এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুসকরা(পূর্ব বর্ধমান),১৭ অক্টোবর : বৃহস্পতিবার রাত তখন পৌনে দশটার আশপাশ হবে ৷ রাতের অন্ধকারে দোতলা বাড়ির উপরতলায় ভাড়া নিয়ে থাকা প্রৌঢ়ের ঘরে ঢোকে এক কিশোরীর সঙ্গে এক যুবক ও দুই যুবতী । তারা ঘরে ঢুকতেই বন্ধ হয়ে যায় দরজা । বিষয়টি স্থানীয় কিছু কৌতুহলী যুবকদের নজরে পড়ে যায় । তারা ভেবেছিলেন যে হয়তো মধুচক্রের আসর বসেছে । তাই হাতেনাতে ধরতে স্থানীয় যুবকের দল কালবিলম্ব না করে পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লাইনপাড় এলাকার ওই বাড়িতে সাধন দাসবৈরাগ্য নামে ওই প্রৌঢ়ের ভাড়া ঘরের দরজা ঠেলে হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে । তখন ঘরের ভিতরে চলা কর্মকাণ্ড দেখে তাদের চোখ কার্যত কপালে উঠে যায় । যুবকরা বুঝতে পারেন যে মধুচক্র নয়,ওই প্রৌঢ় অবৈধভাবে গর্ভপাতের কারবার চালাচ্ছেন । সম্ভবত কিশোরীর গর্ভপাত করানোর জন্যই যুবক-যুবতীর দলটি এসেছিল বলে সন্দেহ তাদের । কিন্তু স্থানীয় যুবকরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই চম্পট দেন প্রৌঢ় । এই ঘটনাকে ঘিরে হুলুস্থুল কান্ড বেধে যায় এলাকায় । এই ঘটনা প্রসঙ্গে আউশগ্রাম- ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জয়দ্রথ বিশ্বাস বলেন,’একটা অভিযোগ পেয়েছি। বেআইনিভাবে কেউ গোপনে গর্ভপাত করাতেন। আমরা তদন্ত শুরু করেছি। রিপোর্ট পাওয়ার পর আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
জানা গিয়েছে,সাধন দাসবৈরাগ্যের বাড়ি আউশগ্রামের জোরারগঞ্জ গ্রামে। আগে একজন গাইনো চিকিৎসকের কম্পাউন্ডার ছিলেন। গুসকরা পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লাইনপাড় এলাকার ওই দু’তলা বাড়ির একটা ঘরে বেশ কিছুদিন ভাড়া রয়েছেন ওই প্রৌঢ় । প্রায় দিনই রাতের অন্ধকারে ওই প্রৌঢ়ের ঘরে অজ্ঞাত মানুষের যাতায়াত নজরে পড়ে স্থানীয় যুবকদের৷ বিশেষ করে বিভিন্ন বয়সের নারীর যাতায়াত স্থানীয় যুবকদের মধ্যে গভীর সন্দেহের উদ্রেক করে ৷ তারপর থেকে কৌতুহলী যুবকদের দল তক্কে তক্কে ছিলেন ৷ বৃহস্পতিবার রাত প্রায় পৌনে দশটা নাগাদ এক কিশোরী,তরুনী ও যুবক মিলে ৪ জন প্রৌঢ়ের ঘরে ঢুকতে দেখেন তারা ৷ তারপরেই স্থানীয় যুবকদের তৎপরতায় অবৈধভাবে গর্ভপাতের কারবারের পর্দাফাঁস হয় । স্থানীয়রা ঘরটিতে তালা ঝুলিয়ে দেন। পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে । যদিও রাতে প্রৌঢ় বেপাত্তা হয়ে যাওয়ায় তখনকার মতন থে থাম হয়ে যায়।
এদিকে রাতভর সাধন দাসবৈরাগ্য ঘরমুখো হননি । কিন্তু আজ শুক্রবার সকালে ঘরের পরিস্থিতি দেখতে আসেন । কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা যে তাকে ধরার জন্য ওৎ পেতে আছেন সেটা তিনি টের পাননি । প্রৌঢ় যখন তার ভাড়া ঘরের আশেপাশে ঘুরঘুর করছিলেন তখন স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে ঘিরে ধরে আটকে রাখে৷ খবর পেয়ে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। যদিও গুনধর প্রৌঢ়ের দাবি যে তিনি গর্ভপান নয়,বরঞ্চ ফোঁড়া অস্ত্রপচার করতেন । আর তিনি এই অস্ত্রপচার করার বিদ্যা এক চিকিৎসকের অধীনে কম্পাউন্ডারের কাজ করার সময় শিখেছিলেন । ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ।।

