন ভ্যানে তুলে গ্রেফতার করা হচ্ছে এই দৃশ্য আমরা খালা মমতার জমানাতেই দেখলাম ।’
তিনি আরও দাবি করেছেন যে পুলিশ সুপার ও তৃণমূলের যৌথ পরিকল্পনা অনুযায়ী নারায়ণ হালদারকে এই ঘটনায় আসামি সাজানো হয়েছে । শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন,’আজকে (বৃহস্পতিবার) সকালবেলা মন্টুরাম পাখিরা (রাজ্যের মন্ত্রী) গেছে কিছু মুসলিম তৃণমূল নেতাদের নিয়ে । ওখানে বাপ্পি হালদার বলে ভাইপোর একটা টেনিয়া এমপি আছে, যে ছাপ্পা মেরে জিতেছে । দেবাশীষ দাস নামে ওই গ্রামে ওর একটা লোক আছে । তিনি ভূপতি হালদারের মাতাল পুত্র নারায়ণ হালদারকে এই বলে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন যে ১৫ দিন জেলে থাকতে হবে, এই কথা দিয়ে । নারায়ন হালদার ওই এলাকার তৃণমূল নেতা ভূপতি হালদারের ছেলে। এটা কোটেশ্বর রাও, বাপি হালদার, তৃণমূলের পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়েছে । দেবাশীষ দাস সাপ্লাই করেছে । ওর পনেরো দিন সংসার চালানোর টাকা দেওয়া হয়েছে।’।

