এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৭ অক্টোবর : অনুপ্রবেশকারী,মৃত বা ডবল এন্ট্রি ভোটারদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য রাজ্যে এসআইআর-এর কাজ প্রাথমিক পর্বে আছে । কিন্তু এখন থেকেই যে মারাত্মক অভিযোগ উঠছে তাতে এরাজ্যে এসআইআর-এর কাজ আদপেই সম্ভব নাকি তা নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন উঠছে ।অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় রাখতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যে কতটা মরিয়া তা ফাঁস করলেন বিএলও ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল । একটি বাংলা নিউজ চ্যানেলের সাথে সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেছেন যে অযোগ্য ভোটারদের ভোটার তালিকায় রাখার জন্য বিএলও-দের নতুন চারচাকা গাড়ি পর্যন্ত দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে । তার আরও মারাত্মক দাবি হল যে ইআরও ও জেলাশাসকরা (ডিএম) পর্যন্ত এই বিষয়ে বিএলও- দের সমঝোতায় আসার জন্য পরামর্শ দিচ্ছেন ।
বিএলও ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল ওই চ্যানেলকে বলেছেন,পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোন একটা অফিসে কাজ হচ্ছে । এরকমও নজির আমরা তুলে ধরতে পারি যে বিএলও ভোটার লিস্টে কয়েকজন অযোগ্য প্রার্থীর নাম ঠিক করেছেন । তিনি মনে করছেন যে এদের ভোটার লিস্টের নাম থাকা উচিত নয় । সন্দেহজনক তারা । কারণ কেউ কেউ দুরকমের আধার কার্ড দেখাচ্ছে, কেউ কেউ তিন রকমের আধার কার্ড দেখাচ্ছে । সেখানে যখন কোশ্চেন মার্ক দিচ্ছে যে এদের ভোটার লিস্টে নাম থাকতে পারে না বা নতুন নাম যোগ করা যেতে পারে না তখন প্রথমে তাদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছে । বলা হচ্ছে যে আপনারা দয়া করে এটাকে দেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করুন । পরবর্তীকালে তারা যখন রাজি হচ্ছে না তখন তাদের আর্থিক প্রলোভন দেখানো হচ্ছে । এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় ব্যাপার । যে সমস্ত শিক্ষক ও শিক্ষিকেরা কাজ করতে যাচ্ছেন তাদের তো একটা মর্যাদা আছে। তাদের অর্থের প্রলোভন দেখানো হচ্ছে ।’
তিনি বলেন,’শুধু তাই নয়, আমি এই কথাটা দ্বিধাহীন ভাবে বলতে পারি, কলকাতাতেই এই ধরনের একটা ঘটনা ঘটেছে,যেখানে একজন বিএলও-কে বলা হয়েছে আপনি তো বাইক চড়ে আসছেন,আপনার এই বাইকটা দরকার নেই, আমরা আপনাকে একটা গাড়ি বা কার কিনে দেবো । পরিবর্তে আমরা যাদের যাদের নাম বলব তাদের নাম ভোটার লিস্টে রেখে দিতে হবে । ঘটনাক্রমে যারা প্রত্যেকেই কিন্তু সন্দেহজনক ।’
স্বপন মণ্ডল বলেছেন,’আপনারা শুনলে অবাক হবেন যে ভেতরে কি চলছে । এখনো পর্যন্ত এগুলো তো সার্ভেতে আসেনি । সেখানে দেখা যাচ্ছে যে ৭২ বছরের একজন ব্যক্তি ১৯৫৩ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেছেন,১৯৬৩ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন, ১৯৫৭ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন, ১৯৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছেন, সেই সমস্ত ব্যক্তিরা নতুন ভোটার হিসেবে নাম তুলতে আসছে। স্বভাবতই তারা সন্দেহজনক।’
সবচেয়ে গুরুতর অভিযোগ তিনি ইআরও এবং জেলাশাসকদের বিরুদ্ধে তুলেছেন । স্বপনবাবু বলেন,’আসল সমস্যাটা কোথায় হচ্ছে ? যারা বিএলও-এর কাজ করছেন তারা তো হায়ার অথরিটিকে জানাবে। তাদের হায়ার অথরিটি কে ? ইআরও এবং ইআরও এর ওপরে আছে জেলাশাসক । তাহলে সেখানে জানাতে হবে । যখন তারা জানাতে যাচ্ছে তখন হায়ার অথরিটি আকার ইঙ্গিতে বলে দিচ্ছে যে আপনারা কম্প্রোমাইজ করার চেষ্টা করুন । এটা আমার অভিযোগ নয়, সত্যি ঘটনা ।’
বিএলও ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের সাক্ষাৎকারের ভিডিওটি এক্স-এ শেয়ার করেছেন হিন্দুত্ববাদী লেখক ও ত্রিপুরার প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় । তিনি লিখেছেন,’এস আই আর কি সম্ভব এই বাংলায়?এই BLO বলছে যে তাদের কে তোলামুল পার্টির ইচ্ছানুযায়ী ভোটার কার্ডে নাম রাখার জন্য নতুন চার চাকা গাড়ি পর্যন্ত offer করা হচ্ছে।৭০ বছরের বেশি বয়সী নতুন ভোটার হিসাবে apply করছে,যখন BLO তাদের উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করছে,তারাও আপোষ করার সুপারিশ করছে ।’।

